জার্মানিতে ‘শারিয়া-পুলিশ’
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪বেশ কিছুদিন ধরে ভুপার্টাল শহরের কেন্দ্রে কিছু তরুণকে রাতের দিকে বিশেষ করে তুর্কি দোকানপাট, ক্যাফে বা গেমরুমের সামনে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে৷ তাদের পরনে কমলা রঙের ওয়েস্ট কোট, যাতে লেখা ‘শারিয়া পুলিশ'৷ অ্যালকোহল, মাদক, পর্নোগ্রাফি, জুয়াখেলা, সংগীত, কনসার্ট ইত্যাদি চলবে না, ইত্যাদি লেখা লিফলেট বিলি করেন তাঁরা৷
সালাফিস্টরা তাদের এই কর্মকাণ্ডের ভিডিও তৈরি করেছেন৷ যার মূল প্রতিপাদ্য: ‘‘ঈশ্বরের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন কাটাতে হবে৷''
ইতোমধ্যে অন্যান্য শহরেও শারিয়া পুলিশ নিয়োগ করা হবে বলে জানান এই গোষ্ঠীর অনুসারীরা৷ রাস্তাঘাটে ডিসকোথেকের সামনে তরুণদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা৷ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে ও মসজিদে যেতে অনুপ্রাণিত করেন৷
‘‘জার্মানির মাটিতে শারিয়াকে বরদাস্ত করা হবে না৷ এইভাবে পুলিশের সুনাম নষ্ট হতে দেওয়া হবে না৷'' বলেন জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস দেমেজিয়ের৷ তাঁর কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আইনমন্ত্রী হাইকো মাস জানান, ‘‘বিচার ও আইন চালানোর দায়িত্ব একমাত্র রাষ্ট্রের হাতে৷ স্বঘোষিত শারিয়া পুলিশের হাতে নয়৷ পাশাপাশি একটি বেআইনি বিচারালয় সহ্য করা হবে না৷''
এক্ষেত্রে আইনগত স্পষ্ট দিক নির্দেশনা নেই বলে ভুপার্টালের নিরাপত্তারক্ষা বাহিনী সমস্যায় পড়েছে৷ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সভা আইনভঙ্গ করায় তদন্ত করা হচ্ছে৷ ডিসকোথেক, গেমরুম বা সান স্টুডিওতে ঢোকার পথে বাধা দিলে সেটা নিগ্রহ বলে গণ্য করা হবে কিনা কিংবা শারিয়া লেখা ওয়েস্ট কোট পরা বেআইনি কিনা সেটাও একটা প্রশ্ন৷
শহরটিতে পুলিশের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ জনসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে সন্দেহজনক কিছু লক্ষ্য করলে জরুরি নম্বরে ফোন করতে৷ নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব একান্তই রাষ্ট্রের হাতে৷ আতঙ্ক জাগানো বা বিরক্ত করা সহ্য করা হবে না৷ বলেন ভুপার্টালের পুলিশ প্রেসিডেন্ট বির্গিটা রাডারমাখার৷
উল্লেখ্য, ইসলামি আইন-কানুনকে আরবি ভাষায় শারিয়া বলা হয়৷ কোরান ও হাদিসের ওপর ভিত্তি করেই চলে এই নিয়ম কানুন৷ পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জীবনযাপনের এক দিক নির্দেশনা এটি৷
আরবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ, ইপিডি, কেএনএ)