‘জার্মানিতে বিদেশি বিদ্বেষের স্থান নেই'
২৮ আগস্ট ২০১৮জার্মানির বিভিন্ন প্রান্তে বিদেশি বিদ্বেষ ও নব্য নাৎসি চিন্তাধারার বিচ্ছিন্ন বিকাশ ঘটলেও এ ক্ষেত্রে দেশের পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে স্যাক্সনি রাজ্যের বাড়তি বদনাম রয়েছে৷ গত সপ্তাহান্তে সেই রাজ্যের কেমনিৎস শহরে নব্য নাৎসিদের তাণ্ডব মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল৷ রবিবার এক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তারা পথেঘাটে বিদেশিদের উপর নির্বিচারে হামলা চালায়৷ প্রায় ৮০০ মানুষের সমাবেশে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী হিংসাত্মক হয়ে ওঠে৷ পুলিশ বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সেই তাণ্ডব থামাতে ব্যর্থ হয়৷ গোটা দেশে এমন ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷
সোমবারও কেমনিৎস শহরে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি৷ সন্ধ্যায় প্রায় ২,০০০ চরম দক্ষিণপন্থি ও তার প্রতিবাদে প্রায় ১,০০০ মানুষ পথে নেমেছিলেন৷ চরম দক্ষিণপন্থি ও বামপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছে৷ দুই পক্ষ একে অপরের উপর আতসবাজিসহ নানা বস্তু নিক্ষেপ করে৷ ৪ জন চরম দক্ষিণপন্থি বিক্ষোভকারীর উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে৷ বামপন্থি বিক্ষোভকারীরা নব্য নাৎসি ভাবধারার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে৷ বামপন্থি রাজনৈতিক দল ‘ডি লিংকে' কেমনিৎস শহরে বিদেশি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে৷ তবে চরম ডানপন্থি এএফডি দল জনতার এমন তাণ্ডবের প্রতি প্রচ্ছন্ন সমর্থন জানিয়ে বলেছে, রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হলে মানুষই এভাবে পথে নেমে আত্মরক্ষা করবে৷
জার্মানির ফেডারেল সরকার কেমনিৎস শহরে অভিবাসীদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করেছে৷ এক সরকারি মুখপাত্র বলেন, কেমনিৎস শহরের কিছু অংশে রবিবার যা ঘটেছে এবং ভিডিওতে যা রেকর্ড করা হয়েছে, সংবিধানভিত্তিক রাষ্ট্রে তার কোনো স্থান নেই৷ জনতা ভিন্ন চেহারা বা ভিন্ন ঐতিহ্যের মানুষকে বাছাই করে তাদের উপর হামলা চালাবে এবং রাজপথে ঘৃণা ছড়াবে, এমন আচরণ বরদাস্ত করা হবে না৷ জার্মানির শহরগুলিতে এমন আচরণের কোনো স্থান নেই৷
স্যাক্সনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মিশায়েল ক্রেচমারও কেমনিৎস শহরে হিংসার তীব্র নিন্দা করেন৷ তবে রাজ্য ও শহরের প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠছে৷
রবিবার ৩৫ বছর বয়সি এক জার্মান ব্যক্তির হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৩ বছর বয়সি এক সিরীয় ও ২২ বছর বয়সি এক ইরাকিকে আটক করে আদালতে পেশ করা হয়েছে৷ সরকারি কৌঁসুলির মতে, কোনো সঙ্গত কারণ ছাড়াই তারা ছুরি নিয়ে ওই ব্যক্তির উপর হামলা চালিয়েছিল৷
কেমনিৎস শহরের ঘটনাবলির জের ধরে জার্মানির বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখা গেছে৷ ড্যুসেলডর্ফ শহরে প্রায় প্রায় দেড়শ' উগ্র দক্ষিণপন্থি বিক্ষোভ করে৷ প্রায় ২৫০ জন তাদের কর্মকাণ্ডেরও প্রতিবাদ জানিয়েছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)