খতনার বৈধতা নিয়ে বিল অনুমোদন
১৩ ডিসেম্বর ২০১২গত মে মাসে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলের শহর কোলনের একটি আদালত অল্প বয়সি ছেলেদের শারীরিক ক্ষতির কথা উল্লেখ করে খতনা নিষিদ্ধ করে দেয়৷ তবে এই রায়ের পরপরই সারাদেশে খতনার পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনার ঝড় ওঠে৷ বিশেষ করে আদিকাল থেকে চলে আসা ইহুদি ও মুসলমানদের এই ধর্মীয় রীতি নিয়ে উভয় গোষ্ঠীর নেতারা সোচ্চার হন৷ কারণ কোলন আদালতের রায়ের পর জার্মানির চিকিৎসকরা খতনা করতে দ্বিধা করতেন এই ভয়ে যে, তাদেরকে হয়তো আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে৷
ফলে খতনা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শেষ পর্যন্ত জার্মান সংসদে পৌঁছে৷ জুলাই মাস থেকে সংসদে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়৷ অক্টোবর মাসে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভা খতনার বৈধতা নিয়ে একটি আইনের খসড়া পেশ করে৷ এরপর নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সংসদের উচ্চকক্ষ বুন্ডেসরাটে অনুমোদিত হয় এই আইনের খসড়া৷ আর বুধবার সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগেও বিপুল সংখ্যক ভোটে অনুমোদিত হলো খতনার বৈধতা সংক্রান্ত বিল৷ নতুন এই আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪৩৪ জন এবং বিপক্ষে ভোট দেন ১০০ জন সাংসদ৷
তবে নতুন এই আইনে বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এই কাজে দক্ষ চিকিৎসক কিংবা প্রশিক্ষিত পেশাদার ব্যক্তিই যেন শুধু খতনার কাজ করেন৷ এছাড়া ছোট শিশুটি যেন যথাসম্ভব স্বল্প মাত্রায় ব্যথা অনুভব করে সেদিকেও নজর দিতে হবে৷ ফলে খতনার সময়ে সাময়িকভাবে দেহের বিশেষ অংশ অবশ করে দেওয়া যেতে পারে৷ এছাড়া শিশুর স্বাস্থ্যহানির কোনো আশঙ্কা থাকলে খতনা দেওয়া যাবে না৷
এই আইনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে গিয়ে জার্মানির বিচার মন্ত্রী জাবিনে লয়েটহয়জার-শ্নারেনব্যার্গার বলেন, বিশ্বের কোনো দেশে খতনা করা নিষিদ্ধ নয়৷ সুতরাং আমাদের মতো আধুনিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ দেশে শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হতে পারে না৷ জার্মান সংসদে খতনা অনুমোদন করে নতুন আইন তৈরিতে খুশি ইহুদি ও মুসলমান সমাজ৷ একইসাথে জার্মানির ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স এটিকে ধর্মীয় স্বাধীনতার রক্ষাকবচ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন৷
এএইচ / জেডএইচ (রয়টার্স, এপি)