চীনের বিরুদ্ধে 'গণহত্যা'র অভিযোগ
২০ জানুয়ারি ২০২১শাসনকালের শেষ দিনেও বিতর্ক তৈরি করল ট্রাম্প প্রশাসন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও চীনের বিরুদ্ধে 'গণহত্যা'র অভিযোগ আনলেন। তাঁর বক্তব্য, চীন উইঘুর মুসলিমদের গণহত্যা করছে। বাইডেনের টিম অবশ্য এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। ট্রাম্পের আমলে বেজিংয়ের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মঙ্গলবার পম্পেও-র মন্তব্য সেই কফিনে শেষ পেরেক বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।
এর আগেও উইঘুর মুসলিমদের উপর চীনের অত্যাচার নিয়ে সরব হয়েছে অ্যামেরিকা। শিনজিয়াং প্রদেশের বেশ কিছু প্রশাসনিক ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাঁরা অ্যামেরিকায় ঢুকতে পারবেন না। শুধু অ্যামেরিকা নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নও উইঘুর মুসলিমদের উপর চীনের অত্যাচারের প্রসঙ্গ একাধিকবার সামনে এনেছে। কিন্তু এই প্রথম 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করা হলো। পম্পেও বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে শিনজিয়াং প্রদেশে লাগাতার গণহত্যা চালাচ্ছে চীন। লাখ লাখ মানুষকে বন্দি করা হচ্ছে। তাঁদের ধর্মাচরণ করতে দেওয়া হচ্ছে না। জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শুধু উইঘুর নয়, আরো বেশ কিছু ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সঙ্গে একই আচরণ করা হচ্ছে। নাম না করলেও তিনি যে তিব্বতে বৌদ্ধদের সঙ্গে চীনের আচরণের কথা বলতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট।
করোনাকালে চীনেরসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সম্পর্ক সবচেয়ে খারাপ হয়। ট্রাম্প-পম্পেও-র চীনবিরোধী নীতি ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য বদলে দিচ্ছিল। অনেকরই ধারণা, বাইডেন ট্রাম্পের মতো কঠিন অবস্থান নেবেন না। তবে ট্রাম্পের নীতি থেকে তিনি একেবারে সরেও আসতে পারবেন না। চীন বিষয়ে যে কোনো অবস্থান নেওয়া সময়েই ট্রাম্পের নীতিগুলি সামনে চলে আসবে। বস্তুত, সে কারণেই পম্পেও সরকারি ভাবে চীনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ নথিভুক্ত করে রাখলেন বলে কোনো কোনো মহল মনে করছে। চীন নিয়ে বাইডেন নরম অবস্থান নিতে গেলে এই নথিটি সামনে চলে আসবে।
চীন অবশ্য পম্পেও-র বিবৃতি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। তবে অতীতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রশ্নের মুখে এ বিষয়ে মুখ খুলেছিল চীন। জানিয়েছিল, উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হয়, তা ঠিক নয়। যদিও চীন থেকে পালানো উইঘুর মুসলিমদের অনেকেই অত্যাচারের কথা বর্ণনা করেছেন।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)