নজর কাড়লেন মাক্রোঁ!
১৩ ডিসেম্বর ২০১৭মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়ার পর অনেকের মধ্যে সৃষ্ট হওয়া আশংকা দূর করতে এই সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেন এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ এক্ষেত্রে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হওয়া প্যারিস চুক্তির দু'বছর পূর্তিকে বেছে নেন তিনি৷ জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক এই সম্মেলনের অন্য দুই আয়োজক ছিল৷
নির্বাচনের পর এখনও সরকার গঠন করতে না পারায় জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নিজ দেশে দুর্বল অবস্থানে আছেন৷ সে কারণে তিনি প্যারিস সম্মেলনে যাননি৷ এই অবস্থায় ফ্রান্সের মাক্রোঁ জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে নেতৃত্ব দেয়ার ভার কাঁধে তুলে নেন৷ প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন ধীরগতিতে চলছে মন্তব্য করে মাক্রোঁ সবাইকে আরও দ্রুতগতিতে কাজ করার আহ্বান জানান৷ সম্মেলনের শুরুতে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘আমরা (প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে) যথেষ্ট দ্রুত এগোচ্ছি না৷ যুদ্ধ জয় করতে আমাদের আরও দ্রুত হতে হবে৷''
এরপর দিনশেষে সমাপনী বক্তব্যে মাক্রোঁকে ইতিবাচক দেখা গেছে৷ কারণ সম্মেলন থেকে আশ্বস্ত হওয়ার মতো অঙ্গীকার পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি৷ বিশ্বব্যাপী কোম্পানিগুলোর জন্য তেল ও কয়লার ব্যবহার থেকে সরে আসা সহজ করতে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের অঙ্গীকার পাওয়া গেছে৷ এছাড়া কয়েক বিলিয়ন ডলারের ডাইভেস্টমেন্টের (কোথাও থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নেয়া) ঘোষণাও এসেছে৷ যেমন ফ্রান্সের বিমা কোম্পানি আক্সা বলেছে, তারা কার্বন সেক্টর থেকে সরে আসার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করবে৷ কয়লা থেকে যেসব কোম্পানির রাজস্ব আয় ৩০ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে, সেসব কোম্পানি থেকে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেবে আক্সা৷ এছাড়া বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম ঘোষণা দিয়েছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান দুই বছরের মধ্যে তেল ও গ্যাস প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করবে৷
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মিলে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন আগামী তিন বছরের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলারের তহবিল ঘোষণা করেছে৷ কৃষিখাতে অভিযোজন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী কোম্পানিগুলোর উপর চাপ প্রয়োগ করতে ২০০-র বেশি বিনিয়োগকারী একটি কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে৷ তারা বিপি, এয়ারবাস, ফল্কসভাগেন ও গ্লেনকোরকে আরও সবুজ হতে চাপ দেবে৷
প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি দুই ডিগ্রির মধ্যে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে৷ লক্ষ্য পূরণে সফল হতে হলে প্রতিবছর গড়ে সাড়ে তিন ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা৷ বর্তমানের বিনিয়োগের চেয়ে সংখ্যাটি প্রায় দ্বিগুণ৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, এপি)