জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার
২১ আগস্ট ২০১৩বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, যুক্তরাষ্ট্রসহ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় বেশিরভাগ দেশেই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনেক মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে৷ অস্ট্রেলিয়া সরকার কর্তৃক প্রকাশিত ২০১১ সালের একটি রিপোর্টে দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ৩ লাখেরও বেশি সম্পদ হুমকির মুখে রয়েছে এবং ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ ২২৫ বিলিয়ন অস্ট্রেলিয় ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে৷
‘পেনিনসুলা প্রিন্সিপাল অন ক্লাইমেট ডিসপ্লেসমেন্ট' নামে নতুন যে নীতি করা হয়েছে, তাতে যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হচ্ছে, সেসব দেশের সরকারকে উদ্বাস্তু জনগণের সমস্যা সমাধানে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কিছু নীতি ঠিক করে দেয়া হয়েছে৷ সেইসাথে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের বাসস্থানের ব্যবস্থা এবং জীবিকা নির্বাহের উপায় ঠিক করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে৷ জেনেভাভিত্তিক এনজিও ‘ডিসপ্লেসমেন্ট সল্যুশান ইন্টারন্যাশনাল'-এর পরিচালক স্কট লিকি যিনি এই উদ্যোগটি নিয়েছেন বিশ্বাস করেন যে, এর ফলে পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব৷
তিনি আশা করছেন, এ সপ্তাহেই পেনিনসুলা প্রিন্সিপাল সব দেশ কর্তৃক অনুমোদিত হবে এবং বিশ্বের প্রতিটি দেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এটা নিয়ে কাজ করবে৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামীতে অন্তত ২০ কোটি মানুষ উদ্বাস্তু হবে৷ এ সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশ, পানামা, আলাস্কা, মালদ্বীপ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাগুলোর উপকূলে৷
পেনিনসুলা প্রিন্সিপাল গ্রুপে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের এনজিও ‘ইয়াং পাওয়ার ফর সোশ্যাল অ্যাকশান'-এর মো. আরিফুর রহমান৷ তাঁর আশা, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার লাখো মানুষ এ প্রিন্সিপালের মাধ্যমে সহায়তা পাবে৷
তিনি জানালেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশের সরকারই এই প্রিন্সিপাল গ্রহণ করবে এবং যারা প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাদের ঘর-বাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়েছে তাদের নতুন করে জীবন শুরু করার একটা সুযোগ মিলবে৷
হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক বনি ডচার্টির আশা, আন্তর্জাতিকভাবে প্রিন্সিপালটি একটি উপকরণ হিসেবে কাজ করবে, যা মানুষ সহজে গ্রহণ করবে৷ এমনকি যা নিয়ে সরকার, জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বাস্তুদের জন্য সঠিক কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করবে৷
আন্তর্জাতিক আইনের উপর ভিত্তি করেই পেনিনসুলা প্রিন্সিপালটা তৈরি করা হয়েছে৷ গত পাঁচ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে৷ এরপর প্রিন্সিপালটির খসড়ায় ইন্টারনেটে বহু মানুষের অভিমত গ্রহণ করে এটিকে চূড়ান্ত রূপ দেয়া হয়েছে৷
পার্থভিত্তিক আইনজীবী ডেভিড হডকিনসন যিনি এই প্রিন্সিপালটি তৈরি করতে সাহায্য করেছেন, জানালেন যে, এই প্রিন্সিপালটি সরকারকে সাহায্য করবে এই সমস্যা থেকে কাটিয়ে ওঠার উপায় দেখিয়ে দিতে৷
২০০৮ সালের পর থেকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উদ্বাস্তুদের অধিকারের প্রতি সোচ্চার হয়ে কাজ করে যাচ্ছে আন্তর্জাতিকবিভিন্ন সংগঠন৷ উদ্বাস্তুদের নতুন ভূমি এবং বাড়ি দেয়ার অধিকার রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছে তারা৷
এপিবি/ডিজি (ডিসপ্লেসমেন্ট সল্যুশান ইন্টারন্যাশনাল)