চাঁদের উপরিভাগে গবেষণা চালাচ্ছে ভারতের চন্দ্রযান
২১ নভেম্বর ২০০৮সেই ছোটবেলা থেকেই চাঁদের সঙ্গে মানুষের সখ্য৷ চাঁদের বুড়ির গল্প আর চাঁদ মামার ঘুম পাড়ানি গান নিয়ে বেড়ে ওঠা৷ জীবনের নানা স্তরেও আসে অমাবস্যা আর পূর্ণিমার তুলনা৷ আর সে কারণেই হয়তো মানুষের চন্দ্র জয়ের নেশা সেই আদিকাল থেকে৷ বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির কল্যাণে অবশেষে চাঁদ জয় করে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালো তত্কালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন৷ ১৯৫৯ সালে প্রথমবারের মতো চাঁদে অভিযান চালান রুশ বিজ্ঞানীরা৷ তাঁদের মহাকাশ যান লুনা-১ মধ্যাকর্ষণ শক্তি পেরিয়ে চাঁদের কাছাকাছি পৌঁছায়৷ অবশেষে ১৯৬৬ সালে পৃথিবী থেকে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪শ ৩ কিলোমিটার দূরে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে সোভিয়েত খেয়াযান লুনা-৯৷ তবে এসবই ছিল মানুষবিহীন অভিযান৷
অবশেষে আসে মানুষের চন্দ্র বিজয়ের সেই যুগান্তকারী দিন৷ চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রাখে মানুষ৷ ১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার খেয়াযান অ্যাপোলো-১১-য় চড়ে চাঁদে পৌঁছান নভোচারীরা৷ চাঁদের বুকে অবতরণ করে ইতিহাস গড়েন মার্কিন নভোচারী নিল আর্মস্ট্রং৷ এর কিছু সময় পরই চাঁদে পা রাখেন সহযাত্রী রুশ নভোচারী বাজ অলড্রিন৷
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের পর একে একে চাঁদে অভিযান চালায় জাপান, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ইএসএ, চীন৷ চন্দ্র অভিযানে নেমে এবার ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালো ভারতও৷ গেলো অক্টোবরে চন্দ্রযান-১ নামে চাঁদে প্রথমবারের মতো মানুষবিহীন মিশন পাঠিয়েছে ভারত৷ ১৪ই নভেম্বর চন্দ্রযান থেকে পাঠানো একটি যন্ত্র চাঁদের মাটিতে গেঁথে দিয়েছে ভারতের পতাকা৷ আর এর মাধ্যমেই সফল হয়েছে ভারতের ৪৫ বছরের চন্দ্র সাধনা৷ ভারত তো বটেই গোটা উপমহাদেশেই বয়ে যায় আনন্দের বন্যা৷ চাঁদের উপরিভাগে খনিজ, রাসায়নিক পদার্থ এবং চাঁদের ভূ-তাত্ত্বিক গঠন নিয়ে গবেষণার জন্যই চন্দ্রযানের দুবছরের এই অভিযান৷ চাঁদের ১শ কিলোমিটার উপরে থেকে একে প্রদক্ষিণ করে বিভিন্ন ছবি তুলবে চন্দ্রযান৷ ২০১২ সালে দ্বিতীয় অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো৷ শুধু চাঁদ নয়, মঙ্গল এবং শুক্র গ্রহেও বছর চারেকের মধ্যেই অভিযান চালাবে ভারত৷