‘হোপ ফর গ্যামি'
৬ আগস্ট ২০১৪অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে গ্যামির বাবা-মা থাকেন৷ ঐ দম্পতিদের নাম প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম৷ তারা বলছে, শিশুটির বাবার নাম ডেভিড ফার্নেল এবং মায়ের নাম ওয়েনডি ফার্নেল৷ স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে, ডেভিড নাকি শাস্তি পাওয়া শিশু যৌন হয়রানির অপরাধী৷
মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার একটি স্থানীয় পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে ডেভিড ও ওয়েনডি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘গ্যামি জন্মানোর সময় যে চিকিৎসক সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনি দ্বিতীয় সন্তানের কথা তাঁদের জানাননি৷ তবে যাঁর গর্ভে গ্যামি জন্মেছেন, সেই মা পাত্তারামোন চানবুয়া বলছেন, ‘‘গ্যামি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত বলে তার বাবা-মা ছেলেকে ফেলে সুস্থ মেয়েকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে যান৷''
আদালতের নথিপত্র থেকে সাংবাদিকরা জেনেছেন যে, ডেভিড পার্নেল ১০ বছরের কম বয়সি একটি মেয়ে এবং ১৩ বছরের একটি শিশুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দু'বার জেল খেটেছেন৷ আদালতে ঐ মামলা দুটি চলার সময় ডেভিড তাঁর অপরাধ স্বীকার করে বলেছিল, সে একজন ভালো মানুষ এবং মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে৷
পাত্তারামোনের কাছে সাংবাদিকরা ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি ভীষণ মর্মাহত৷ গ্যামির বাবার অস্বাভাবিক আচরণে আমি ভীত এবং যে কোনো অবস্থায় আমার কন্যা সন্তানকে ফেরত চাই৷'' তাঁর আশঙ্কা শিশু কন্যাটিও ঐ ব্যক্তির লালসার শিকার হতে পারে৷ এদিকে, থাই সরকার ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছে৷
অস্ট্রেলিয়ার ফার্নেল দম্পতি থাইল্যান্ডের নারী পাত্তারামোনের গর্ভ ভাড়া নিয়েছিলেন৷ ‘সারোগেট এজেন্সির' মাধ্যমে ১৪, ৯০০ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ঐ গর্ভ ভাড়া নিয়েছিলেন তাঁরা৷ গর্ভধারণের পর পরীক্ষা করে বাবা-মা জানতে পেরেছিলেন যে, গর্ভে জমজ সন্তান বেড়ে উঠছে এবং দুই বাচ্চার একটির ‘ডাউন সিনড্রম' রয়েছে৷ যে দম্পতির সন্তান তিনি গর্ভে ধারন করেছেন, তাঁদের কখনো দেখেননি পাত্তারামোন৷
‘ডাউন সিনড্রম' হলে শিশুদের মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ঠিকভাবে হয় না৷ ফলে তারা বড় হলেও তাদের বুদ্ধির বৃদ্ধি হয় শিশুদের সমপরিমাণ৷ এছাড়া আরো অনেক শারীরিক সমস্যা থাকে৷
গত বছরের ডিসেম্বরে জমজ সন্তানের জন্ম দেন পাত্তারামোন৷ এরপর শিশুদের ‘বায়োলজিকাল' বাবা-মা থাইল্যান্ডে গিয়ে গ্যামিকে ফেলে সুস্থ মেয়ে শিশুটিকে নিয়ে দেশে ফিরে যান৷ থাইল্যান্ডে পাত্তারামোনের কাছে থেকে যায় গ্যামি৷ তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন৷ তাই তার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানানো হয় ইন্টারনেটে৷ ‘হোপ ফর গ্যামি' ক্যাম্পেইনের আওতায় দুই লাখ ৩৪ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি অর্থ সংগ্রহ হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই৷ বায়োলজিকাল বাবা-মা দায়িত্ব না নিলেও গোটা বিশ্বের অসংখ্য মানুষ এখন গ্যামির পাশে রয়েছেন৷
বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে গ্যামি৷ পাত্তারামোন চানবুয়া জানিয়েছেন গ্যামিকে নিজের সন্তানের মতোই বড় করবেন তিনি৷
এপিবি/ডিজি (এএফপি, ডিপিএ)