1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চামড়া বিপর্যয় কেন?

২ আগস্ট ২০২০

এবার কোরবানিতে কমপক্ষে ২০ ভাগ কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়নি৷ বিক্রি হওয়া চামড়ার দামও ছিল কম৷ প্রতিটি গরুর চামড়ার সর্বোচ্চ বিক্রি হয়েছে ৬০০ টাকায়৷ আর ছাগলের চামড়ার দাম ছিল মাত্র ১০ টাকা৷

https://p.dw.com/p/3gHj6
ফাইল ছবিছবি: bdnews24/A. Al Momin

সরকার এবার এমনিতেই চামড়ার দাম কম ধরেছে৷ অন্যবারের চেয়ে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ২০ থেকে ২৯ শতাংশ কমিয়ে ধরা হয়েছে৷ বিশ্ব বাজারে চামড়ার চাহিদা কমে গেছে৷ অন্যদিকে গত বছরের ৭০০ কোটি টাকার চামড়া এখনো অবিক্রিত রয়ে গেছে৷ গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই চামড়া রপ্তানি বন্ধ আছে৷ সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ওয়েট ব্লু রপ্তানির অনুমতি দিলেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি৷

চমড়া কেনার জন্য ৬৮০ কোটি টাকার যে ঋণ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে কাঁচা চামড়া কেনার আড়তদারদের দেয়া হয়েছে মাত্র তিন কোটি টাকা৷ ট্যানারি মালিকরা তাদের ১৫০ কোটি টাকা বকেয়া রেখেছে বলেও দাবি করেছে তারা৷ যার কারণে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব হয়নি৷ পোস্তগোলার আড়তদার টিপু সুলতান বলেন, ‘‘বিক্রি না হওয়ায় এবার কমপক্ষে ২০ ভাগ চামড়া নষ্ট হয়েছে৷’’

সাখাওয়াত উল্লাহ

গত বছর বাংলাদেশে সব মিলিয়ে এক কোটি ১৫ লাখ গরু, ছাগল, মহিষ কোরবানি হয়েছে৷ এবার তার চেয়ে ৩৫-৪০ ভাগ কম হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তারপরও চামড়ার চাহিদা নেই৷ টিপু সুলতান বলেন, ‘‘আমাদের হাতে টাকা ছিল না, তাই তেমন কিনতে পারিনি৷ চাহিদা কম থাকায় চামড়ার দাম এতটা কমে গেছে৷''

কোরবানির সময়ই দেশের ৬০ ভাগ চামড়া সংগ্রহ করা হয়৷ বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসেসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ‘‘আমাদের গত বছরের চামড়ার ৬০ ভাগ এখনো বিক্রি করতে পারিনি৷ আমাদের চামড়ার প্রধান বাজার চীন৷ করোনার শুরুতে তারা চামড়া নেয়া বন্ধ করে দেয়৷ এরপর ইটালি, জাপান ও কোরিয়াতেও রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়৷ আর এখন চীনে করোনা কমে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্র চীনের চামড়াজাত পণ্য নিচ্ছে না৷’’

করোনার কারণে চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানিও কমে গেছে৷ সিপিডি'র অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, ‘‘বাংলাদেশের চামড়া শিল্প এখন ২৮ ভাগ নেগেটিভ প্রবৃদ্ধির শিকার৷ বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সরকারকে ওয়েট ব্লু রপ্তানির অনুমতি দিতে বলেছিলাম৷ সরকার শেষ পর্যন্ত সেই অনুমতি দিয়েছে কিন্তু সময়মত না দেয়ায় তার ফল কিন্তু কোরবানির কাঁচা চামড়ায় পাওয়া যায়নি৷ ভারত হয়তো আমাদের ওয়েট ব্লুর বড় বাজার হতে পারে৷ কিন্তু তার জন্য তো আগাম প্রস্তুতির দরকার ছিল৷’’

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

এই অর্থনীতিবদ মনে করেন, গতবারের তুলনায় এবার চামড়ার দাম কমানো ভাল সিদ্ধান্ত ছিল না৷ কম দামের কারণেই অনেক চামড়া নষ্ট হয়েছে৷ সরকার দাম কমানোয় আড়তদাররা আরো কমিয়ে দিয়েছে৷ চামড়ার সরবরাহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা না থাকায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে বলে জানান তিনি৷

চামড়ার পর বাংলাদেশে এবার কোরবানিতে অবিক্রিত পশু নিয়ে আরেকটি সংকট সৃষ্টি হতে পারে৷ ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ করার পর বাংলাদেশ দেশীয় গরুতে স্বয়ংসম্পূর্ন হয়েছে৷ ৭০ হাজার খামারি আছেন যারা শুধু কোরবানিতে বিক্রি করার জন্য গরু পালন করেন৷ তাদের ৪০ ভাগের মত গরু এবার বিক্রি হয়নি৷ ফলে এই গরু নিয়ে তারা সংকটে আছেন৷ তাই বাংলাদেশের গরু রপ্তানির জন্যও বাজার খোঁজা উচিত বলে মনে করেন ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান