জাপার কর্তৃত্ববাদী নীতির লাগাম টানতে চান কাদের
১৮ জুলাই ২০১৯দলের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলেন জি এম কাদের৷ তিনি জানান, দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে চান৷ তাঁর দাবি, নানা কারণে সংগঠন দুর্বল হয়ে গেছে৷ তাই সাংগঠনিক গতিশীলতা বাড়ানোর কাজটি দিয়েই শুরু করতে চান জিএম কাদের৷
‘রাজনীতি এখন অনেকটা ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে' জানিয়ে এটাকেই দেশের রাজনীতির সবচেয়ে নেতিবাচক দিক হিসেবে চিহ্নিত করেন কাদের৷ বলেন, ‘‘মানুষ এখানে (রাজনীতি) ইনভেস্ট করে, তার বিনিময়ে কিছু লাভ করবে সেই আশায় রাজনীতি করে৷ দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করা, দেশপ্রেম, দেশের জন্য ত্যাগ—এগুলোর যে মূল্যায়ন, তা প্রকৃত হচ্ছে না৷ টাকা পয়সা, অর্থ, শক্তি—এসবের মূল্যায়ন হচ্ছে৷''
এ ধারার বিপরীতে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছে পোষণ করেন দলটির নতুন চেয়ারম্যান৷ জাতীয় পার্টিকে এগিয়ে নিতে দলের সদস্যের মূল্যায়ন করা, ক্ষমতাকে তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি৷ দলে গণতান্ত্রিক চর্চাটা থাকলে তা বাস্তবায়ন সম্ভব বলেও মত তাঁর৷ বললেন, নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রণয়ন করা হবে, বাস্তবায়নও তাঁরাই করবে৷
জি এম কাদের মনে করেন, দলের ক্ষমতা একক ব্যক্তি বা শ্রেণির হাতে থাকলে মনোনয়ন বাণিজ্য, পদ-পদবী নিয়ে বাণিজ্য হয়৷ তাই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চান তিনি৷
বিরোধী দলের নেতা?
সংসদে কে হবেন বিরোধী দলের নেতা?—এমন প্রশ্নের উত্তরে জিএম কাদের বললেন, ‘‘দলীয় ফোরাম আলাপ আলোচনা করে ঠিক করা হবে৷'' তিনি জানান, ‘‘আগে আমার ভাবী এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি বেগম রওশন এরশাদ ছিলেন, উনার কাজের অভিজ্ঞতাও আছে৷ উনি এখনও দ্বিতীয় পজিশনে আছেন, কাজ করছেন৷ আমি মনে করি দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এটা হওয়া উচিত৷''
অন্তর্দ্বন্দ্ব
দলে কোনো কোন্দল আছে মনে করেন না জিএম কাদের৷ তাঁর কথা হলো, প্রতিযোগিতা থাকলে প্রত্যাশা থাকেই৷ প্রতিযোগিতা শেষ হলে সেটাও শেষ হয়ে যায়৷ ‘'নিজেদের মধ্যে বড় ধরনের কোনো দ্বিমত আছে মনে হয়নি‘‘—বলেও জানান নতুন জাপা চেয়ারম্যান৷
সম্বোধনে ‘স্যার'!
জি এম কাদের বলেন, ‘‘বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান তিনদলই নেতা কেন্দ্রিক হয়ে গেছে৷ নেতাই সর্বেসর্বা৷ এটার বড়ো ডিফেক্ট হলো, কোনো কারণে নেতা বিপদে পড়ে গেলে বা ধাক্কা পেলে, দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷''
তাই রাজনীতির এই সংস্কৃতি ভেঙে দিতে চান কাদের৷ তিনি বলেন, ‘‘স্যার বলা বা না বলা কোনো কথা নয়৷ কথা হলো নেতা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা থাকা উচিত, হি ইজ ওয়ান অব আস (তিনি আমাদের একজন)৷''
তাই সম্বোধনকে বড় করে দেখছেন না জাতীয় পার্টির নতুন কান্ডারি৷ তিনি জানান, ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কর্তৃত্ববাদী নীতি যেটা ছিল এতোদিন, সেটাকে আমি সীমিত করতে চাচ্ছি৷‘‘