জুলহাজ-তনয় হত্যা মামলায় ৬ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড
৩১ আগস্ট ২০২১ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান৷
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামি হলেন চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ৷
তাদের সবাইকে মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হযেছে৷ পাশাপাশি আরেকটি ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে৷ জিয়া ও আকরাম পলাতক৷ বাকি চারজনের উপস্থিতিতে বিচারক রায় ঘোষণা করেন৷
অভিযোগে সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় অপর দুই পলাতক আসামি সাব্বিরুল হক চৌধুরী এবং জুনাইদ আহমদ ওরফে মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদকে খালাস দিয়েছেন বিচারক৷
২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়৷
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, লেকসার্কাস রোডের আছিয়া নিবাস নামে ছয়তলা একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে মাকে নিয়ে থাকতেন জুলহাজ৷ সেদিন বিকাল ৫টার দিকে টি শার্ট ও প্যান্ট পরা একদল যুবক ওই বাসায় যায়৷
নিরাপত্তাকর্মীর বাধা সত্ত্বেও তারা জোর করে বাসায় ঢুকে জুলহাজ ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে৷ হামলাকারীরা ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা সে সময় জানিয়েছিলেন৷ তাদের আটকাতে গিয়ে মমতাজ নামে পুলিশের একজন এএসআই জখম হন৷ তবে হামলাকারীদের একজনের কাছ থেকে একটি ব্যাগ ছিনিয়ে রাখেন কলাবাগান এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসআই মমতাজ; সেখানে একটি পিস্তল, একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মোবাইল ফোন পাওয়া যায়৷
ঘটনার রাতেই জুলহাজের ভাই মিনহাজ মান্নান অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ এএসআই মমতাজের ওপর হামলা এবং অস্ত্র পাওয়ার ঘটনায় আরেকটি মামলা করেন কলাবাগান থানার এসআই শামীম আহমেদ৷
সে সময় আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ (একিউআইএস) শাখা ওই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে খবর এলেও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশীয় জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্যরাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে৷
২০১৯ সালের ১২ মে জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম৷ গত বছরের ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত৷ নয় মাসের মাথায় বিচার শেষে রায় ঘোষণা হল৷
এ মামলায় দণ্ডিত সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের (আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য৷ তাদের মধ্যে জিয়া, মোজাম্মেল, আরাফাত ও আকরাম বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি৷
এছাড়া প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় জিয়া, আকরাম, মোজাম্মেল ও শেখ আব্দুল্লাহর ফাঁসির রায় এসেছে এ বছরের শুরুতে৷
এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)