বিশ্বের কারখানা
৩০ জুন ২০১২চীনকে বলা হয় ‘বিশ্বের কারখানা'৷ এমন কোনো জিনিস নেই যা তৈরি হয় না চীনের বিভিন্ন কারখানায়৷ নির্মাতারা যে দামে চায়, ঠিক সে দামের মধ্যেই পণ্য তৈরি করে দেয় চীন৷ ফলে চীনের অর্থনীতিতে বয়ে চলেছে সুবাতাস৷
প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করা চীনারা ভাগ্য গড়তে বড় বড় শহরে গিয়ে এসব কারখানায় কাজ করছেন৷ আর অল্প বেতনে তাদেরকে নিয়োগ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা৷ শুধু তাই নয়, মাঝেমধ্যে এই শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে৷ তাছাড়া লেখাপড়ার ক্ষেত্রে তাদের ছেলে-মেয়েদের সমান অধিকার দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে৷
এসবের দাবিতে শ্রমিকরা প্রায়ই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে থাকেন৷ কখনো কখনো অভিবাসী এসব শ্রমিকদের সঙ্গে স্থানীয়দেরও দ্বন্দ্ব দেখা দেয়৷
কাজের সন্ধানে গ্রামাঞ্চল থেকে যে পরিমাণ শ্রমিক শহরে পাড়ি জমাচ্ছেন, সে সংখ্যাটা বিশ্বের হিসেবে সর্বোচ্চ৷ এবং দিন দিন সেটা বাড়েই চলেছে৷ যেমন শাংহাইয়ে ২০০০ সালে অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৯০ লক্ষ৷ দশ বছর পর সে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৩০ লক্ষে৷
এসব অভিবাসী শ্রমিকের কারণে বড় বড় শহরগুলোয় বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে৷
এই শ্রমিকদের একটা বড় অংশ তরুণ৷ তারা মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশাপাশি একটু বিনোদনও চায়৷ এক জরিপে দেখা গেছে, তরুণ শ্রমিকদের অর্ধেকই তাদের একঘেঁয়ে কাজ নিয়ে খুশি নন৷ তারা মনে করছেন যে, তারা যে কাজ করছেন তার ভবিষ্যৎ ভালো নয়৷
এদিকে, চীনে বাসস্থান ও শিক্ষা সহ বিভিন্ন সরকারি সেবা পেতে প্রত্যেক নাগরিককে তাঁর নিজ গ্রামে বা অঞ্চলে নিবন্ধিত থাকতে হয়৷ এই নিয়মটা অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একেবারেই ভালো নয়৷ কেননা এর ফলে শ্রমিকরা নিজ অঞ্চল ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়ে কাজ করায়, তাদেরকে সেখানকার স্থানীয়দের তুলনায় বেশি মূল্যে বিভিন্ন সরকারি সেবা নিতে হচ্ছে৷
এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে দানা বাঁধছে রোষ৷ আর সেটা, যে কোনো সময় বড় বিক্ষোভে পরিণত হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
প্রতিবেদন: জন ব্লাউ / জেডএইচ
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ