নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ
২০ মার্চ ২০১৪প্রতিবেদনে বলা হয়, চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৯৮ জনের বার্ষিক আয় দুই লাখ টাকা বা এর চেয়ে কম৷ তবে এক কোটি টাকার বেশি আয় করেন পাঁচজন৷ আর ২৫৪ জন প্রার্থীর বার্ষিক আয় পাঁচ লাখ টাকার নীচে৷ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ৫৯ দশমিক ৬৩ শতাংশের পেশা ব্যবসা৷ সানজিদা হক জানান, ৬৩ জন প্রার্থী ঋণগ্রহীতা৷ তবে ৩১৬ জনের কোনো ঋণ নেই৷
সহিংসতার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন বলেন, ‘‘হতে পারে নির্বাচন কমিশন গা ছেড়ে দিয়েছে, না হয় নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা না নিতে বাধ্য করা হয়েছে৷ এ জন্য এসব ঘটনা ঘটেছে৷'' তাহলে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ৷ কারণ এসব নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের কাঁধেই৷ তারা তা সঠিকভাবে করতে পারেনি৷''
সংবাদ সম্মেলনের পর ডয়চে ভেলের সঙ্গে আলাপকালে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা ও কারচুপি বন্ধে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে৷ অনেক প্রার্থী ও প্রশাসনের অভিযোগের পরও ইসি কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ বরং তারা নীরব ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে৷ তাদের নীরব ভূমিকায় দেশবাসী উদ্বিগ্ন৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘সকল সংবাদ মাধ্যম যখন শিরোনাম করে বলছে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচন হয়েছে আর ইসি তখন বলে নির্বাচন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু হয়েছে – এরপরও কী আর বলার থাকে?''
সুজনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে ভোট জালিয়াতি রোধে সংবিধান ও রাষ্ট্র যথেষ্ট ক্ষমতা দিলেও কমিশন তা প্রয়োগ করছে না৷ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছে, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা করণীয় তা সবই করতে পারবে৷ এমনকি আইন ও বিধি-বিধানের সংযোজন করতে পারবে৷ কিন্তু গত তিন দফা উপজেলা নির্বাচনে ইসির ভূমিকা দেখে মনে হচ্ছে, সহিংসতা বন্ধে নির্বাচন কমিশন কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারছে না৷ নির্বাচনি সহিংসতা বন্ধে কমিশনের নিশ্চুপ ও নিরুত্তাপ ভূমিকা বোধগম্য নয়৷
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এক মাসের ছুটিতে যাওয়া পরিস্থিতিকে আরো ঘনীভূত করেছে৷ তাঁর মতে, চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে না পারলে দেশে নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে৷ আর এ পরিস্থিতিতে উগ্রবাদের বিস্তার ঘটাও অস্বাভাবিক নয়৷ তাই দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হলে কমিশনকে সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘এরশাদের আমলে তামাশার নির্বাচন হতো৷ গত কয়েকটি নির্বাচিত সরকারের আমলে সেখান থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা চললেও এবারের উপজেলা নির্বাচনে আমরা আবার সেই এরশাদের সময়ের দিকে ধাবিত হচ্ছি৷ এটা কারো কাম্য নয়৷''
এদিকে সুজনের সংবাদ সম্মেলনের পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমরা শুধু কথা নয়, কাজও করি৷ আমরা যদি কাজ না করতাম তা হলে সারা দেশে সুষ্ঠু ভোট হতো না৷'' তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা মনে করি না সহিংসতা বন্ধ করতে পারছি না৷ সহিংসতা বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি৷ আমরা যখন দেখি সহিংসতা বন্ধ হচ্ছে না, তখন আমরা ভোট স্থগিত করি৷'' তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচনকে আমরা ফেয়ার করতে চাই৷ ইসি-র পক্ষ থেকে আমরা যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি৷ পুলিশ, ব়্যাব, বিজিবি ও সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে৷ প্রমাণসাপেক্ষে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা বিধি অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেবো৷''