ছবিতে আর্জেন্টিনা-জার্মানি প্রীতি ম্যাচ
জার্মানির জন্য ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দ বাড়ানোর সুযোগ৷ অন্যদিকে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ হারানো আর্জেন্টিনা মাঠে নেমেছিল প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞা নিয়ে৷ সেই ম্যাচে জার্মানদের ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছে আর্জেন্টিনা৷
বিশ্বকাপ ফাইনালের রি-ম্যাচ
রিও ডি জানেরোর ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ১-০ গোলে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে ভেসেছিল জার্মানি৷ মঙ্গলবার ড্যুসেলডর্ফের প্রীতি ম্যাচে অবশ্য আনন্দের স্মৃতি রোমন্থনের সুযোগই পায়নি তারা৷ কারণ শুরু থেকেই আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে মেসিবিহীন আর্জেন্টিনা৷
নতুনত্ব
ম্যাচে অনেকটাই নতুন চেহারার দল নিয়ে নেমেছিল জার্মানি৷ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক ফিলিম লাম অবসর নেয়ায় অধিনায়কের ‘আর্মব্যান্ড’ পরে ম্যাচ শুরু করেন গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার৷ দ্বিতীয়ার্ধে সেই সম্মান দেয়া হয় লুকাস পোডলস্কিকে৷ এ ম্যাচেই প্রথম দেখা গেল জার্মানির চার তারকাখচিত ‘ক্রেস্ট’৷ চারবার বিশ্বকাপ জয়ের প্রতীক হিসেবেই ক্রেস্টে রাখা হয়েছে চারটি তারা৷
সম্মাননা
বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেন ফিলিপ লাম, পেয়ার ম্যার্টেসাকার এবং মিরোস্লাভ ক্লোজে৷ হানসি ফ্লিক ছেড়ে দেন সহকারি কোচের দায়িত্ব৷ মঙ্গলবার ম্যাচ শুরুর আগে চারজনকেই সম্মান জানিয়েছে জার্মান ফুটবল ফেডারেশন (ডিএফবি)৷
দি মারিয়া-আগুয়েরো স্বমহিমায় উজ্জ্বল
দুই প্রান্তে দুই ম্যানচেস্টার তারকা৷ একদিকে রেয়াল মাদ্রিদ থেকে সদ্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেয়া দি মারিয়া, অন্য প্রান্তে ম্যানচেস্টার সিটির আগুয়েরো৷ এই দুই আর্জেন্টাইনের আক্রমণের মুখে বেসামাল হয়ে পড়ে জার্মানির অনভিজ্ঞ রক্ষণভাগ৷ ম্যাচের ২১তম মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা৷
ম্যাচ আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে
দি মারিয়া ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে৷ চোটের কারণে বিশ্বকাপ ফাইনাল মিস করেছিলেন ২৬ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ড৷ মেসির অনুপস্থিতিতে মঙ্গলবার সেই হতাশা কিছুটা ভুলেছেন বারবার জার্মান রক্ষণভাগ তছনছ করে৷ তাঁর সামনে বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডের লেফট ব্যাক এরিক ডুর্মকে রীতিমতো অসহায় লেগেছে৷ তাঁকে বোকা বানিয়েই ৪০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করান দি মারিয়া৷ তাঁর বাড়ানো বলে গোল করেন এরিক লামেলা৷
জার্মানির দুঃস্বপ্নের রাত
দ্বিতীয়ার্ধে নয়ারকে তুলে নিয়ে রোমান ভাইডেনফেলারকে গোলরক্ষার দায়িত্ব দেন কোচ ল্যোভ৷ তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি৷ ৪৭ মিনিটে আবার গোল৷ এবার স্কোরার ফেদেরিকো ফার্নান্দেস৷ তবে ঐ গোলের রূপকারও সেই দি মারিয়া৷ একটু পরে নিজে গোল করে জার্মানির কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে দেন তিনি৷
স্বান্তনাসূচক গোল
৪-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও স্বাগতিকরাই জিতবে – এমন স্বপ্ন বোধহয় জার্মানির কোনো অন্ধ সমর্থকও দেখেননি৷ তবে ব্যবধান কমিয়ে হারের লজ্জা কিছুটা হলেও কমাবে এ আশা নিশ্চয়ই করেছিলেন অনেকে৷ আন্দ্রে শ্যুর্লে আর মারিও গ্যোটসের গোল সেই স্বান্তনাই দিয়েছে তাঁদের৷
এবার স্কটল্যান্ডের অপেক্ষায়
মূলত রক্ষণভাগের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের কারণেই আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নাস্তানাবুদ হয়েছে জার্মানি৷ তবে চারবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের হতাশায় ডুবে থাকার সুযোগ নেই৷ আগামী রোববার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্ব শুরু করছে তারা৷ সেদিন জার্মানির প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড৷