জার্মানি থেকে লাখ লাখ ইউরো পাচার
১৩ নভেম্বর ২০১৮জার্মান সরকারি চ্যানেল এনডেএর, ভেডেএর এবং স্যুডডয়চে সাইটুং পত্রিকাকে সুযোগ দেয়া হয়েছিল এই মামলার নথিপত্র দেখার৷ এগুলো দেখে সাংবাদিকরা নিশ্চিত যে, বিশ্বব্যাপী কোকেন এবং অর্থপাচারে এই গ্যাং-এর নেটওয়ার্ক রয়েছে৷
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি ডিইএ সন্দেহভাজন গ্যাং সদস্য এবং কলম্বিয়ার মাদক পাচারকারীদের কথোপকথোন রেকর্ড করতে সফল হয়৷ একই ধরনের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করছিলো ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ৷ তারা এ ধরনের কয়েকশ' টেলিফোন কথোপকথোন রেকর্ড করেছিল৷ দুই পক্ষের আলোচনা থেকে তারা এটা নিশ্চিত হন যে ইউরোপের পশ্চিমাঞ্চলে এই গ্যাং-এর সদস্যরা ছড়িয়ে রয়েছে৷ তবে এদের নেটওয়ার্ক রয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ অ্যামেরিকায়৷
মাদকপাচারের মাধ্যমে ইউরোপ থেকে লাখ লাখ ইউরো পাচারের অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে৷ এদের প্রায় সবাই লেবাননের নাগরিক অথবা লেবানিজ বংশোদ্ভূত৷ তদন্তকর্মকর্তাদের ধারণা এই গ্যাংটি ইউরোপে কর্মকাণ্ড চালালেও মূলত লেবানন থেকে এদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷
প্রতি সপ্তাহে জার্মানিসহ অন্যান্য দেশ থেকে ১০ লাখ ইউরো ইউরোপের বাইরে পাচার করত তারা৷ ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বড় ধরনের একটি তদন্ত হয় এ বিষয়ে৷ ছ'টি দেশে সন্দেহভাজনদের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ৮ লাখ নগদ ইউরো জব্দ করে তারা৷ জার্মানি থেকে চারজন আটক হয়৷
এই সদস্যদের মধ্যে কাজ ভাগ করা থাকে৷ যেমন আখেনের কাছ থেকে যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছিল, সে জার্মানি, বেলজিয়া, স্পেন, ইটালি এবং ফ্রান্সে নগদ অর্থের বিনিময়ে মাদক বিক্রি করত৷ এরপর সেই অর্থ সে অন্য সদস্যদের ভাগ করে দিয়ে তাদের অলংকার, দামি ঘড়ি এবং দামি গাড়ি কিনতে বলত৷ এরপর তারা সেগুলো লেবাননে নিয়ে বিক্রি করত৷ এরপর সেই অর্থ সরাসরি চলে যেত দক্ষিণ অ্যামেরিকার মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে৷
কর্তৃপক্ষ এখন তদন্ত করছে এই গ্যাং-এর সদস্যরা হেজবুল্লাহর হয়ে কাজ করছে কিনা৷ যদিও এখন পর্যন্ত তারা এমন কোনো তথ্য পাননি যে এই অর্থ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে৷
তদন্ত কর্মকর্তাদের ধারণা, অবৈধ ব্যবসার জন্য জার্মানি হচ্ছে ইউরোপের মূল কেন্দ্র৷তবে এই গ্যাং সদস্যদের মধ্যে একজন আলী জেড সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘‘তিনি নির্দোষ৷ তার ব্যবসা বৈধ৷''
জার্মানির ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এই মামলা করেছে৷ গত বছর ৬০ হাজার ইউরো অর্থ পাচারের মামলা করেছে তারা৷ প্যারিসে এই মামলার অভিযোগের শুনানি এ মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা৷
ফল্কমার কাবিশ, ইয়ান লুকাস স্ট্রোজিক, বেনেডিক্ট স্ট্রুনৎস/এপিবি