1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে জ্বালানির লাভের টাকা যাচ্ছে কার পকেটে?

২১ মার্চ ২০২২

জার্মানির পেট্রোল পাম্পগুলোতে রোববার এক লিটার ডিজেল ২.২৫ ইউরো বা ২১৪ টাকায় বিক্রি হয়েছে৷ অর্থাৎ তিন সপ্তাহ আগের চেয়ে দাম ০.৫৫ ইউরো বা সাড়ে ৫২ টাকা বেড়েছে৷

https://p.dw.com/p/48mkm
Symbolfoto Benzinpreis | Tankstelle Berlin
ছবি: Sebastian Gabsch/Geisler/picture alliance

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানিতে পেট্রোলের দামও বেড়েছে৷ রোববার প্রতি লিটার পেট্রোল ২.১৩ ইউরো বা ২০৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে৷ অর্থাৎ প্রথমবারের মতো জার্মানিতে সরকারের ভর্তুকি সত্ত্বেও পেট্রোলের চেয়ে ডিজেল বেশি দামে বিক্রি হয়েছে৷

যুদ্ধ শুরুর আগে প্রতি ব্যারেল অশোধিত ব্রেন্ট তেলের দাম ছিল ৮৫ ইউরো৷ এক সপ্তাহ পর সেটা ক্রমে বেড়ে ১১৫ ইউরো হয়েছিল৷ এরপর আবার দাম কমে সোমবার সেটা প্রায় সাড়ে ১০১ ইউরো হয়েছে৷

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যুদ্ধ শুরুর পর অশোধিত তেলের দাম বাড়লেও এখন আবার কমছে৷ কিন্তু গ্যাস স্টেশনগুলোতে পেট্রোল ও ডিজেল এখনও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে৷ কিন্তু কেন?

পেট্রোল পাম্পে পেট্রোল বা ডিজেল কিনতে একজন ক্রেতা যে দাম দেন সেটা পাঁচজনের মধ্যে ভাগ হয় - তেল কোম্পানি, সরবরাহকারী, তেল শোধনাগার, পেট্রোল পাম্পের মালিক ও সরকার৷

পেট্রোল বা ডিজেলের প্রকৃত মূল্য আসলে ক্রেতা যে দামে কিনছেন তার অর্ধেকের বেশি৷ অশোধিত তেল কেনা, সেটা পরিবহণ করা, আরও প্রক্রিয়াজাত করা, কোথাও জমা রাখা, প্রশাসনিক কাজ এবং বিতরণ করা - এর মধ্যে পড়ে৷ এর সঙ্গে যুক্ত হয় তেল কোম্পানির দেয়া কার্বন ডাই অক্সাইড কর এবং তাদের লাভ৷

পেট্রোল ও ডিজেল বিক্রির টাকার একটা বড় অংশ সরকারও পেয়ে থাকে৷ ডিজেল বিক্রির ৩৯ শতাংশ এবং পেট্রোল বিক্রির ৪৮ শতাংশ পায় সরকার৷ এবং এই হারটা নির্ধারিত৷ তাই জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি থেকে সরকারের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম৷

মূল্য সংযোজন করটাও শতকরা হারে গণনা করা হয়৷

পেট্রোল পাম্পের মালিকরাও যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি থেকে লাভবান হচ্ছেন তা মনে করেন না জার্মানির কিল ইন্সটিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির ইয়েন্স বোইজেন-হোগ্রেফে৷ তিনি বলেন, ‘‘জ্বালানির দাম বেশি হওয়ায় পেট্রোল পাম্পের যে ক্রেতারা আগে জ্বালানির পাশাপাশি হয়ত একটা ক্যান্ডি বারও কিনতেন, এখন সেটা কিনবেন না৷'' ফলে তেল বেঁচে মালিকরা যে টাকাটা বেশি পেতেন, অন্য খাতে বিক্রি কমে যাওয়ায় সব মিলিয়ে লাভটা খুব বেশি হবে না বলে মনে করেন বোইজেন-হোগ্রেফে৷জার্মানির বাজারে তেল, চাল, গমের সংকট

জার্মানি তার প্রয়োজনের অশোধিত তেলের পুরোটা রাশিয়া থেকে কেনে৷ ৪১ শতাংশ ডিজেলও কেনে রাশিয়া থেকে৷ কিন্তু জার্মানিতে জ্বালানির দাম বাড়ার সুফল রাশিয়ার পাওয়ার সম্ভাবনাও কম বলে মনে করেন জার্মানির জ্বালানি বিষয়ক অর্থনীতিবিদ মানুয়েল ফ্রন্ডেল৷ ‘‘রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিটা দীর্ঘমেয়াদি৷ ফলে চুক্তিতে যে দাম উল্লেখ করা আছে সেটাই রাশিয়া পাচ্ছে,'' বলেন তিনি৷

তাহলে এখন তেল শোধনাগার কোম্পানিগুলো বাকি থাকল৷ তাদের পকেট কি ভারী হচ্ছে? জার্মান অর্থনীতিবিদ ইয়ুস্টুস হাওকাপ মনে করছেন, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ার পেছনে তাদের হাত থাকতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে এই আশঙ্কায় শোধনাগার কোম্পানিগুলো হয়ত (দাম বাড়িয়ে) সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে৷''

দাম বৃদ্ধিতে শোধনাগার কোম্পানিগুলোর দায় আছে কিনা তা তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন জার্মানির অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী রোব্যার্ট হাবেক৷

তাতিয়ানা শোয়াইৎসার/জেডএইচ