ট্রাইব্যুনালের নিরাপত্তা
৫ অক্টোবর ২০১৩সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের খসড়া ফাঁসের ঘটনায় একটি পেন ড্রাইভ, কয়েকটি কম্পিউটর এবং সিসিটিভি-র ফুটেজ জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ৷ শাহবাগ থনায় জিডি করার পর আদালতের অনুমতি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছেন গোয়েন্দার৷ উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, কিছু আলামত জব্দ করা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ তবে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে৷
একই সঙ্গে তদন্তে তথ্য-প্রযুক্তিবিদদের কাজে লাগানো হয়েছে৷ তাঁরা প্রাথমিক তদন্তে দেখেছেন যে, ট্রাইব্যুনাল কার্যালয়ের যে কম্পিউটারে রায়ের খসড়া কম্পোজ করা হয়েছে সেই কম্পিউটার সুরক্ষিত নয়৷ ফাইলের কোনো পাসওয়ার্ড তো নেই-ই এমনকি কম্পিউটারটিরও কোনো পাসওয়ার্ড নেই৷ ফলে যে কারুর পক্ষে ঐ ফাইল কপি করা সম্ভব৷ আর আইটি নিরাপত্তার আরো যেসব বিষয় আছে, তা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই অফিসের লোকজনের৷ তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জাকারিয়া স্বপন ডয়চে ভেলেকে জানান, ট্রাইব্যুনালের মতো একটি স্পর্শকাতর এবং গুরুত্বপূর্ণ অফিসে সর্বোচ্চ তথ্য-প্রযুক্তি নিরপত্তা নিশ্চিত করা উচিত ছিল৷ তার জন্য শুরুতেই তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেয়া যেত৷ তিনি বলেন, এর আগে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের ‘স্কাইপ' কথোপকথন ফাঁস হওয়ার পরও ট্রাইব্যুনাল সতর্ক হয়নি, যা সত্যিই দুঃখজনক৷
ট্রাইব্যুনালের প্রধান তদন্ত সমন্বয়কারী আব্দুল হান্নান খান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের স্কাইপ কথোপকথন কিভাবে ফাঁস হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি৷ তাঁর মতে, এ নিয়ে কোনো তদন্ত হয়নি৷ তবে একটি মামলা হয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমে কথোপকথন প্রকাশের অভিযোগে একজন সম্পাদক গ্রেপ্তার হয়েছেন৷ কিন্তু কিভাবে সেই কথোপকথন ফাঁস হলো তা জানা যায়নি৷ জানা গেলে হয়ত রায়ের খসড়া ফাঁসের ঘটনা ঘটত না৷ তিনি জানান, ট্রাইব্যুনালের বাহ্যিক নিরাপত্তার ব্যাপারে অনেকে সচেতন থাকলেও আইটি নিরপত্তার ব্যাপারে কেউ তেমন সচেতন না৷ তাই তিনি মনে করেন, আইটি নিরাপত্তার বিষয়ে এখনই নজর দেয়া প্রয়োজন৷
হান্নান খান বলেন, যেখানে রায় লেখা হয় সেখানে সিসিটিভি-ই যথেষ্ঠ নয়৷ সেই কক্ষে প্রবেশ এবং বের হওয়ার আগে সব ধরণের নিরপত্তা তল্লাশির ব্যবস্থা থাকাও প্রয়োজন৷