1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠনের আবির্ভাব, আড়ালে তৃণমূল?

২৮ অক্টোবর ২০২৪

পশ্চিমবঙ্গে তৈরি হলো জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠন। অভিযোগ, এর পিছনে আছে তৃণমূল কংগ্রেস।

https://p.dw.com/p/4mJ15
কলকাতা প্রেস ক্লাবে জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাংবাদিক সম্মেলন।
পশ্চিমবঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের নতুন সংগঠনের ঘোষণা করা হচ্ছে। ছবি: Subrata Goswami/DW

এতদিন ছিল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। এবার তৈরি হলো ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্য়াসোসিয়েশন। শুক্রবার গভীর রাতে এই সংগঠন গঠন করা হয়। শনিবার ঘোষণা দিয়ে তা জানানো হয়। বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপি সবাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, নতুন এই সংগঠনের পিছনে তৃণমূল আছে। 

জুনিয়র ডক্টরর্স ফ্রন্টের ঠিকানা হলো আরজি করের কেবি হস্টেলের ৩২ নম্বর রুম। অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও একই ঠিকানা ব্যবহার করতে চাওয়া হয়েছে। তাদের তা ব্যবহার না করতে দিলে ফ্রন্টকেও এই ঠিকানা ব্যবহার করতে দেয়া যাবে না বলে দাবি জানানো হয়েছে। ফ্রন্টের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে তার তদন্তও দাবি করেছে অ্যাসোসিয়েশন। 

কারা আছেন এই সংগঠনে?

এই সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার শ্রীশ চক্রবর্তী ও প্রণয় মাইতি। শ্রীশ দাবি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় হচ্ছে। তারাও ৯ আগস্ট আরজি কর-এ ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি তার। কিন্তু তাদের বয়কট করা হয়। অভিযোগ করা হয়, তারা থ্রেট কালচারের হোতা। কমিটি হয়। তাদের কথা শোনা হয়নি। তাদের কলেজে ঢোকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এরপর আরজি করের সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে শ্রীশ চক্রবর্তী, অভিক দে, নির্জন বাগচী দে-র ছবি সামনে আসে। এছাড়া সামনে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রীশ চক্রবর্তীসহ কয়েকজন প্রাক্তনীর ঘরে তালা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ওই ছবি ও ভিডিয়োর সত্যতা ডিডাব্লিউ যাচাই করতে পারেনি। ভিডিওতে দেখা যাওয়া প্রায় সকলেই নতুন সংগঠনে আছেন।

অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে ফ্রন্টের নেতা আসফাকুল্লাকেও একটি ছবিতে দেখা গেছে।

শ্রীশ চক্রবর্তী ইটিভি ভারতকে বলেছেন, তিনি কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে যাননি। তিনি গেছিলেন, যারা খারাপ কথা বলছেন, তাদের হয়ে ক্ষমা চাইতে। পাশাপাশি দেখতে গেছিলেন, ওখানে কী হচ্ছে।

বিজেপি নেতা ও বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, ''এটা আসলে তৃণমূলেরই সংগঠন।'' রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজমুদার বলেছেন, ''এটা তৃণমূল কংগ্রেস ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের যা বলা হচ্ছে, তারা তাই করছে।''

অ্যাসোসিয়েশনের দাবি

সোমবার অ্যায়োসিয়েশনের পক্ষ থেকে মুখ্যসচিবের কাছে আটদফা দাবি পেশ করা হয়েছে। সেই দাবির মধ্যে আরজি করে   ধর্ষিত ও খুন হওয়া চিকিৎসকের বিচার, থ্রেট কালচার, হাসপাতালের ওষুধ ও খালি বেডের ডিজিটালি ঘোষণা।

তার সঙ্গে দাবি করা হয়েছে, বিচারের নামে একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা তোলা হয়েছে। তার উৎস জানতে তদন্ত করতে হবে, এক পক্ষের দাবি শুনে কাউকে শাস্তি দেয়া যাবে না, হাসপাতালের সব কমিটিতে ফ্রন্ট ও অ্যাসোসিয়েশনের সমান সংখ্যায় প্রতিনিধি রাখতে হবে, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজে যে অভিযোগ উঠছে, তার তদন্ত করতে হবে।

কয়েকদিন ধরেই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায়, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অভিযোগ করছিলেন, আন্দোলনরত ডাক্তাররা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে প্রায় চার কোটি ৭৫ লাখ টাকা তুলেছেন। সেই অর্থ তোলা নিয়ে এবং তা কোথায় খরচ হয়েছে তা নিয়ে তদন্ত দাবি করেছিলেন তারা।

জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট কী বলছে?

জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট জানিয়েছে, তারা তাদের হিসাব পরীক্ষা করাচ্ছেন, সেই রিপোর্ট এসে গেলেই তা মানুষের সামনে রাখা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন

জুনিয়র ডক্টর্স ফোরামের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলবেন, সকলের অভিযোগ শুনবেন।

তিনি এটাও বলেছিলেন, পড়ুয়াদের খাতা তিনি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করাতে চান।

কলকাতা প্রেস ক্লাবে জুনিয়র ডক্টরদের প্রেস কনফারেন্সের আগের ছবি।
জুনিয়র ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পিছনে তৃণমূল আছে বলে বিজেপি-র ্ভিযোগ। ছবি: Subrata Goswami/DW

এক পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তাকে অভিযুক্ত বলা যায় না। তিনি মনে করেন, অভিযোগ প্রমাণ না হলে কেউ অভিযুক্ত হন না। তার এই বক্তব্য মানতে পারেননি এক জুনিয়র নারী ডাক্তার, তাই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, অভিযোগ করা হলে অভিযুক্ত বলা যায় ,অভিয়োগ প্রমাণ হলে তাকে দোষী বলা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে এটাও বলেছিলেন, এতজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আরজি করের প্রিন্সিপাল ব্যবস্থা নিলেন, অথচ সরকারকে কিছু জানালেন না। তিনি দাবি করেন, এটাও থ্রেট কালচার। তদন্ত করার দায় তো সরকারের।

জুনিয়র ডাক্তারদের নেতা কি়ঞ্জল তখন বৈঠকে বলেন। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তারা ‘নটোরিয়াস ক্রিমিনালস'। তিনি জানতে চান, মুখ্যমন্ত্রী কি তাদের পক্ষে থাকতে বলছেন?

জিএইচ/এসিবি(পিটিআই, আনন্দবাজার)