জার্মানিতে বহুসাংস্কৃতিক ধারা ব্যর্থ, বললেন ম্যার্কেল
১৭ অক্টোবর ২০১০পটসডামে তাঁর সিডিইউ দলের যুব সমিতির সম্মেলনে ম্যার্কেল এ'সব কথা যেভাবে বলেছেন, তা'তে মনে হয়, ভাষাশিক্ষা এবং সমাজে অন্তর্ভুক্তির দায়িত্ব এবং বাধ্যতাটা প্রধানত বহিরাগতদের৷
বিতর্কের শুরু জার্মান ফেডারাল ব্যাংক, অর্থাৎ রিজার্ভ ব্যাংকের পরিচালক মণ্ডলীর সদস্য থেও সারাৎসিন'এর কিছু মন্তব্য এবং একটি বই থেকে৷ সারাৎসিন স্বয়ং কিন্তু সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সদস্য৷ সারাৎসিন ধুয়ো তোলেন, ইসলাম ধর্মাবলম্বী বহিরাগতরা জার্মান সমাজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে উঠতে অসমর্থ৷ তার রেশ কাটতে না কাটতে সিডিইউ দলের বাভেরিয় ‘সহোদরা' দল সিএসইউ'এর সভাপতি হর্স্ট জেহোফার বলে বসেন, ইসলাম ধর্মাবলম্বী দেশগুলি থেকে অভিবাসন সীমিত করা উচিৎ৷ গত শুক্রবার তাঁর মুখ থেকে এ'ও শোনা যায় যে, জার্মানিতে বহুসাংস্কৃতিক সমাজ গড়ার চেষ্টা, জার্মানে যা'কে বলে ‘মুল্টি-কুল্টি' বা মাল্টিকালচারালিজম, তার স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে৷ জার্মান সংস্কৃতিই যে জার্মানির মুখ্য সংস্কৃতি, বহিরাগতদের তা' মেনে নিতে হবে৷
ম্যার্কেল কি জেহোফারকেই সমর্থন করেছেন?
ম্যার্কেল বলছেন, জার্মানির শ্রম বাজারে কাজ পেতে গেলে জার্মান ভাষা অবশ্য করে শিখতে হবে৷ অপরদিকে বিশেষ করে জার্মানিতে অভিবাসনে আগ্রহীদের জন্য তাঁর বার্তা, যারা জার্মান বলেন না, তারা জার্মানিতে স্বাগত নন৷ তাদের শুধু জার্মানির আইন মানলেই চলবে না, এ'দেশের ভাষাও শিখতে হবে৷
খুবই কড়া শোনাচ্ছে৷ কিন্তু অপরদিকে ম্যার্কেল তো জার্মানিতে দক্ষ বিদেশীদের আনার গুরুত্বের কথাও বলেছেন৷ বলেছেন, প্রতিবছর যে সব জার্মানরা অবসর নেন, তাদের মধ্যে দু'লাখ লোকের খালি হওয়া পদের জন্য উপযুক্ত লোক পাওয়া যায় না৷ এবং এ'ভাবে চললে কোম্পানিরা দক্ষ শ্রমিকের অভাবে জার্মানি ছাড়তে পারে, বলেছেন ম্যার্কেল৷
আবার ম্যার্কেল সেই সঙ্গে যোগ করেছেন যে, দক্ষ বিদেশী শ্রমিকদের লোভে এ'দেশের একটু বেশী বয়সের এবং কম দক্ষতার শ্রমিক-কর্মচারিদের কথা ভুললে চলবে না৷ সর্বাগ্রে তাদের নতুন যোগ্যতা সংগ্রহ করে চাকরি পাবার সুযোগ দিতে হবে৷
আর ইসলাম সংক্রান্ত বিতর্কে ম্যার্কেল স্বয়ং জার্মান প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিয়ান উল্ফের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বলেছেন, ইসলাম জার্মানির অঙ্গ, এবং তা শুধু মেসুৎ ওয়েজিল'কে দেখলেই বোঝা যায়৷
মেসুৎ ওয়েজিল? জার্মান ফুটবল টীমের স্টার৷ নাগরিকত্বে জার্মান, জাতে তুর্কি৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম