জার্মানিতে খ্রিস্টান-মুসলমান সম্পর্ক
৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৯বলা যায়, নাইন ইলেভেনের পর থেকেই শুধু জার্মানিতে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলাম নিয়ে আলোচনা বেড়েছে৷ সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানিতে ইসলাম নিয়ে খ্রিস্টান ও মুসলমানদের মধ্যে সংলাপের বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন অগ্রগতি হচ্ছে, পাশাপাশি তেমনই রয়েছে সমস্যা ও সম্ভাবনা৷
বর্তমানে জার্মানিতে মুসলমান জনগোষ্ঠী রয়েছে প্রায় ৩.৫ মিলিয়ন বা ৩৫ লাখ৷ এদের বেশীরভাগই বাস করেন জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে এবং বার্লিনে৷ তবে জার্মানিতে বসবাসরত প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মুসলমানই তুর্কী বংশোদ্ভুত৷অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় শতকরা ৪ ভাগ৷ অন্যদিকে জার্মানির মোট জনসংখ্যার শতকরা ৩২ ভাগ ক্যাথলিক, ৩২ ভাগ প্রোটেস্ট্যান্ট, এবং ১.১ ভাগ অর্থডক্স খ্রীস্টান৷ বলা বাহুল্য এইসব তুর্কীদের প্রায় সবাই অভিবাসী হয়ে থাকছেন জার্মানিতে৷
২০০১ সালের ১১-ই সেপ্টেম্বরের পর, জার্মানির মুসলমান এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে সংলাপের পদক্ষেপ নেয়া হয়৷ এই সংলাপ চালানোর সময় অনেকগুলো সমস্যা বের হয়ে এসেছে৷ এর মধ্যে সামাজিক ব্যাপারটির পাশাপাশি রয়েছে বৈধতার প্রশ্ন, রয়েছে মনোগত চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতি এবং ধর্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা সম্পর্কিত বিষয়গুলো৷ এই সব সমস্যা সত্ত্বেও কিন্তু দু'ধর্মের মধ্যে সংলাপ থেমে নেই৷ জার্মানির বিভিন্ন শহরে ক্রিশ্চান-ইসলামিক কমিটি রয়েছে৷ জার্মানিতে খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের মধ্যে সংলাপে সমন্বয় সাধনের জন্যে ক্রিশ্চান-ইসলামিক আ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে কাজ করে চলেছে৷
জার্মানির বিভিন্ন শহরে গড়ে উঠেছে মসজিদ৷ ক্রিশ্চান এবং মুসলিম শিশুদের একসঙ্গে বড় করে তোলা এবং শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে জার্মানির কিন্ডারগার্টেনগুলো৷ বিশেষ, করে গির্জা পরিচালিত কিন্ডার্গার্টেনগুলো এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ সমর্থন পেয়ে থাকে৷ এছাড়া কয়েক বছর ধরে জার্মানির স্কুলগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষাও দেয়া হচ্ছে৷
ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আন্তঃসংস্কৃতি এবং আন্তঃধর্মীয় শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টির চেষ্টাতেই এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে৷ পড়ালেখার এই প্রক্রিয়া শুধু বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে জ্ঞানের পরিধিই বিস্তৃতি করছে না বরং জার্মানিতে মুসলমান এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে একটা মজবুত সম্পর্ক তৈরীতেও ভুমিকা রাখছে৷