জার্মানিতেও আসছে মশা!
১ আগস্ট ২০১৭কয়েকবছর আগের কথা৷ এক ভারতীয় বেড়াতে যান ইটালির একটি শহরে৷ তাঁর সেই ভ্রমণের কারণে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির৷ তবে ভেবে বসবেন না, ভারতীয় ভদ্রলোক নিশ্চয়ই কাউকে মারার উদ্দেশ্যে ইটালিতে গিয়েছিলেন৷ ব্যাপারটা মোটেই সেরকম নয়৷
আসলে ভারতীয় সেই ভদ্রলোক নিজ শরীরে বহন করছিলেন চিকুনগুনিয়া ভাইরাস৷ সেই ভাইরাস বহন করে একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে নিয়ে যেতে সক্ষম এশিয়ার টাইগার মশা তখন ইটালিতে বংশবিস্তার করে ফেলেছে৷ যদিও চিকুনগুনিয়া ভাইরাসে আক্রান্ত কেউ ছিল না৷ ভারতীয় ভদ্রলোকের আগমনের পর টাইগার মশার কল্যাণে দ্রুত চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ইটালির দু'শ মানুষের শরীরে৷ তাঁদের একজন মারাও যান৷
সেসময় ইটালির চিকিৎসকদের চিকুনগুনিয়া ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি বুঝতে সময় লেগেছিল, জার্মানির ডেয়ার স্পিগেল পত্রিকা জানিয়েছে এই তথ্য৷ কিন্তু পুরো বিষয়টি সতর্ক করে দিয়েছিল ইউরোপকে৷ বিশেষ করে জার্মানিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শীতের পরিমাণ কমে গিয়ে শীতকাল ছোট হয়ে যাওয়ায় এবং গরম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাতাসে আদ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিকর মশার বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ প্রশ্ন হচ্ছে, জার্মানি কি তাদের বংশবৃদ্ধি রোধের চেষ্টা করছে?
জার্মান গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মশা বংশবৃদ্ধি করতে পারে এমন জঙ্গলে বা জলাবদ্ধ এলাকায় মশা মারার কীটনাশক গত কয়েকবছর ধরেই নিয়মিত ছড়াচ্ছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ৷ এ জন্য হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এতে মশার বৃদ্ধি কমেছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে৷
পাশাপাশি মশা নিয়ে চলছে নানাবিধ গবেষণা৷ হামবুর্গের এক গবেষণাগারে কয়েকবছর ধরে চলা গবেষণায় এশিয়ার টাইগার মশা, বুশ মশাসহ কয়েক প্রজাতির মশার অস্তিত্ব জার্মানিতে পাওয়া গেছে৷ দেশটির ৫৫টি এলাকার ৭৫ হাজার মশা গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে, কিছু মশা একটি প্রাণীর দেহ থেকে অন্য প্রাণীর দেহে ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে৷
আশার কথা হচ্ছে, হামবুর্গের গবেষণায় মানুষের জন্য ক্ষতিকর ভাইরাস মশার মাধ্যমে ছড়ানোর পর্যাপ্ত তথ্য জার্মানিতে এখনো পাওয়া যায়নি৷ তবে আগামী পঞ্চাশবছরের মধ্যে পরিস্থিতি বদলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই এক্ষুণি সতর্ক হওয়ার পক্ষে গবেষকরা৷ প্রশ্ন হচ্ছে, জার্মানি কি ভবিষ্যতে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সক্ষম হবে?
আপনার মতামত জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷