জার্মানিতে ইসলাম-বিরোধী ভিডিও প্রদর্শন বন্ধের উদ্যোগ
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১২অ্যামেরিকায় তৈরি ইসলাম-বিরোধী ভিডিও'র বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া যে কতটা মারাত্মক হতে পারে, লিবিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের হত্যা তা গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে৷ সুদানের রাজধানী খার্তুমে জার্মান দূতাবাসের উপর হামলার পর বার্লিনও নড়েচড়ে বসেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল গোটা বিশ্বে জার্মান দূতাবাসগুলির নিরাপত্তার উপর জোর দিচ্ছেন৷ ভিডিও'র বিষয়বস্তু যতই আপত্তিকর হোক না কেন, হিংসাত্মক ঘটনা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে তিনি মনে করেন৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডো ভেস্টারভেলে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, জার্মানির কিছু প্রান্তিক উগ্র দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী যেমন জার্মান জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটায় না, উগ্র ইসলামপন্থীরাও বৃহত্তর আরব ও মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধি নয়৷
খোদ জার্মানিতেও বিষয়টি বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ‘প্রো ডয়েচলান্ড' নামের এক চরম দক্ষিণপন্থী দল বিতর্কিত ভিডিওটি বার্লিনে একটি সিনেমা হলে দেখানোর ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছে৷ নভেম্বর মাসের শুরু অথবা শেষে তারা এই কাজ করবে বলে জানিয়েছে৷ আর সিনেমা হল পাওয়া না গেলে অন্য ব্যবস্থা করা হবে৷ সোমবার দলের ওয়েবসাইটে ১ ঘণ্টা ১৪ মিনিট দৈর্ঘ্যের গোটা ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, বিতর্কিত মার্কিন যাজক টেরি জোন্স'কেও বার্লিনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে এই দল৷ এই সব পদক্ষেপকে জার্মানিতে বসবাসরত মুসলিমদের জন্য বিশাল প্ররোচনা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে৷
জার্মান সরকারকে এই অবস্থায় ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হচ্ছে৷ রাজনৈতিক স্তরে ও সমাজে বিষয়টি নিয়ে তুমুল তর্ক বিতর্ক চলছে৷ একদিকে মত প্রকাশের গণতান্ত্রিক অধিকার, অন্যদিকে গণ নিরাপত্তার প্রশ্ন৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে জার্মানিতে টেরি জোনস'এর উপস্থিতি উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলবে, এই যুক্তিতে তাঁর জার্মানি প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে সরকার৷
চ্যান্সেলর ম্যার্কেল আরও বলেছেন, নিরাপত্তার খাতিরে জার্মানিতে এই ভিডিও প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করার চেষ্টা করছে তাঁর সরকার৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স পেটার ফ্রিডরিশ আশা প্রকাশ করেছেন, যে বার্লিন রাজ্যের কর্তৃপক্ষ এই ভিডিও প্রদর্শন বন্ধ করতে যাবতীয় উদ্যোগ নেবে৷ তিনি বলেন, এটা শুধু জার্মানির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, আরব বিশ্ব সহ আন্তর্জাতিক আঙিনায় জার্মানির সুসম্পর্কের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ৷ ম্যার্কেল ও ফ্রিডরিশ অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে গোটা ছবিটি নিষিদ্ধ করার কথা বলা হচ্ছে না, শুধু প্রকাশ্যে এর প্রদর্শন বন্ধ করার চেষ্টা চলছে৷
এসবি / জেডএইচ (ডিপিএ,রয়টার্স)