চেক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নবীকরণে সুদূর মাইক্রোনেশিয়ার আপত্তি
১৯ জানুয়ারি ২০১০অন্তত মাইক্রোনেশিয়ার পরিবেশ দপ্তরের তাই আশঙ্কা৷ এবং তারা লিখিতভাবে তাদের সেই আশঙ্কা জ্ঞাপন করেছে চেক সরকারের কাছে, এবং তা'ও একবার নয়, দু'দু'বার৷ মাইক্রোনেশিয়ার পরিবেশ দপ্তর চেক প্রজাতন্ত্রের প্রুনেরভে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির নবীকরণের খবর পায় দৃশ্যত গ্রীনপীস পরিবেশ সুরক্ষা সংগঠনের কাছ থেকে৷ ওদিকে চেক সরকার সবে প্রুনেরভ দুই প্রকল্পটির পরিবেশ সংক্রান্ত আন্তঃ-সীমান্ত প্রভাব যাচাই করছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন অনুযায়ী যা করতে হয়৷ কিন্তু আন্তঃ-সীমান্ত বলতে যে শুধু কাছের দেশ অস্ট্রিয়াই নয়, বহু দূরের দেশ মাইক্রোনেশিয়াকেও বোঝাতে পারে, এ-চিন্তাটা বোধহয় প্রাগের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তার মাথায় আসেনি৷ মাইক্রোনেশিয়া যে চেক প্রজাতন্ত্র থেকে ১৩,০০০ কিলোমিটার দূরে, শুধু তাই নয়, দুটি রাষ্ট্রের একের অপরের রাজধানীতে কোনো দূতাবাস পর্যন্ত নেই৷
প্রুনেরভ = মাইক্রোনেশিয়ার ৪০ গুণ দূষণ
কিন্তু মাইক্রোনেশিয়ার যুক্তি হল, প্রুনেরভ থেকে কার্বন নির্গমন মাইক্রোনেশিয়ার ভবিষ্যতের পক্ষে একটি বড় বিপদ সৃষ্টি করবে৷ বিশেষ করে যখন প্রুনেরভে লিগনাইট বা বাদামী কয়লা ব্যবহার করা হয়, যা কিনা সবচেয়ে বেশী কয়লা পুড়িয়ে এবং সবচেয়ে বেশী দূষণ সৃষ্টি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার উৎকৃষ্টতম বা নিকৃষ্টতম পন্থা৷ প্রুনেরভ চুল্লীটি বছরে সমগ্র মাইক্রোনেশিয়ার চেয়ে ৪০ গুণ বেশী কার্বন ডাইঅক্সাইড সৃষ্টি করে৷ তাই মাইক্রোনেশিয়ার সরকার চান যে, প্রুনেরভ দুই-তে যেন সর্বাধুনিক পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়৷ - জবাবে প্রুনেরভের মালিক সিইজেড সংস্থা জানিয়েছে যে, সেখানে বাজারের শ্রেষ্ঠ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং চেক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত এক বিশেষজ্ঞ নাকি তা পরীক্ষা করে দেখেছেন৷
কোপেনহেগেনের পরে
আসলে মাইক্রোনেশিয়ার গত ডিসেম্বরে এবং এই জানুয়ারিতে লেখা দু'টি চিঠি ওয়াকিবহাল মহলে এবং মিডিয়ায় গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে এই কারণে যে, মামলাটা যদি চেক আদালত অবধি গড়ায়, তবে তা একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনের নীতি প্রতিষ্ঠা করবে৷ এবং চেক প্রজাতন্ত্রের বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপরাপর দেশেও তার প্রভাব পড়বে৷ এক কথায়, চেক প্রজাতন্ত্রে একটি কারখানা পরিবেশ সঙ্গত কিনা, সেই বিবেচনায় সূদূর মাইক্রোনেশিয়াও সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়বে৷ - ব্যাপারটা অতোদূর গড়াবে কিনা, তা বলা শক্ত৷ তবে মাইক্রোনেশিয়ার এই চ্যালেঞ্জ গতমাসে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলনের হতাশার পর বিশ্বের ছোট দ্বীপরাজ্যগুলির সঙ্কটকে আবার বিশ্বের জনমানসে এনে ফেলবে৷
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম