1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে করোনা টেস্টের ব্যয় নিয়ে বিতর্ক

১৮ আগস্ট ২০২০

কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের করোনা টেস্ট ঠিকঠাকই চলছে৷ কিন্তু বাধ্যতামূলক এই করোনা টেস্টের ব্যয় বহন করবে কে, এ নিয়ে বিতর্ক চলছেই৷

https://p.dw.com/p/3h84q
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Bockwoldt

বার্লিনের টেগেল বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষা বেশ নিয়ম মেনেই চলছে৷ কিন্তু রোববার এক পরিবার হাজির হয় বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার জন্য৷ তারা এক সপ্তাহেরও আগে তুরস্ক থেকে এসেছেন৷

বাচ্চারা পরদিন থেকে ডে কেয়ার সেন্টারে যাওয়া শুরু করবে বলে তাদের করোনা নেগেটিভ সনদ প্রয়োজন৷ এ নিয়ে বিমানবন্দর কর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে নির্ধারিত সময়ের তিন ঘণ্টা আগেই করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হয়৷ তখনও উচ্চঝুঁকির কিছু দেশ থেকে ফ্লাইট আসা বাকি ছিল৷

তবে এমন কিছু ঘটনা ছাড়া বাকি সব ঠিকমতোই চলছে৷ যাত্রীরা লাইন ধরে দাঁড়াচ্ছেন, নিরাপত্তাকর্মীরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পথও সবাইকে বাতলে দিচ্ছেন৷

আভিনোয়াম শালেম ও তার স্ত্রী এলিজাবেথ রোশাও-শালেম নিউ ইয়র্ক থেকে এসেছেন৷ ডয়চে ভেলেকে তারা জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তারা একবার করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ রেজাল্ট পেয়েছেন৷ কিন্তু তারপরও নিরাপদ থাকার জন্য তারা বিমানবন্দরে আবার পরীক্ষা করিয়েছেন৷ বার্লিনে অবতরণের পরই তাদের ডিজিটাল কোডসহ একটি ফর্ম দেয়া হয়৷ সেটি দেখিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটেই তারা পরীক্ষা করিয়েছেন৷ পরীক্ষার পর এলিজাবেথ জানান, খুব পেশাদারিত্ব মধ্য দিয়ে পুরো ব্যবস্থাটা পালন করেছে কর্তৃপক্ষ৷

আগস্টের শুরুতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েনস স্পান ঘোষণা দেন উচ্চঝুঁকির বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বাধ্যতামূলক পরীক্ষা করতে হবে৷ জার্মানির গণস্বাস্থ্য সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট নিয়মিত উচ্চঝুঁকিতে থাকা দেশের তালিকা হালনাগাদ করে চলেছে৷

এসব দেশ থেকে আসা যাত্রীরা যাত্রা শুরুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্য়ে সে দেশ থেকে করোনা পরীক্ষা করাতে পারেন৷ অথবা তারা বিমানবন্দরে কিছু রেলস্টেশনে এমনকি জার্মানি আসার তিন দিনের মধ্যে ডাক্তারের চেম্বারেও পরীক্ষা করাতে পারবেন৷

কিন্তু বেশিরভাগ যাত্রীই বিমানবন্দরে পরীক্ষা করাতেই পছন্দ করছেন৷ নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪৮ হাজারেরও বেশি যাত্রীকে পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ এর মধ্য়ে ৯৬০ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে৷ অন্যদিকে বাভারিয়া রাজ্যে সোয়া এক লাখ পরীক্ষায় দেড় হাজারের বেশি যাত্রীর শরীরে পাওয়া গেছে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি৷ এই মুহূর্তে বিদেশ থেকে আসা ৪৬ যাত্রীকে খুঁজছে জার্মান সরকার৷ তাদের করোনা পজিটিভ ধরা পরলেও, যোগাযোগের কোনো ঠিকানা জানানি তারা৷

কে দেবে পরীক্ষার খরচ!

পরীক্ষা বাধ্যতামূলক ঘোষণার পর থেকে এর খরচ কে দিবে, তা নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক৷ এই মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিমা প্রতিষ্ঠানহগুলো এর খরচ দিলেও পরবর্তীতে সে খরচ রাজ্য থেকে পরিশোধ করার কথা রয়েছে৷

বার্লিনের মেয়র মাইকেল ম্যুলার বিল্ড পত্রিকাকে বলেছেন, ‘‘উচ্চঝুঁকির দেশ থেকে যারা আসছেন, সেসব যাত্রীদেরও খরচের একটা অংশ বহন করা উচিত৷’’ ব্যবসায়ীবান্ধব বলে পরিচিত রাজনৈতিক দল এফপিডির মুখপাত্র কনস্টানটিন কুহলেও ম্যুলারের সঙ্গে একমত৷ তিনি বলেন, ‘‘জেনেশুনেও যারা এখনও মায়োরকা বা অন্যসব উচ্চঝুঁকির এলাকায় ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন, তাদের করোনা পরীক্ষার খরচ নিজেদেরই বহন করা উচিত৷’’

তবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান অবশ্য এখনও বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষারই পক্ষে৷ তার যুক্তি, যাত্রীদের খরচ দিতে হলে অনেকেই পরীক্ষা না করিয়ে সটকে যেতে পারেন৷ এর ফলে যারা অন্য দেশ থেকে আসছেন, তাদের কারণে এখন করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখা জার্মানিতে আবার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে৷

যাত্রী আভিনোয়াম শালেমও জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অবস্থানে একমত৷ তুরস্ক থেকে ভেলি উলুসু নামের আরেক যাত্রীও মনে করেন, ‘‘এর খরচ অনেক বেশি, বিশেষ করে যাদের পরিবারে অনেক সন্তান রয়েছে৷ ফলে এই পরীক্ষা ফ্রি থাকা উচিত৷’’ তুরস্ক থেকেই পরীক্ষা করিয়ে আসায় তাকে অবশ্য জার্মান বিমানবন্দরে আর পরীক্ষা করাতে হয়নি৷

এক সপ্তাহ আগেও স্পেনের কিছু এলাকাই কেবল উচ্চঝুঁকির তালিকায় ছিল৷ কিন্তু এখন ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ ছাড়া প্রায় পুরো স্পেনই আছে এ তালিকায়৷ বিশেষ করে স্পেনের মায়োরকা জার্মান পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের জায়গা৷ ফলে এখন গ্রীষ্মের ছুটি কাটিয়ে আসা যাত্রীদের চাপও বাড়ছে বিমানবন্দরগুলোতে৷

ইয়েনস থুরাউ, ফোলকার ভিটিং/এডিকে