1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বাধ্যতামূলক মিলিটারি সার্ভিস নিয়ে বিতর্ক

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

২০১১ সালে জার্মান তরুণদের জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ বন্ধ করার পর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সেই ব্যবস্থা আবার চালু করার প্রস্তাব শোনা যাচ্ছে৷ খোদ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সে বিষয়ে আলোচনার পক্ষে৷

https://p.dw.com/p/4NY4e
Brüssel Treffen NATO-Verteidigungsminister | Boris Pistorius
ইউক্রেনের এক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস (ডানে)ছবি: Olivier Matthys/AP/picture alliance

ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার বর্ষপূর্তির ঠিক আগে ইউরোপীয় দেশগুলির প্রতিরক্ষার ক্ষমতার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ এক বছর ধরে ইউক্রেনকে অস্ত্র, গোলাবারুদ, সরঞ্জাম সরবরাহ করতে গিয়ে জাতীয় সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলি  হিমশিম খাচ্ছে৷ বিশেষ করে কয়েক দশক ধরে অবহেলার পর জার্মানির মতো দেশের প্রতিরক্ষার বেহাল অবস্থা নিয়ে তুমুল তর্কবিতর্ক চলছে৷

সেই বিতর্কে এবার নতুন মাত্রা যোগ করলেন জার্মানির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস৷ চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস গত বছরই প্রতিরক্ষা খাতের জন্য এককালীন ১০ হাজার কোটি ইউরো বরাদ্দ করেছেন৷ ন্যাটোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাৎসরিক প্রতিরক্ষা বাজেটও জিডিপি-র দুই শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করেছেন৷ সেইসঙ্গে জার্মান সেনাবাহিনী ‘বুন্ডেসভেয়ার'-এর আমূল সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাও স্বীকার করছে তাঁর সরকার৷ কিন্তু পিস্টোরিউসের মতে, এমন সব পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়৷ সেনাবাহিনীর লোকবল বাড়াতে নির্দিষ্ট বয়সের পুরুষদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ আবার চালু করার প্রস্তাব নিয়েও আলোচনা করা উচিত৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে পিস্টোরিউস বলেন, শুধু যুদ্ধবিগ্রহ নয়, বিপর্যয়ের সময়েও এই বাড়তি লোকবল কাজে লাগবে৷ উল্লেখ্য, ২০১১ সালে জার্মান তরুণদের বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ বন্ধ করা হয়েছিল৷

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন যুক্তির বিরুদ্ধে জোট সরকারের মধ্যেই জোরালো প্রতিক্রিয়া শোনা যাচ্ছে৷ সরকারের শরিক উদারপন্থি এফডিপি দলের বিচারমন্ত্রী মার্কো বুশমান বলেন, তরুণ প্রজন্ম এমনিতেই করোনা মহামারির কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যথেষ্ট কষ্ট সহ্য করেছে৷ তাই এমন অবস্থায় বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত আলোচনা একেবারেই কাম্য নয়৷ বুশমান বলেন, জার্মানির লাখ লাখ মানুষ নিজস্ব সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন৷

জার্মান সেনাবাহিনীর রিজার্ভ সংগঠন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ভাবনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ সংগঠনের প্রধান পাট্রিক সেন্সবুর্গ এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, সেনাবাহিনীর মৌলিক দায়িত্ব হলো দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করা৷ তার জন্য আরও সরঞ্জামের পাশাপাশি লোকবল বাড়ানোও প্রয়োজন৷ বাধ্যতামুলক মিলিটারি সার্ভিস ছাড়া সেটা সম্ভব নয় বলে সেন্সবুর্গ মনে করেন৷

সেন্সবুর্গ আরও বলেন, বর্তমানে জার্মানির সুরক্ষার জন্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ সক্রিয় সৈন্য এবং ১২ লাখ রিজার্ভ সৈন্যের প্রয়োজন৷ অথচ এই মুহূর্তে দুই লাখেরও কম সৈন্য ও ৩০ হাজার রিজার্ভ সৈন্য সক্রিয় রয়েছেন৷ বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ ছাড়া সেই ঘাটতি মেটানো সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন৷

বুন্ডেসভেয়ারের ইন্সপেক্টর জেনারেল এবারহার্ড সর্ন বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণের  পুরানো কাঠামো আবার চালু করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন৷ ‘ডি ভেল্ট' সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, শুধু তরুণদের জন্য সেনাবাহিনীতে ছয় মাসের বাধ্যতামূলক কার্যকাল আর যুগোপযোগী নয়৷ তার চেয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এক বছরের বাধ্যতামূলক সার্ভিসের পক্ষে সওয়াল করেন সর্ন৷ এর আওতায় শুধু সেনাবাহিনী নয়, নাগরিক সমাজের জন্যও প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে৷ তবে এমন পদক্ষেপের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)