1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জাতীয়তাবাদ যখন তুরুপের তাস

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৫ মার্চ ২০১৬

ভারতে জাতীয়তাবাদ ইস্যু এক রাজনৈতিক বিতর্কে মোড় নিচ্ছে৷ বিজেপি মনে করে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রবিরোধিতাকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না৷ সরকার, রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তিবিশেষের সমালোচনা করা যায়, কিন্তু রাষ্ট্রের নয়৷

https://p.dw.com/p/1IJcc
জেএনইউ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ
ছবি: Reuters/A. Mukherjee

প্রশ্ন হলো, দেশভক্তি নিয়ে বিজেপি রাতারাতি এমন মাতোয়ারা হয়ে উঠছে কেন? পাঁচটি রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিজেপি যেন মেতে উঠেছে দেশভক্তি ইস্যু নিয়ে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল৷ কারণ ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর, গত ১৫-১৬ মাসে বিজেপির ঝড় ক্রমশই স্তিমিত হয়ে আসছে৷ তার প্রমাণ বিহার বিধানসভার সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়৷ বিজেপির সভাপতি বুঝতে পেরেছেন, হিন্দুত্ববাদের গৈরিক ধ্বজা তুলে আর কাজ হবে না৷ অন্য এমন ইস্যুকে হাতিয়ার করতে হবে যা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটব্যাংককে নিজের দিকে টেনে রাখতে পারবে৷ সেটা কী? দেশভক্তির নামে অতি-জাতীয়তাবাদ৷ বিজেপি দেশভক্তিকে করতে চাইছে দলের তুরুপের তাস৷

‘‘সেটা করতে গিয়ে বাম-কংগ্রেসসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে জোটবদ্ধ হবার সুযোগ করে দিচ্ছে বিজেপি'', ডয়চে ভেলেকে বললেন প্রবীণ সাংবাদিক অমূল্য গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, ‘‘জেএনইউ কাণ্ডে পড়ুয়াদের প্রতি সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি৷ অন্যদিকে, বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপিকে ঠেলে দিচ্ছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদের দিকে৷স্মরণ করা যেতে পারে, ৯০-এর দশকে যেটা ছিল রাম মন্দির আন্দোলন, সেটা কার্যত ছিল সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে সমাজকে বিভাজিত করা৷ বলা বাহুল্য, জনগণ তা প্রত্যাখান করেছিল৷ বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর একসময় বিজেপি নেতা সুব্রামনিয়াম স্বামী কাশী ও মথুরার মসজিদ হিন্দুদের হাতে তুলে দেবার ডাকও দিয়েছেন৷ আর এবার বিজেপি দেশকে বিভাজিত করতে চাইছে অতি-জাতীয়তাবাদ এবং জাতীয়তাবাদ-বিরোধীদের মধ্যে৷ পরিকল্পিতভাবে আড়াল করতে চাইছে ধর্মীয় পরিচিতি৷

মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ২৬/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার মূল চক্রী হাফিজ সৈঈদকে টেনে জাতীয়তাবাদের তাস খেলতে চেয়েছেন৷ মাসখানেক আগে হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রোহিত ভেমুলাকে রাষ্ট্র বিরোধী তকমা দিয়েছেন৷ কারণ সন্ত্রাসী ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির প্রসঙ্গে সাধারণভাবে রোহিত মৃত্যুদণ্ড তুলে দেবার ডাক দিয়েছিলেন৷ এক সময়ে কমিউনিস্টরা বিভাজন রেখা টানতে চেয়েছিল বুর্জোয়া আর প্রলেতারিয়েতকে বিপ্রতীপ অবস্থানে রেখে৷ এই প্রসঙ্গে গত সোমবার বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে দলের সভাপতি অমিত শাহ মন্তব্য করেন, জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ডে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগানকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা বলে চালাতে চাওয়ায় কংগ্রেসসহ বামদলগুলির সমালোচনা করেন, এটাকে কখনই বরদাস্ত করা যায় না যেখানে ‘ভারত মাতা কি জয়' মন্ত্র নিয়ে বহু দেশভক্ত দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজের জীবন দিতেও কসুর করেনি৷ মনে করেন বিজেপির অপর এক শীর্ষ নেতা অরুণ জেটলি৷ ভারত শব্দবন্ধটি সংবিধানে আছে৷ অর্থাৎ সেটা অস্বীকার করা সংবিধান অবমাননা ছাড়া আর কী? তাহলে দেশভক্তি বা অতি-জাতীয়তাবাদের ধুয়ো তুলে বিজেপি কি তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসাধনে সফল হবে? আসন্ন বিধানসভা ভোটে সেটাই দেখার৷

জেএনইউ-তে বিক্ষোভ
‘জেএনইউ কাণ্ডে পড়ুয়াদের প্রতি সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি’ছবি: picture-alliance/AP Photo/T. Topgyal
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য