1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পকে সতর্ক করলেন গাব্রিয়েল

১৩ অক্টোবর ২০১৭

ইরান পরমাণু চুক্তি মেনে চলেছে কিনা, ট্রাম্প তা ‘ডি-সার্টিফাই’ করলে, এমন একটি পদক্ষেপ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে রাশিয়া ও চীনের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গাব্রিয়েল৷

https://p.dw.com/p/2llta
Berlin, Sigmar Gabriel
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Kappeler

গাব্রিয়েল বৃহস্পতিবার বলেন যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে তা ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবধান সৃষ্টি করবে৷

‘‘এই প্রশ্নে ইউরোপের একত্রিত থাকাটা বিশেষ জরুরি,'' বলে জার্মান আরএনডি সংবাদপত্রকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন গাব্রিয়েল৷ ‘‘এছাড়া আমাদের মার্কিনিদের বলতে হবে যে, ইরান প্রসঙ্গে তাদের আচরণ ইউরোপীয়দের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ অবস্থান নিতে বাধ্য করবে,'' বলেন গাব্রিয়েল৷

বিশ্বের বিভিন্ন নেতৃবর্গ, এমনকি তাঁর নিজের প্রশাসনের সদস্যদের সাবধানবাণী সত্ত্বেও ট্রাম্প ইরান সমস্যার মোকাবিলা করার নতুন নীতি ঘোষণা করতে চলেছেন, ইরান পরমাণু চুক্তি মেনে চলেছে কিনা, তা ‘ডি-সার্টিফাই' অর্থাৎ বস্তুত নাকচ করা যার মধ্যে পড়বে৷ ২০১৫ সালে ইরান ও আন্তর্জাতিক শক্তিসমূহের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মর্ম ছিল, আন্তর্জাতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রত্যাহারের পরিবর্তে তহরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করবে৷

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ বারংবার নিশ্চিত করেছে যে, ইরান চুক্তিতে নির্দিষ্ট বাধানিষেধগুলি মেনে চলছে৷ কিন্তু ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন যে, ইরান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে সমর্থন করে ও নিজের সদ্যসৃষ্ট অ-পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলি পরীক্ষা করে চুক্তির ‘শর্ত' ভঙ্গ করেছে৷

‘‘আসল নাটক হলো এই যে, ইরান চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দাবার ঘুঁটি হয়ে উঠতে পারে,'' বলেছেন গাব্রিয়েল৷ ইরান যাতে সিরিয়া, ইরাক অথবা ইয়েমেনের মতো সংঘাতে উস্কানি না দেয়, তা নিশ্চিত করার জন্য ওয়াশিংটন পরমাণু চুক্তিটিকে ব্যবহার করতে চায়৷ কিন্তু গাব্রিয়েলের মতে তা ইরানের পরমাণু অস্ত্র বর্জনের শর্ত হতে পারে না৷

ট্রাম্পকে আগামী রবিবারের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসকে জানাতে হবে, ইরান পরমাণু চুক্তি মেনে চলছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন কিনা৷ ট্রাম্প যদি ইরানের আচরণ ‘ডি-সার্টিফাই' করেন, তাহলে কংগ্রেসকে ৬০ দিনের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷

‘উত্তপ্ত সংঘাতের এলাকা'

একাধিক ইইউ ও মার্কিন কর্মকর্তা সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে যে, ট্রাম্প যদি ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি প্রত্যয়ন করতে অস্বীকার করেন, তাহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে৷ রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির অর্থনৈতিক ও ব্যবসা সূত্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, যদিও রাশিয়া সম্প্রতি ক্রাইমিয়া দখল করার পর সেই সম্পর্কে কিছুটা ছায়া পড়েছে৷ অপরদিকে বার্লিন এবং বিশেষ করে গাব্রিয়েল চীনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য সচেষ্ট৷

‘‘ইরান চুক্তি বাতিল করা হলে মধ্যপ্রাচ্য একটি উত্তপ্ত সংঘাতের এলাকায় পরিণত হবে,'' বলে গাব্রিয়েল সাবধান করে দেন৷ ইরান যদি আবার পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা শুরু করে, তাহলে ‘‘একটি নতুন যুদ্ধের অব্যবহিত বিপদ'' দেখা দেবে, যাতে ইসরায়েল জড়িয়ে পড়তে পারে বলে গাব্রিয়েল যোগ করেন৷

‘‘পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের পক্ষে তা একটি বিপর্যয় সংকেত হবে,'' বলেন গাব্রিয়েল৷ ‘‘কোনো কোনো দেশ ইরান চুক্তির ব্যর্থতাকে যত শীঘ্র সম্ভব তাদের নিজেদের পারমাণবিক সমরাস্ত্র সংগ্রহের সংকেত হিসেবে গণ্য করবে৷''

গাব্রিয়েলের সম্ভাব্য উত্তরসুরির মত

সেপ্টেম্বর মাসের নির্বাচনে গাব্রিয়েলের সামাজিক গণতন্ত্রীরা হতাশাজনক ফলাফল করার পর এসপিডি দল আগামী সংসদীয় কর্মকালে বিরোধীপক্ষে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে; কাজেই গাব্রিয়েল আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই পদত্যাগ করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে৷

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নতুন সম্ভাব্য জোট সরকারে যিনি গাব্রিয়েলের স্থান নিতে পারেন বলে জল্পনা-কল্পনা করা হচ্ছে, তিনি হলেন সবুজ দলের নেতা চেম ওয়েজদেমির৷ ওয়েজদেমিরও টুইটারে সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র প্রতিযোগিতা সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন, এমনকি বলেছেন যে, সৌদি আরব মধ্যপ্রাচ্যের নতুন পারমাণবিক শক্তি হয়ে উঠতে পারে৷

এসি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ, এএফপি)