1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গ্রিনল্যান্ডের ওঝা

ইয়র্গ সাইবল্ট/এসি১ মার্চ ২০১৬

গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলছে, মধ্যরাত্রির সূর্যের আলোকে৷ আর এক বৃদ্ধ ওঝা দূরদেশ থেকে আগত অতিথিদের বোঝাচ্ছেন, আগামীতে কী বিপর্যয় আসতে পারে৷ এটা ব্যবসা না আন্তরিক আবেগ, সেটা কে বলবে?

https://p.dw.com/p/1I4Ag
Bildergalerie Inuits Fischfang Einfuhrverbot Robbenprodukte EU
ছবি: picture-alliance/dpa

গলছে বরফ, আসছে বিপর্যয়

সামনে হিমশীতল তুষারের প্রান্তর, যার নাম হিমবাহ, যা দেখতে কয়েক ঘণ্টা ব্যাপি এই পদযাত্রা৷ যাত্রীরা সবাই নিশ্চুপ৷ এমনকি খাওয়াদাওয়াও বন্ধ৷ লক্ষ্য একটাই: মস্তিষ্কের মধ্যে যে চিন্তার চক্রটা অনবরত ঘুরে চলে, সেটিকে থামানো, অন্তত তার গতিবেগ কমানো৷ গ্রিনল্যান্ডের ওঝা আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক-এর মতে, ‘‘অধিকাংশ মানুষের প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচে গেছে৷ একদিন আমাদের সবাইকে শিখতে হবে, কী করে শুধু আমরা যা ভাবছি আর আমরা যা বোধ করছি, তাই নিয়ে আমরা একা থাকতে পারি৷ কিন্তু যেহেতু আমরা মানুষ, সেহেতু আমাদের চিন্তাভাবনাগুলোও খুব শক্তিশালী৷''

টুরের আরেকটা হাইপয়েন্ট হলো গ্রিনল্যান্ডের মানুষরা যাকে বলেন ‘বিগ আইস' – বিরাট বরফ৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গ্রিনল্যান্ডের বরফের ঢাকা এমনভাবে কমে এসেছে, যা সত্যিই নাটকীয়৷ আঙ্গানগাক যা নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তিত৷ তাঁর জাতির মানুষদের হয়ে তিনি দশকের পর দশক জাতিসংঘে কথা বলেছেন – তবে লাভ কিছুই হয়নি৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বলেন, ‘‘মানবজাতি হল এক কমবয়সি ছেলের মতো৷ কাল কী হবে, তা নিয়ে ভাবে না৷ আজ কী আছে, শুধু তাই নিয়েই ব্যস্ত৷ যখন দেখি মানুষজন মনোযোগ দিতে ভুলে গেছে, তখন দুঃখ লাগে৷ ওরা আর শুনতে জানে না৷ কিন্তু এখানে ওরা শোনে; আর শুনতে শুরু করলে, ওরা বদলায়ও বটে৷ কিন্তু এখন বড্ড দেরি হয়ে গেছে৷ বিগ আইস গলে যাবে, তোমার জীবদ্দশাতেই৷ বড় দেরি হয়ে গেছে৷ বিপর্যয় আসছে, এমন বিপর্যয়, যা তুমি-আমি কল্পনাও করতে পারব না৷''

অশনি সংকেত

বরফ কীভাবে গলছে, সেটা স্বচক্ষে দেখা এই টুরের বহু অংশগ্রহণকারীর পক্ষে সবচেয়ে আবেগপূর্ণ মুহূর্ত – যা তাদের ভাবিয়েও তুলেছে৷ মার্কিন থেরাপিস্ট শ্যানিন ডক্রে জানালেন, ‘‘আমি প্রায় কেঁদে ফেলেছিলাম৷ এই ভেঙে পড়ার শব্দ, বরফের পাহাড় যখন ভেঙে পড়ে আর তার আওয়াজটা শুনতে পাওয়া যায়... যেন যুদ্ধ চলেছে, যেন বাজ পড়ছে, কিন্তু আরো গভীর, শক্তিশালী, মায়াবি... আমি অনুভব করতে পেরেছি৷'' ডাচ থেরাপিস্ট মিরান্ডা স্টকমানস বলেন, ‘‘আমরা পৃথিবীটাকে নিয়ে কী করছি, সে বিষয়ে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত, বলে আমি মনে করি৷ আমরা কী নিচ্ছি, আমরা যে বড় বেশি নিচ্ছি, আমাদের যা প্রয়োজন, তার চেয়ে বেশিই নিচ্ছি, এই সব৷ আমরা যত সচেতন হব, ততই আমরা আরো বেশি যত্ন ও শ্রদ্ধা নিয়ে এই সম্পদ ভোগ করতে পারব৷'' জার্মানি থেকে এসেছেন মাটিয়াস প্ল্যোনৎস্কে, তিনি বলেন, ‘‘দেখে ভয় লাগে আর নিজেকে দায়ী বলে মনে হয়৷''

এই ধরনের টুরের সমালোচকরা বলেন, এ এক ধরনের ব্যবসা; একটু অন্য ধরনের অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপ ছাড়া আর কিছু নয়৷ তার সঙ্গে কিছু উদ্ভুটে বিশ্বদর্শন মেশানো আছে৷ আঙ্গানগাক ও তাঁর টুরের অংশগ্রহণকারীরা অবশ্য সেটা মানেন না৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বলেন, ‘‘আমি লোকের পকেট থেকে টাকা বার করার জন্য এখানে আসিনি৷ আমি এখানে এসেছি তাদের কিছু দেবার জন্য৷

আসতে অবশ্যই টাকা লাগে৷ এই ক্যাম্প বানাতে টাকা লাগে৷ তার জন্য টাকা দিতে হয়েছে৷'' মার্কিন থেরাপিস্ট শ্যানিন ডক্রে-ও বলেন, ‘‘এটা কি আধ্যাত্মিক ব্যাপারস্যাপার দেখিয়ে পয়সা করার একটা পন্থা? আমি আমার মনকে ভালোভাবে চিনি আর তফাৎটাও জানি৷''

মধ্যরাত্রির সূর্যের আলোকে বেশ কয়েক ঘণ্টা হেঁটে পাহাড়ে উঠতে হয় – এই পাহাড়ে ওঠাটাই সবচেয়ে কষ্টকর৷ তবুও কেউ হাল ছাড়েন না, পিছিয়ে থাকেন না৷ এইজন্যেই তো এরা এখানে এসেছেন৷ কারণ আজ রাতে প্রকৃতির এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখতে পাওয়া যাবে৷ আঙ্গানগাক আঙ্গাককোরসুয়াক বললেন, ‘‘আপনারা এনার্জিটা অনুভব করতে পারছেন কিনা জানিনা৷ এদিকে মাঝরাতের সূর্য – ওদিকে পূর্ণিমার চাঁদ৷ একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান