যে শহরে ইউনিকর্নের ছড়াছড়ি
১৫ অক্টোবর ২০২০অনবদ্য ইউনিকর্নের সন্ধানে জার্মানির দক্ষিণে সোয়াবিয়ান গেম্যুন্ড শহরে যেতে হলো৷ ডয়চে ভেলের ইউরোমাক্স অনুষ্ঠানের রিপোর্টার হিসেবে মাইকে ক্র্যুগার অবশ্য শহরের পথে এমন কোনো প্রাণীর দেখা পেলেন না৷ অথচ তাঁকে বলা হয়েছিল, পথেঘাটে, ভবনে ইউনিকর্ন দেখা যায়৷ ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে সেটি শহরের প্রতীক চিহ্ন৷
পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি মার্কুস হেয়ারমান সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘অবশ্য কিছুটা লুকিয়ে রয়েছে বলে বাকি জিনিসের মতো চোখের সামনে দেখা যায় না৷ তাই ইউনিকর্ন খুঁজে নিতে হয়৷''
সেই ইঙ্গিত পেয়ে মাইকেরও চোখে পড়লো৷ রূপকথার এই চরিত্র সত্যি চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে৷ শহরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের লোগো অথবা নামের মধ্যে ইউনিকর্নের হদিশ পাওয়া যায়৷ এমনকি আইসক্রিমের মধ্যেও!
ইউনিকর্ন প্রায় ৬০,০০০ মানুষের এই জনপদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ৷ এমনকি পার্কের মধ্যেও একটি প্রাণী গজিয়ে উঠেছে৷ তবে এখনো রক্তমাংসের ইউনিকর্নের দেখা পাওয়া গেল না৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, সত্যি কি তারা রয়েছে? পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি মার্কুস হেয়ারমান জানালেন, ‘‘হৃদয় দিয়ে এই প্রাণীর খোঁজ করতে হয়৷ মনে যুক্তিতর্ক নিয়ে ইউনিকর্নের খোঁজ করলে যে কেউ বিফল হতে বাধ্য৷ সে কারণে আমাদের এখানে এই প্রাণী এমন সব জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে, হৃদয় দিয়ে যেখানে সন্ধান চালাতে হয়৷''
আজও গোটা বিশ্বের শিল্পীরা ইউনিকর্ন থেকে প্রেরণা পান৷ মধ্যযুগে এই প্রাণী অনেকটা ছাগলের মতো দেখতে ছিল৷ পরে সেটি আকর্ষণীয় ঘোড়ার রূপ পায়৷ মিউজিয়ামের প্রধান জানালেন, ইউনিকর্ন নাকি বিশুদ্ধতা, নিষ্পাপ সত্তা ও জাদুর প্রতীক৷
আজও কি ইউনিকর্ন আছে? থাকলে কীভাবে চেনা যায়? এই প্রশ্নের জবাবে টিলমান বলেন, ‘‘খুবই কঠিন প্রশ্ন, কারণ মধ্যযুগীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী একমাত্র কুমারীরাই ইউনিকর্ন চিনতে পারে৷ অর্থাৎ আজ ইউনিকর্ন দেখতে হলে তাদের কাছেই খোঁজ চালাতে হবে৷''
ফলে একটি বিকল্পই রয়ে গেল৷ ইউনিকর্ন পাওয়া না গেলে নিজেকেই একটি তৈরি করে নিতে হবে৷ মাইকের ইউনিকর্নের মূল রং অবশ্যই সাদা৷ স্বাদ বাড়াতে চেরির সুবাস যোগ করতে হয়৷ রংয়ের বাহার দেখাতে হলে ভালো করে লালের মিশ্রণও চাই৷ গরম থাকতে থাকতে চিনির তালের আকার-আয়তন ঠিক করতে হয়৷ দ্রুত সেই কাজ না করলে চিনির ডেলা ভেঙে যাবে৷ অবশেষে মাইকে সেই কাজে সফল হলেন৷ ললিপপের আকারে তিনি একেবারে নিজস্ব ইউনিকর্ন সৃষ্টি করলেন৷
মোটকথা সোয়াবিয়ান গেম্যুন্ড শহরে জীবন্ত ইউনিকর্ন দেখার স্বপ্ন ত্যাগ করতে হলো৷ মাইকে ক্র্যুগার বলেন, ‘‘সোয়াবিয়ান গেম্যুন্ড শহরে ইউনিকর্ন চিনির তৈরি হলে চলবে না, কারণ বৃষ্টির কারণেও বেশিক্ষণ তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন৷ তবে আসল ইউনিকর্ন সেখানে বহাল তবিয়তে রয়েছে৷''
কারণ সম্ভবত অন্য কোথাও মানুষ রূপকথার এই প্রাণীর সঙ্গে এতটা একাত্ম বোধ করে না৷
মাইকে ক্র্যুগার/এসবি