জার্মান চ্যান্সেলর যেন ‘খালি হাতে’ কিয়েভে না যান
১৩ জুন ২০২২রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে ইউক্রেনের পক্ষে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে৷ সৈন্য ও মনোবলের অভাব না থাকলেও রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে ট্যাংকসহ ভারি অস্ত্র ও গোলাবারুদের অভাব বোধ করছে সে দেশ৷ বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক সামরিক সহায়তা পেলেও জার্মানির বিরুদ্ধে ইউক্রেনের ক্ষোভ প্রশমিত হচ্ছে না৷ প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ট্যাংক সরবরাহে ‘অযথা বিলম্ব' সম্পর্কে অধৈর্য্য হয়ে পড়ছেন কিয়েভের প্রশাসন৷
চলতি মাসেই জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অবশেষে কিয়েভ সফর করবেন বলে শোনা যাচ্ছে, যদিও সরকারি সূত্রে এখনো এমন কোনো পরিকল্পনার কথা জানানো হয়নি৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাগির সঙ্গে সম্ভাব্য এই যৌথ সফরে শলৎস যাতে খালি হাতে না পৌঁছান, এমন প্রত্যাশা বাড়ছে৷ জার্মানিতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি মেলনিক সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে বলেছেন, জার্মানি থেকে ভারি অস্ত্র না পেলে রাশিয়ার আরো অনেক বড় সামরিক যন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে ইউক্রেনের নিরীহ মানুষ ও সৈন্যদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব নয়৷ তাই কিয়েভে গিয়ে শলৎস আরো বেশি সামরিক সহায়তার ঘোষণা করবেন, ইউক্রেনের মানুষ এমনটাই আশা করছে৷ বিশেষ করে ‘লেপার্ড ১’ এবং ‘মার্ডার’ ট্যাংক অবিলম্বে পাঠানোর ডাক দেন মেলনিক৷ তার মতে, এই ট্যাংকগুলি পুরোপুরি প্রস্তুত৷
ইউক্রেন সংকট শুরু হবার পর থেকে জার্মানি ইউক্রেনকে ধাপে ধাপে কিছু অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করলেও তার আগে অনেক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে তুলতে হয়েছে৷ নানা কারণ দেখিয়ে সরবরাহের ক্ষেত্রেও বিলম্ব ঘটছে৷ মেলনিক বলেন, গত ৩রা মে থেকে জার্মানি ৬০ লাখ গোলাবারুদ সরবরাহ করলেও কোনো অস্ত্র পাঠায়নি৷ তাই তিনি জার্মান সরকারের কাছে আরও দ্রুত ও আরো বেশি সামরিক সরঞ্জামের আশা প্রকাশ করেন৷ ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার বিশাল সামরিক অভিযানের মোকাবিলা করতে সেই সহায়তার প্রয়োজন৷ উল্লেখ্য, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা শুরুর পরের তিন মাসে জার্মানি প্রায় ৩৫ কোটি ইউরো মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে৷ সে তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অনেক বেশি৷ ১লা জুন পর্যন্ত সে দেশ প্রায় ৪৬০ কোটি ডলার অংকের অস্ত্রশস্ত্র ইউক্রেনকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
ইউক্রেন পশ্চিমা জগতের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী প্রণালী সরবরাহের ডাক দিচ্ছে৷ রোববার রাতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসি়ডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি আধুনিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম চেয়েছেন৷ এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, বর্তমান সংকটের শুরু থেকে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে প্রায় ২,৬০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঘটেছে৷ অথচ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকলে এমন হামলা প্রতিহত করে মানুষের মূল্যবান প্রাণ বাঁচানো সম্ভব ছিল৷ শুধু জার্মানি নয়, সার্বিকভাবে পশ্চিমা বিশ্ব যথেষ্ট দ্রুত ও পর্যাপ্ত সামরিক সহায়তা দিচ্ছে না বলে ইউক্রেন ক্ষোভ প্রকাশ করছে৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)