ট্রাম্প-পুটিন-ওবামা-ম্যার্কেল
১৭ নভেম্বর ২০১৬অনানুষ্ঠানিক এই ডিনারে যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ও সিরিয়া সংকট নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে বলে সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে৷
তবে ম্যার্কেল এবং ওবামার মধ্যে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে আজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সোয়া তিনটায়৷ এরপর পাঁচটায় সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে৷ আগামীকাল শুক্রবার এই দুই নেতার সঙ্গে আলোচনায় যোগ দেবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী৷
ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় রাশিয়ার উপর কার্যকর থাকা নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কথা হতে পারে৷ ইউক্রেনের সঙ্গে সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার কারণে ২০১৪ সালে রাশিয়ার উপর ঐ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল৷ আগামী জানুয়ারি মাসের শেষে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা৷ সিরিয়ায় বোমা হামলার কারণে নতুন করে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায় কিনা, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে৷
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে কিছু আশংকা তৈরি হয়েছে৷ ট্রাম্প ইতিমধ্যে ওবামার সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ সেই অভিজ্ঞতা থেকে ওবামার কাছ থেকে ট্রাম্পের ব্যাপারে জানতে চাইবেন ইউরোপীয় নেতারা৷
‘মুক্ত বিশ্বের' নতুন নেতা ম্যার্কেল?
বার্তা সংস্থা এএফপি এই শিরোনাম দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে৷ ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পশ্চিমা বিশ্বের মূল্যবোধ রক্ষার দায়িত্ব এখন ম্যার্কেলের ঘাড়ে চাপছে বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন৷ ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট টিমোথি গার্টন গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে লিখেছেন, ‘‘আমি বলতে আনন্দ বোধ করছি যে, মুক্ত বিশ্বের নেতা এখন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷''
জার্মানির বামপন্থি দৈনিক টাৎস লিখেছে, ‘‘ম্যার্কেল....হঠাৎ করেই মুক্ত, গণতান্ত্রিক আর উদারপন্থি বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠেছেন৷''
প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শেষের আগে ইউরোপ সফরে এসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইংল্যান্ডে না গিয়ে জার্মানিতে আসার ঘটনাকেও একটি সংকেত হিসেবে দেখছে এএফপি৷ এই ঘটনাকে ‘ম্যার্কেলের কাছে ব্যাটন হস্তান্তর' বলে মনে করছে বার্তা সংস্থাটি৷ ইউরোপ সফরের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবামা ম্যার্কেলকে গত আট বছরে (সম্ভবত) তাঁর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক সহযোগী বলে উল্লেখ করেছেন৷
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ম্যার্কেলের দেয়া বক্তব্যের প্রশংসা হচ্ছে অনেক৷ ম্যার্কেল বলেছিলেন, ‘‘(সব মানুষের) জন্ম, গাত্রবর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, যৌন প্রবণতা বা রাজনৈতিক মতামত নির্বিশেষে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, আইনের শাসন ও মানবমর্যাদার মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা জার্মানি ও অ্যামেরিকার মধ্যে যোগসূত্র৷ এই মূল্যবোধের ভিত্তিতে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রস্তাব দিচ্ছি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্ব জার্মানির বিদেশনীতির ভিত্তি ও ভবিষ্যতেও তাই থাকবে৷''
‘‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে ম্যার্কেল বাস্তব বিশ্বের নেতার দায়িত্ব গ্রহণে আগ্রহ দেখালেন এবং ট্রাম্পকে মূল্যবোধের বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিলেন'', বলে মনে করছে জার্মান দৈনিক ডি ভেল্ট৷
জেডএইচ/ডিজি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)