1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জুয়াড়ির' সঙ্গে সাকিবের ‘গোপন' যোগাযোগ

২৯ অক্টোবর ২০১৯

আইসিসির বিজ্ঞপ্তিতে উঠে এসেছে সাকিব ও এক জুয়াড়ির মধ্যে কথোপকথনের তথ্য৷ কোনো অর্থ বা তথ্য লেনদেনের ঘটনা ‘না ঘটলেও' সাকিব সেই জুয়াড়ির সঙ্গে ‘দেখা করতে' চেয়েছিলেন৷ হোয়াটস অ্যাপে কথোপকথনের কিছু তথ্য মুছেও ফেলেছিলেন সাকিব৷

https://p.dw.com/p/3S9MF
Bangladesch Cricket-Spieler Shakib Al Hasan
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman

মঙ্গলবার তিনটি অভিযোগে সাকিবকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইসিসি৷ এর মধ্যে অভিযোগ স্বীকার করায় শাস্তি এক বছর স্থগিত করা হয়েছে৷ ফলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবরের আগে কোনো ধরনের ক্রিকেট খেলতে পারবেন না তিনি৷

সাকিব ও আগরওয়াল

দীপক আগরওয়াল নামে আইসিসির সন্দেহভাজন জুয়াড়ি তালিকায় থাকা একজনের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান৷ ২০১৭ এর নভেম্বর থেকে প্রায় এক বছর ধরে আগরওয়াল যোগাযোগ করেছেন তার সঙ্গে, জানতে চেয়েছেন বিভিন্ন তথ্য৷ আইসিসির তদন্তে এর সবই স্বীকার করে নিয়েছেন সাকিব৷ তবে আগরওয়ালকে কোনো তথ্য দেয়া বা তার কাছ থেকে কোনো অর্থ পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি৷

এই দীপক আগরওয়াল ক্রিকেটে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে আইসিসির সন্দেহভাজন তালিকায় রয়েছেন৷ আইসিসির বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন এরই মধ্যে সংস্থার ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করা হয়েছে৷ সেখানে বলা হয়েছে, জুয়াড়ির সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য না জানালে যে শাস্তি হতে পারে, এটা সাকিব জানতেন

অবশ্য প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করার পরও সাকিব কেনো পুরো বিষয়টি গোপন করেছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য আইসিসি জানায়নি৷

যা যা স্বীকার করেছেন সাকিব

১) ২০১৭ সালের নভেম্বরে সাকিব বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ঢাকা ডায়নামাইটসে ছিলেন৷ ৪ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিপিএল অনুষ্ঠিত হয়৷ এসময় সাকিবের পরিচিত এক ব্যক্তি যে আগরওয়ালকে তার নম্বর দেন, সেটা সাকিব জানতেন৷ সেই ব্যক্তির কাছে আগরওয়াল বিপিএল এর আরো কিছু খেলোয়াড়ের নম্বরও চেয়েছিলেন৷

- তবে সাকিবের সেই ‘পরিচিত' ব্যক্তির কোনো পরিচয় দেয়নি আইসিসি৷

২) ২০১৭ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি আগরওয়াল হোয়াটস অ্যাপে সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ সাকিব এসময় আগরওয়ালের সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাসেজ চালাচালি করেন৷ আগরওয়াল এক পর্যায়ে সাকিবের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন

তবে শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে দেখা হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানায়নি আইসিসি৷

৩) ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশ দলে ছিলেন সাকিব৷ এই সিরিজ চলাকালীন হোয়াটস অ্যাপে আরো বেশ কিছু কথাবার্তা হয় সাকিব ও আগরওয়ালের মধ্যে৷ ১৯ জানুয়ারির ম্যান অব দ্য ম্যাচ সাকিবকে অভিনন্দন জানিয়ে ম্যাসেজ পাঠান আগরওয়াল৷ এরপরই ম্যাসেজ পাঠান আগরওয়াল, ‘‘আমরা কী এবারই কাজ করবো, নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করবো?''

এখানে ‘কাজ' বলতে আগরওয়ালকে ভেতরের তথ্য জানানোর কথাই বলা হয়েছে৷ তবে সাকিব এসব কথোপকথন বিষয়ে আকসু বা অন্য কোনো দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাকে কিছুই জানাননি৷

আগরওয়ালের এমন ‘প্রস্তাবের' পরিপ্রেক্ষিতে সাকিবের উত্তর কী ছিল, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি আইসিসি৷

৪) ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি আগরওয়াল আবার সাকিবকে হোয়াটস অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠান৷ এবার ম্যাসেজে লেখা ছিল, ‘‘ব্রো, এই সিরিজে কিছু মিলবে?'' সাকিব আইসিসিকে নিশ্চিত করেছেন, ত্রিদেশীয় সিরিজের তথ্য়ই জানতে চেয়েছিলেন আগরওয়াল৷ এটিও আইসিসিকে জানাননি সাকিব৷

এক্ষেত্রেও সাকিব আগরওয়ালকে কোনো জবাব দিয়েছিলেন কিনা, তা জানায়নি আইসিসি৷

৫) ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল আইপিএলে সানরাইজারস হায়দারাবাদের হয়ে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেন সাকিব৷ সেই ম্যাচ শুরুর আগে সাকিবকে আবার হোয়াটস অ্যাপে ম্যাসেজ পাঠান আগরওয়াল৷ এবার সেদিনের ম্যাচে একজন খেলোয়াড় খেলবেন কিনা, সে তথ্য জানতে চান আগরওয়াল৷

আগরওয়াল সে সময় ভার্চুয়াল মুদ্রা বিটকয়েন, ডলার অ্যাকাউন্ট বিষয়ে সাকিবের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং এক পর্যায়ে সাকিবের ডলার অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত জানতে চান৷ এই কথোপকথনের এক পর্যায়ে সাকিব জানান, তিনি আগে আগরওয়ালের সঙ্গে ‘দেখা করতে' চান৷

২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল হওয়া এসব কথোপকথনের মধ্যে বেশ কিছু ম্যাসেজ ডিলিট করে দেন সাকিব৷ আইসিসির জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানিয়েছেন, এসব ম্যাসেজে ‘ভেতরের তথ্য' চেয়েছিলেন আগরওয়াল৷

কথোপকথনে সাকিবের দিক থেকে কেমন জবাব দেয়া হয়েছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি আইসিসি৷

সাকিব আইসিসিকে জানিয়েছেন, এসব কথোপকথন থেকে আগরওয়ালকে তার কাছে ‘ডজি‘ বলে মনে হয়েছে এবং এক পর্যায়ে তার কাছে মনে হয়েছে আগরওয়াল ‘জুয়াড়ি' হতে পারেন৷ আইসিসির কাছে সাকিব দাবি করেছেন, তিনি কখনই আগরওয়ালের দেয়া কোনো ‘প্রস্তাবে'  সাড়া দেননি৷ যেসব তথ্য আগরওয়াল চেয়েছিলেন সেগুলো কোনোটিই তিনি সরবরাহ করেননি এবং অর্থ বা অন্য কোনো উপহারও  নেননি৷

আইসিসি তদন্ত শুরুর করার আগে এই সমস্ত আলোচনার কিছুই তিনি কখনও নিজে থেকে আকসু বা অন্য কোনো দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাকে জানাননি

এডিকে/কেএম