1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ঘরে যুদ্ধ, বাইরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন সুদানিদের

জন ডিওর্ডেন/এআই ৩০ অক্টোবর ২০২৪

গৃহযুদ্ধের কারণে বিপর্যস্ত সুদান৷ তা সত্ত্বেও সে দেশের জাতীয় ফুটবল দল চমৎকার সব ফলাফল অর্জন করছে৷ আফ্রিকান কাপ ২০২৫ এবং বিশ্বকাপ ২০২৬-এর বাছাই পর্ব অতিক্রমের সম্ভাবনা তৈরি করেছে দলটি৷

https://p.dw.com/p/4mPVD
বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখছে যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানের জাতীয় দল৷
সুদানের জাতীয় দলছবি: Kenzo Tribouillard/AFP/Getty Images

সুদানে ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া ভয়ঙ্কর গৃহযুদ্ধে এখনো থামেনি৷ সুদানি আর্মি এবং রেড সাপোর্ট ফোর্সেস মিলিটিয়ার মধ্যে যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে৷

ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গৃহযুদ্ধে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যদিও কারো কারো হিসেবে সংখ্যাটি দেড় লাখ৷ পাঁচ কোটি জনসংখ্যার দেশটির অর্ধেকের মতো মানুষের এখন মানবিক সহায়তা প্রয়োজন৷ এক কোটি বিশ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন৷

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় সুদানের সেনাবাহিনী

সুদানে মৃত্যু, ধ্বংস, ক্ষুধা, রোগবালাই আর লুটতরাজের এই পরিস্থিতির মধ্যে ফুটবল নিশ্চয়ই গুরুত্ব পাচ্ছে না৷ দেশটির জাতীয় দলের পক্ষেও গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব নয়৷ 

সুদানি জাতীয় দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় আব্দেল রহমান কুকো বলেন, ‘‘দল এবং অন্য সবকিছুর উপর যুদ্ধের তীব্র প্রভাব রয়েছে৷ খেলোয়াড়রা প্রতিদিন তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন কারণ পরিস্থিতি যেকোনো মুহূর্তে বদলে যেতে পারে৷''

ফিফা ব়্যাংকিংয়ে ১২০ নম্বর অবস্থানে থাকা দেশটির খেলোয়াড়দের মধ্যে গৃহযুদ্ধ নিয়ে তাই উদ্বেগ রয়েছে৷ একইসঙ্গে এই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যেও ভালো কিছু করে দেখানোর এক উৎসাহও অনুভব করছেন তারা৷

কুকো বলেন, ‘‘প্রতিটি খেলায় যাওয়ার সময় আপনি এটা অনুভব করেন যে আপনি শুধু নিজের জন্য খেলছেন না বরং পুরো দেশ আপনার সাফল্যের অপেক্ষায় রয়েছে৷ আমরা অনেক উচ্ছ্বাস নিয়ে প্রতিটি খেলায় অংশ নেই কারণ আমরা জানি যে আমরা আমাদের দেশকে সন্তুষ্ট করতে পারি৷ চাপ অনেক কিন্তু এই চাপ আমাদের মধ্যে উৎসাহ হিসেবে কাজ করে৷'' 

অক্টোবরে সুদান আফ্রিকান কাপ অফ নেশনস (এফকন)-এর বাছাই পর্বে ব্যাক-টু-ব্যাক ঘানার মুখোমুখি হয়েছে৷ আক্রায় আফ্রিকার অন্যতম শক্তিশালী দলটির সঙ্গে ০-০ ড্র করলেও ফিরতি ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে সুদান৷ নিরাপত্তার কারণে খেলাটি সুদানের রাজধানী খার্তুমে আয়োজন সম্ভব হয়নি৷ লিবিয়ায় আয়োজন করা হয়েছিল৷

কুকো বলেন, ‘‘নিজের দেশে খেতে পারলে শতভাগ ভালো হতো৷ কে নিজের দেশের মানুষ এবং পরিবারের সামনে খেলতে চাইবে না? এরচেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না৷ এটা অবশ্যই এক বড় সুবিধা যা আমাদের এই মুহূর্তে নেই৷''

ঘানার বিপক্ষে জয়ের কারণে এফকনের বাছাই পর্বে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সুদান৷ আগামী দুটি খেলায় দুই পয়েন্ট অর্জন করতে পারলেই বাছাই পর্ব উৎরাতে পারবে দলটি৷ আর সেটা হবে গত ৪৯ বছরের মধ্যে এফকনে সুদানের চতুর্থ অংশগ্রহণ৷

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও চার খেলায় দশপয়েন্ট নিয়ে ভালো অবস্থানে আছে ইগলরা৷ মহাদেশটির অন্যতম শক্তিশালী দল সেনেগালের চেয়েও দুই পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে সুদান৷

২০২৬ সালে উত্তর আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে যেতে হলেও সুদানিদের এখনো অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে, তবে তাদের সমর্থকরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে সেই পথ অতিক্রম সম্ভব হতে পারে৷ অতীতে কখনোই বিশ্বকাপ খেলেনি সুদান৷