দায়িত্ব নেবে কে?
১৭ মে ২০১৩
আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশানস-এ গত বছরের ২৪শে নভেম্বর আগুন লাগার পর, ঢাকার মোহাম্মদপুরে স্মার্ট ফ্যাশানে আগুন লাগে চলতি বছরের ২৬শে জানুয়ারি৷ তাতে আটজন পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়৷ তাজরীন ফ্যাশানস বিজিএমইএ-র সদস্য হলেও স্মার্ট ফ্যাশানের সদস্য পদ নেই৷ তবুও তারা ফক্স অ্যান্ড স্কট এবং ইনডেক্স-এর মতো আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের পোশাক তৈরি করে দিত সাব কন্ট্রাক্টে৷ তার মানে হলো, বিজিএমইএ-র সদস্য বড় কোনো পোশাক কারাখানার পাওয়া কাজ তাদের দিয়েই করানো হতো৷ বলা বাহুল্য, এসব কারখানার অবস্থা আরো শোচনীয়৷ সেখানে কোনো মনিটরিং নেই, নেই কোনো চাপ৷
ঢাকায় এ ধরনের অনেক পোশাক কারখানা এখনও সক্রিয়৷ পূর্ব রামপুরার এ রকম একটি গার্মেন্টস-এর নাম টিএম গার্মেন্টস৷ ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি সরেজমিন গিয়ে দেখেন জারাজীর্ণ একটি ভবনের তিন তলায় মাত্র ১০০ জন শ্রমিক নিয়ে চলছে কারখানাটি৷ কারখানাটির নিরপত্তা, কাজের পরিবেশ কোনোভাবেই মানসম্পন্ন নয়৷ কারখানায় সেলাই মেশিনসহ যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে থাকেন শ্রমিকরা, তাও বহু পুরনো৷ তার ওপর সেখানে সর্বনিম্ন মজুরিও বাস্তবায়ন হয়না৷
সর্বনিম্ন মজুরি ৩,০০০ টাকা হলেও সুফিয়া নামের একজন পোশাক শ্রমিক জানান যে, তিনি নতুন বলে তাঁকে মাত্র ২,২০০ টাকা দেয়া হয়৷ আরো কয়েকজন জানান, তাঁদের ওভারটাইম করানো হলেও সে টাকা তাঁরা পান না ঠিকমতো৷ প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া না গেলেও, ফ্লোর সুপারভাইজার মিজানুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন৷ যদিও তিনি স্বীকার করেন যে, তারা সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করেন৷ তাদের সরাসরি কোনো ক্রেতা নেই৷
বিজিএমইএ-র সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, বিজিএমইএ-র সদস্য সাড়ে পাঁচ হাজারের মতো৷ এর বাইরে এক হাজারেরও বেশি পোশাক কারখানা আছে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে৷ তাদের দায়দায়িত্ব বিজিএমইএ নেবেনা৷ তারা সরকারকে জানিয়েছে যে, এসব কারখানা যেন সরকার বন্ধ করে দেয়৷ বিজিএমইএ-র সদস্যরাই তো এসব কারাখানাকে আবার কাজ দেয়৷ তাহলে দায়দায়িত্ব কিভাবে এড়ানো যাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পোশাক কারাখানা থাকলেও কাজ দেয়া হবে এটাই স্বাভাবিক৷ কিন্তু সরকার তাদের লাইসেন্স দেয় কিভাবে?
কেউ দায়িত্ব নিতে না চাইলেও এ সব কারখানায় খুবই কম খরচে পোশাক তৈরি হয়৷ তাই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়৷