জার্মানিতে খরা?
২০১৫ সালে জার্মানিতে রেকর্ড গরম! সে তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে না৷ ফলে গাছপালা, মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে; নদীর জলে চড়া পড়েছে; বনভূমিতে বাড়ছে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা৷
চাষের ক্ষেতে দমকল!
খরা বা বৃষ্টিহীনতা বা শুষ্কতা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে আগুন লাগার সম্ভাবনা৷ উত্তর রাইন পশ্চিম ফালিয়া রাজ্যের লেমবেক-এ ক্ষেতের আগুন নিভোতে দমকলকে ডাকতে হয়েছে৷ ট্যুরিঙ্গিয়া রাজ্যে এ বছর জঙ্গলে আগুন নেভানোর জন্য ১৪ বার দমকল নেমেছে – যা কিনা গত দু’বছর মিলিয়ে করতে হয়নি!
ফসল নিয়ে চিন্তা
জার্মানির একটি বড় অংশ জুড়ে খুবই কম বৃষ্টি হয়েছে৷ মাটি এত শুকনো যে, গত ৫০ বছরে এমনটি দেখা যায়নি৷ জমির ওপরের ৩০ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার মাটি পুরোপুরি শুকনো৷ এর ফলে বিশেষ করে কৃষিকাজের ক্ষতি হচ্ছে – যেমন এখানে স্যাক্সনির কামেনৎস-এ৷ খরার দরুণ আলু কিংবা ভু্ট্টার ফসল কম হবে, বলে চাষিদের আশঙ্কা৷
নদীর পানি কমছে
জলের নীচের নুড়িপাথর ছাওয়া নদীবক্ষ বেরিয়ে পড়েছে৷ জার্মানির নদীগুলিতে এখন জল প্রায় নেই বললেই চলে৷ বিঙেন-এর কাছে রাইন নদে বহু বালু কিংবা নুড়িপাথরের চর বেরিয়ে পড়েছে৷ কম পানির জন্য রাইনের গাধাবোটগুলো পুরোপুরি মাল তুলতে পারছে না৷
এলবে নদীর ‘ক্ষুধিত পাষাণ’
‘হুঙ্গারস্টাইন’ বলতে বোঝায় ক্ষুধার পাষাণ৷ পাথরের উপর উৎকীর্ণ সংখ্যাটি দেখে বোঝা যায় যে, কোনো এক বছর ব্যাপক খরা হয়েছিল – কেন না পরেরবারের খরায় নদীর জলে ডোবানো পাথরটি আবার বেরিয়ে পড়তে পারে, যেমন ১৮৫৯ সালে স্যাক্সনির পির্মা-ওবারপোস্টার কাছে এলবে নদীবক্ষের এই পাথরটি৷
কম জলে জাহাজ চলে না
ওডার নদীর তীরে আরেক ফ্রাংকফুর্ট শহরের কাছে জাহাজ চলাচল বন্ধই হয়ে গিয়েছে৷ এখানে জলের গভীরতা এখন সরকারি হিসেব অনুযায়ী মাত্র ৯৯ সেন্টিমিটার! দক্ষিণ জার্মানিতেও নদীর জল কম হওয়ায় ক্রুইজ বোট কিংবা গাধাবোট-গুলির চলাফেরা বিঘ্নিত৷
পানি কোথায়?
এই খরায় হেসে রাজ্যের এডারজে বা এডার হৃদের জল প্রতিদিন ২০ লাখ ঘনমিটার কমে যাচ্ছে – কেন না সেই জলে ওয়েজার নদীতে জাহাজ চলাচল বজায় রাখা হচ্ছে৷ হৃদের জলে নেমে ঠান্ডা হতে গেলে কিন্তু পানি খুঁজতে হবে!
নিমগ্ন সমাধি
একশ’ বছরের বেশি আগে যখন এই বাঁধ দেওয়া হয়েছিল, তখন এডারজে এলাকার তিনটি গ্রাম সেই পানিতে ডুবে যায়৷ এবারকার খরায় সেই সব হারিয়ে যাওয়া গ্রামের কিছু কিছু অংশ আবার বেরিয়ে পড়েছে৷ তার মধ্যে পুরনো কবরখানাটিও আছে৷ বাঁধ তৈরির সময় কবরগুলোর উপর কংক্রিটের চাঙড় ফেলে সেগুলোকে সুরক্ষিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷
যে সেতু জল থেকে উঠে আসে!
এই ভুতুড়ে সেতুটিও বস্তুত এডার হৃদের জলের নীচেই থাকে – গ্রামগুলোর মতো বাঁধ তৈরির সময় ডুবে গিয়েছিল৷ এবার পানি কম হওয়ায় একশ’ বছরের বেশি পুরনো সেতুটির আবার ভেসে উঠেছে! নতুন করে ডুবতেও সময় লাগবে, কারণ বৃষ্টির কোনো লক্ষণ নেই...৷