আত্মগোপন করছেন সমকামীরা
১৯ মে ২০১৬‘‘নিজের পাপের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেও৷ যা ইচ্ছা করছে তা খেয়ে প্রস্তুত হও৷ কেউ তোমাকে রক্ষা করতে পারবে না'', ঢাকায় নিহত সমকামী অ্যাক্টিভিস্টদের এক বন্ধুকে এভাবেই হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে৷ এমনিতেই আইনি জটিলতায় থাকা বাংলাদেশের সমকামী সম্প্রদায়কে এখন মৌলবাদীদের কাছ থেকে পালাতে হচ্ছে৷
দেশটির সমকামীদের জন্য প্রকাশ করা প্রথম ম্যাগাজিন ‘‘রূপবানের'' সম্পাদক জুলহাস মান্নান এবং তাঁর বন্ধু মাহবুব তনয় খুন হন গত মাসের ২৫ এপ্রিল৷ আল-কায়দার আঞ্চলিক গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করে৷ বর্বর সেই হত্যাকাণ্ডের পর রয়টার্স বাংলাদেশের আটজন সমকামীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে, যাদের কয়েকজন অ্যাক্টিভিস্টও৷ কিন্তু একজন ছাড়া বাকি কেউ নামপ্রকাশ না করার শর্তেও তাদের মন্তব্য প্রকাশে রাজি হননি৷ মূলত নিরাপত্তার কারণে এই অবস্থান তাদের৷
কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকে ইতোমধ্যে ফেসবুক থেকে সমকামিতা বোঝা যায় এমন সব ছবি মুছে ফেলেছেন৷ কেউ কেউ নিজেদের প্রোফাইলও ডিঅ্যাক্টিভেট করে দিয়েছেন৷ এদের অনেকেই ঢাকায় আত্মগোপনে চলে গেছেন৷ আবার যারা ঢাকাকে নিরাপদ মনে করছেন না, তারা আশ্রয় নিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে কিংবা নিজেদের বিবেচনায় অন্য কোন নিরাপদ আশ্রয়ে৷
ঢাকায় বসবাসরত এক তরুণ সমকামী জানিয়েছেন, ‘‘সবসময় কেমন যেন আতঙ্ক বোধ হয় যে কেউ বুঝি অনুসরণ করছে, এমনকি কেউ তা না করলেও৷'' গত সপ্তাহে হাতে ব্যাগ নিয়ে তার দিকে আসা এক লোককে চাপাতি হাতে এগিয়ে আসছে মনে করে ভয়ে জমে গিয়েছিলেন তিনি৷
অবস্থা এমন যে, কেউ কেউ বাড়ির আশেপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাচ্ছেন, আবার অনেকে শিখছেন আত্মরক্ষার কৌশল৷
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি থেকে এখন অবধি বাংলাদেশে চাপাতির কোপ প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ২৩ ব্যক্তি৷ এগুলোর মধ্যে অধিকাংশ হামলার ঘটনা ঘটেছে ভুক্তভোগীর বাড়িতে বা আশেপাশে৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মুক্তমনাদের নিরাপত্তা দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানালেও এখনো কার্যকর কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি৷
এআই/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)
সমকামিতাকে কি আপনি সমর্থন করেন? না করলে কেন করেন না? জানান নীচের ঘরে৷