ফুটবল প্রধান পদত্যাগ করলেন
১০ নভেম্বর ২০১৫সেদিন সন্ধ্যাতেই ডয়চে ভেলের রিপোর্টার জেফারসন চেজ ফ্রাংকফুর্টে ডিএফবি-র কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে জানান যে, ফ্রেশফিল্ডস ব্রুকহাউস ডেরিঙ্গার নামধারী একটি আন্তর্জাতিক আইনজীবী সংস্থা ৬৭ লাখ ইউরোর পেমেন্ট নিয়ে যে ডিএফবি-বহির্ভূত তদন্ত চালাচ্ছে, তাতে কিছু নতুন তথ্য বেরিয়েছে৷ এবং সেই কারণেই নিয়ার্সবাখ পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন৷
মোট কথা, পুরো কেলেঙ্কারি ঐ টাকার অঙ্ক নিয়ে৷ জার্মানির প্রখ্যাত ‘ডেয়ার স্পিগেল' পত্রিকা প্রথমে কাহিনিটি ফাঁস করে৷ দৃশ্যত ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের জন্য জার্মানির অর্গানাইজিং কমিটি ফিফাকে ঐ টাকা প্রদান করে৷ এটি ২০০৫ সালের এপ্রিল মাসের ঘটনা৷ ঐ টাকা নাকি উদ্বোধনী প্রোগ্রামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয়েছিল – যদিও সে অনুষ্ঠান কোনোদিন সংঘটিত হয়নি৷ পরে জানা যায়, ঐ অর্থ নাকি আডিডাস কোম্পানির সাবেক প্রধান রব্যার্ট-লুইস ড্রেইফুসকে ফেরত দেওয়া হচ্ছিল – তবে ফিফার মাধ্যমে৷ কিন্তু কেন? এবং টাকাটা নেওয়াই বা হয়েছিল কেন?
সন্দেহ ও সেই সঙ্গে গুজব যে, ২০০৬ সালে জার্মানির ‘‘গ্রীষ্মের রূপকথা'', অর্থাৎ ফুটবল বিশ্বকাপ সংঘটিত হয় কেনা ভোটে; জার্মানি এই বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগই পায় এশিয়ার একাধিক ফুটবল ফেডারেশনের ভোট উৎক্রোচের মাধ্যমে কেনার ফলে৷ অর্থাৎ যে ৬৭ লাখ ইউরোর কথা হচ্ছে, সেটি ছিল এক ধরনের ‘স্লাস ফান্ড' বা ঘুসের তহবিল৷
কেলেঙ্কারির একটির পর একটি খুঁটিনাটি ফাঁস হচ্ছে আর নিয়ার্সবাখ ও ডিএফবি-র অন্যান্য কর্মকর্তারা তাতে জড়িয়ে পড়ছেন৷ নিয়ার্সবাখকে বিদায় নিতে হল৷ এরপর যে জার্মান ফুটবলের কিংবদন্তি ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ারকে নিয়েও টান পড়বে না, তারা কোনো নিশ্চয়তা নেই৷ জার্মান টেলিভিশনে এবং স্বভাবতই টুইটারে বেকেনবাউয়ারকে নিয়ে হাসিঠাট্টা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে৷
চিয়ারান ফাহি ছিলেন এপি সংবাদ সংস্থার ক্রীড়া সাংবাদিক৷ তিনি জার্মান টেলিভিশনের ‘এক্সট্রা ড্রাই' নামধারী একটি প্রোগ্রামে প্রদর্শিত একটি কার্টুন রিটুইট করেছেন৷ কার্টুনে নিয়ার্সবাখ বেকেনবাউয়ারকে জিগ্যেস করছেন, ‘আপনি কবে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন?' বেকেনবাউয়ার উত্তর দিচ্ছেন, ‘শিগগীরই৷ আগে শুধু কয়েকটা জিনিস ভুলে যেতে হবে৷'
ডিএফবি-র দুই ভাইস-প্রেসিডেন্ট রাইনার কখ এবং রাইনহার্ড রাউবাল আপাতত কাজকর্ম চালাবেন৷ নিয়ার্সবাখ স্বয়ং ফিফা ও উয়েফার কার্যনির্বাহী পরিষদে তাঁর আসন ছাড়ছেন না৷ কখ জানিয়েছেন, ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ কিভাবে জার্মানিতে এলো, ডিএফবি এবার সে ব্যাপারটা তলিয়ে দেখবে৷ সেই প্রসঙ্গে তিনি বেকেনবাউয়ারকে তিনি যা জানেন, তা জানানোর অনুরোধ করেছেন৷
রুশ কেলেঙ্কারি
একদিকে ক্রীড়াজগতের কর্মকর্তাদের নিয়ে কেলেঙ্কারি, অন্যদিকে ক্রীড়াবিদ ও রাষ্ট্র পর্যায়ে ডোপিং নিয়ে কেলেঙ্কারি – স্পষ্টতই খেলাধুলার জগতে আজ খেলার চেয়ে ধুলাই বেশি, বলে মনে হতে পারে৷ বিশ্ব ডোপিং প্রতিরোধী সংগঠন ওয়াডা-র একটি সুদীর্ঘ রিপোর্ট অনুযায়ী, রাশিয়ায় অ্যাথলিটরা সরকারি সাহায্য নিয়ে নিয়মিত ডোপিং করে থাকেন, বিশেষ করে ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ইভেন্টগুলিতে৷
প্রাথমিক রুশ প্রতিক্রিয়া হলো, ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করো; খবরের কাগজের প্রথম পৃষ্ঠায় স্থান দিও না৷ অপরদিকে ভয়: ‘ওরা কি আমাদের রিও কেড়ে নেবে?' রুশ ‘স্পোর্টস এক্সপ্রেস' পত্রিকার যে শীর্ষক৷ রিও বলতে রিও ডি জানিরোর অলিম্পিক, রাশিয়ার অ্যাথলিটরা যা থেকে বাদ পড়তে পারে, কারণ গোটা রাশিয়ান ফেডারেশনকেই সাস্পেন্ড করার কথা উঠেছে, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশ যার সপক্ষে৷
এসি/ডিজি (ডিপিএ, রয়টার্স, এএফপি, এপি)