নেকড়ের ভয়ে আতঙ্কিত কিছু মানুষ
৩০ জানুয়ারি ২০১২নেকড়েদের জন্য জার্মানি আবার আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে৷ জঙ্গলে হরিণ ও বুনো শুয়োরের অভাব নেই৷ তাই শিকার খুঁজতে অসুবিধা হচ্ছে না৷ জার্মানিতে বর্তমানে ১০০ থেকে ১২০টি নেকড়ের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা ২০১০ সালের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ৷ ড্রেসডেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিস্ট নরমান স্টিয়ার নেকড়েদের বিষয়ে সম্প্রতি এমন অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছেন৷
গত শতাব্দীর শুরুতেই জার্মানিতে নেকড়েরা একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু গত ২০ বছর ধরে তারা আবার ধীরে ধীরে এদেশে ফিরে আসছে৷ জার্মানির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে এই প্রবণতার একটা পরোক্ষ যোগাযোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ শীতল যুদ্ধের সমাপ্তি ও দুই জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের ফলে অনেক সেনা নিবাস খালি হয়ে গেছে৷ সেখানেই নেকড়েদের বাসা বাঁধতে দেখা যাচ্ছে৷ অর্থাৎ দেশের পূর্বাঞ্চলেই নেকড়েদের উপস্থিতি বেশি৷ বার্লিনের আশেপাশে জনবিরল এলাকা তাদের বিশেষ পছন্দ৷ মূলত পুরুষ নেকড়েরাই সাহস করে এই অভিবাসনে উৎসাহ দেখাচ্ছে, তাদের পেছনে পেছনে আসছে নারী নেকড়েরাও৷ ড্রেসডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিস্ট স্টিয়ার মনে করছেন, এর ফলে জার্মানিতে নেকড়ে বংশে দ্রুত বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে৷
হারিয়ে যাওয়া কোনো প্রাণী আবার ফিরে এলে প্রকৃতির জন্য তা খুবই সুলক্ষণ, এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ কিন্তু সব মানুষ নেকড়েদের সাদরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত নয়৷ বিশেষ করে প্রকৃতি প্রিয় জার্মানরা যেভাবে পাহাড়ে-জঙ্গলে মাইলের পর মাইল টহল দিতে পছন্দ করেন, তাদের মধ্যে অনেকে অস্বস্তি বোধ করছেন৷ জার্মানিতে হিংস্র পশু না থাকায় এতকাল তারা বেশ নির্ভয়ে ঘোরাফেরা করেছেন৷ বিশেষ করে বার্লিনের আশেপাশে স্থানীয় মানুষ তাদের গবাদি পুশু নিয়ে চিন্তিত৷ কিছু এলাকায় বেড়া ভেঙে নেকড়ে বেশ কিছু পশু চুরি করে নিয়ে গেছে৷ এবছর শীতের প্রকোপ তেমন বেশি না হওয়ায় নেকড়েরা অবশ্য জঙ্গলের প্রাণীদের ভক্ষণ করেই মোটামুটি খুশি ছিল৷ গৃহস্থের বাড়িতে তারা বেশি হামলা চলায় নি৷
স্টিয়ার তাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন৷ পোল্যান্ডের উদাহরণ দিয়ে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নেকড়দের সঙ্গে মানুষের সহাবস্থান স্বাভাবিক হয়ে পড়বে৷ দুই পক্ষই নিজেদের সীমা বুঝে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করবে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক