ট্রাম্প-বাইডেনের পর কে হাল ধরছেন?
২৩ জানুয়ারি ২০২৪চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনকে ঘিরে বাকি বিশ্বের আগ্রহের মধ্যে একটা মরিয়া ভাব টের পাওয়া যাচ্ছে৷ বিশেষ করে ডনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে সে দেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ ও বহির্বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক আমূল বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ প্রথম কার্যকালের শেষে ট্রাম্প কিছুতেই নির্বাচনে নিজের হার স্বীকার করেননি৷ দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হলে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর জোরালো আঘাত হানতে পারেন বলে অনেক মহল আশঙ্কা করছে৷ অন্যদিকে অশীতিপর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনর্নির্বাচিত হলেও আরো কতদিন কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন, সে বিষয়েও সংশয় রয়েছে৷
রিপাব্লিকান দলের মনোনয়নের লক্ষ্যে ট্রাম্পের পথ থেকে একের পর এক বাধা দূর হচ্ছে৷ একাধিক প্রার্থী আঙিনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন৷ বিবেক রামস্বামী ও রন ডিস্যান্টিস রণে ভঙ্গ দিয়েছেন৷ রামস্বামী এমনকি ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন, এমন জল্পনাকল্পনা চলছে৷ ট্রাম্পেরই কিছুটা ‘দায়িত্বশীল' সংস্করণ হিসেবে পরিচিত ডিস্যান্টিসও শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের প্রার্থিতার পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন৷ ফলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী নিকি হ্যালি৷ তিনি নিজেকে রিপাব্লিকান দলে ট্রাম্পের একমাত্র বিকল্প এবং ট্রাম্প ও বাইডেনের মতো ‘বৃদ্ধ' প্রার্থীর বদলে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন৷
এবারের নির্বাচনে বয়সটা সত্যি একটি ধর্তব্যের বিষয়৷ বাইডেনের বয়স ৮১, ট্রাম্পের ৭৭৷ ফলে তাঁদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্পূর্ণ কার্যকাল পূরণ করার ক্ষমতা আছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ সে ক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ এখনো পর্যন্ত বাইডেনের কার্যকালে কমলা হ্যারিস তেমন নেতৃত্বের পরিচয় দেখাতে পারেন নি৷ নিজের দফতরে কেলেঙ্কারির ফলেও কিছুটা কোণঠাসা হয়ে গেছেন৷ অন্যদিকে ট্রাম্প দলের মনোনয়ন পেলে কাকে শেষ পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করবেন, তার উপরও ভোটারদের সিদ্ধান্ত কিছুটা নির্ভর করতে পারে৷ বাইডেন শেষ মুহূর্তে তাঁর দ্বিতীয় কার্যকালের জন্য আরো আকর্ষণীয় ও গ্রহণযোগ্য কোনো ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলে হয়তো কিছুটা বাড়তি সমর্থন আদায় করতে পারবেন৷ রাজনৈতিক আঙিনায় কমলা হ্যারিস, বিবেক রামস্বামী ও নিকি হ্যালির মতো তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে হিসেবনিকেশ মার্কিন রাজনীতির বিবর্তন স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷
প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন অ্যামেরিকার অর্থনীতিকে যতটা শক্তিশালী করে তুলেছেন ও কর্মসংস্থানে জোয়ার এনেছেন, শুধু সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁর পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হতে পারতো৷ কিন্তু বিভিন্ন কারণে ভোটারদের মনে তাঁর ভাবমূর্তি যথেষ্ট অনুকূল নয়৷ ফলে তাঁর পুনর্নির্বাচনের সম্ভাবনা প্রশ্নের মুখে পড়ছে৷ ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্য সংকটের মতো আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে বাইডেনকে এতো ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে, যে তিনি নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট সময় পাচ্ছেন না৷ সাধারণত মার্কিন ভোটারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের তালিকায় পররাষ্ট্র নীতির স্থান অনেক পেছনে৷ ফলে বিদেশে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাফল্য দেশে নির্বাচনের উপর তেমন প্রভাব ফেলে না৷ একমাত্র বিদেশে মার্কিন সৈন্য মোতায়েন বা প্রত্যাহারের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েই বেশি মাথাব্যথা দেখা যায়৷