জীবনে অন্তত একবার যাওয়া উচিত যেখানে
পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি কোন ধরনের জায়গায় যেতে ভালোবাসেন? নিঃসন্দেহে সেই তালিকায় ওপরের দিকেই স্থান পাবে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলো৷ চলুন এমন কিছু জায়গার কথা জেনে নিই ছবিঘরে, যেখানে জীবনে অন্তত একবার যাওয়া উচিত৷
টেরাকোটা আর্মি, চীন
১৯৭৪ সালের কথা৷ চীনের জি’আন অঞ্চলে কয়েকজন কৃষক ক্ষেতে কাজ করতে করতে মাটির তৈরি একটি মূর্তি খুঁজে পান৷ তাঁরা তখনো জানতেন না যে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকাটি খুঁজে পেয়েছেন৷ প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন সিহুয়াংদির সমাধিস্তম্ভ ছিল এটি৷ এখানে টেরাকোটার এক বিশাল মানবমূর্তির বহর সম্রাটের সমাধিস্থল পাহারা দিচ্ছে৷
আঙ্কর ওয়াট. কম্বোডিয়া
রাজধানী নমপেন থেকে ২৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মধ্যযুগীয় মন্দির আঙ্কর ওয়াট৷ জঙ্গলের মাঝখানে বালির পাথর দিয়ে তৈরি এই মন্দিরের একটি অংশ পাওয়া গেছে৷ এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় স্থাপনা৷ নবম শতাব্দী থেকে শুরু করে পনেরশ’ শতক পর্যন্ত বিস্তৃত খেমার সাম্রাজ্যের প্রতীক হয়ে আছে এটি৷
মাচু পিচু, পেরু
আন্দিজ পর্বতমালায় প্রায় পৌঁনে আট হাজার ফুট উচ্চতায় প্রাচীন ইনকা জনগোষ্ঠীর শহর মাচু পিচু৷ ১৫শ’ শতকে এই শহর নির্মাণ করেছিলেন তাঁরা৷
মায়া পিরামিড, মেক্সিকো
৩ হাজার বছর আগে মধ্য অ্যামেরিকার সর্বত্র বসতি গড়েছিলেন মায়ানরা৷ বিশেষ করে মেক্সিকোর ইউকাটান উপত্যকায়৷ এখানেই আছে তাঁদের ১২৫ ফুট উঁচু পিরামিড অফ দ্য ম্যাজিশিয়ান৷
পম্পেই, ইটালি
পম্পেই প্রাচীন রোমান শহর৷ ইটালির বর্তমান নাপোলির কাছেই ছিল এই শহর৷ ৭৯ খ্রিস্টাব্দে ভিসুভিয়াসের অগ্নুৎপাতে ধ্বংস হয় শহরটি৷ অনেক অধিবাসী পালিয়ে বাঁচতে পারেননি৷ তাঁদের অগ্নিসমাধি হয় এখানেই৷ সেই স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে পম্পেই৷
ট্রয়, তুরস্ক
ট্রয় নগরীর কথা কে না শুনেছেন৷ হেলেন আর প্যারিসের প্রেমের গল্প কে না জানেন! জার্মান প্রত্নতত্ত্ববিদ হাইনরিশ শ্লিমান কিছুতেই মাথা থেকে ট্রয়ের ভুত নামাতে পারছিলেন না৷ ঊনিশ শতকের শেষ দিকে তিনি তুরস্কের চানাকেলে প্রদেশে খনন শুরু করেন৷ তাঁর গাইড ছিল গ্রিক দার্শনিক হোমারের ইলিয়াড৷ পরে একটি বসতি উদ্ধার করেন তিনি৷ তবে সেটি ট্রয় কিনা সে বিষয়ে আজও নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
ডেলফি, গ্রিস
ডেলফির কথা শুনলেই সেইসব দৈববাণীর কথা মনে পড়ে, যাদের কথা সফোক্লিসরা লিখেছিলেন৷ গ্রিক রাজারা খুব জটিল কোনো বিষয়ের মুখোমুখি হলে অ্যাপোলোর মন্দিরের দ্বারস্থ হতেন৷ খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে স্থাপিত এই শহরটিই ছিল দৈববাণীতে নির্ভরশীল প্রাচীন এসব মানুষের কেন্দ্রস্থল৷
রোম সাম্রাজ্য
গবেষকদের ধারণা, রোমান সাম্রাজ্য জুড়ে প্রায় ২ হাজার প্রাচীন নগরীর পত্তন হয়েছিল৷ সেই নগরীর কাঠামো বলতে ছিল একটা শহরের কেন্দ্র, যেখানে ছিল গীর্জা, প্রশাসনিক ভবন, দোকান পাট এবং নাগরিক চত্বর৷ এই কাঠামোকে ‘ফোরাম’ বলা হতো৷
গিজার পিরামিড, মিশর
কায়রোর নিকটেই সাড়ে চার হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো এই স্থাপত্যগুলো৷ ফারাওদের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল এই অতি আশ্চর্য সৃষ্টিগুলো৷ সবশেষ প্রযুক্তি দিয়ে গবেষণা করেও আজ পর্যন্ত এই পিরামিডের রহস্য পুরোপুরি উন্মোচন করা যায়নি৷
পেত্রা, জর্ডান
খ্রিস্টপূর্ব পাঁচশ’ থেকে তিনশ’ অব্দ পর্যন্ত জর্ডানের পেত্রা ছিল অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র৷ এই মরুভূমির শহর আজও মন কাড়ে পর্যটকদের৷
লেস্কো, ফ্রান্স
বলা হয়ে থাকে, লেস্কোর গুহার ছবিগুলো খ্রিস্টের জন্মেরও ১৭ হাজার বছর আগেকার৷ হরিণ, আউরোখ ও ঘোড়ার এসব ছবি প্রাচীন মানুষদের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়৷
স্টোনহেঙ্গে, ইংল্যান্ড
সালিসবুরির কাছে নিওলিথিক যুগের এই পাথর বৃত্তের রহস্য আজও জানা যায়নি৷ কেউ বলেন কাল্ট, কেউ বলেন মন্দির, পর্যবেক্ষণাগার৷