1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গৃহশিক্ষক আসছেন ল্যাপটপে!

ক্রিস্টিয়ান প্রিসেলিউস/এসি১৯ এপ্রিল ২০১৪

কম্পিউটার বা অনলাইনের নাম শুনলেই যে সব বাবা-মা চটে যান, তাঁদের জন্য আশার খবর: কম্পিউটার এবার শিশুশিক্ষাতেও চালু হচ্ছে৷ অনলাইন ভিডিও টিউশনি শুরু করেছেন বার্লিনের এক বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্র৷

https://p.dw.com/p/1BkbG
ছবি: Fotolia/Peter Atkins

ভিডিও-র মাধ্যমে শিক্ষা

কম্পিউটার থেকেই আসছে কণ্ঠ:

‘‘আমার নাম নুমসি৷ আমি আজ তোমাদের ইতিহাস থেকে একটা কাহিনি শোনাবো, সিজার অগাস্টাসের কাহিনি, রোমান সাম্রাজ্য যখন ধ্বংস হতে চলেছে৷''

লুকাস ড্যোলিং ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র৷ শিক্ষকদের মতে, এবার তার রোমান সাম্রাজ্য সম্পর্কে কিছু জানার সময় হয়েছে৷ ভাগ্য ভালো, পড়ার বিষয় আজকাল অনলাইনেই পাওয়া যায়৷ লুকাস বলে: ‘‘বইতে কিছু পড়ার আগে ফিল্মে সেটা দেখে নিলে, বিষয়টা কিছুটা সহজ হয়ে যায়৷ তাতে বুঝতে সুবিধে হয়, কেননা বিষয়টা সম্পর্কে কিছু-কিছু জানা থাকে৷''

অনলাইন টিউশনের ফি মাসে ১৫ ইউরো৷ লুকাসের মায়ের তাতে আপত্তি নেই, কেননা লুকাস এ ভাবে স্কুলের পড়া আরো ভালো বুঝতে পারে বলে তাঁর ধারণা৷

বার্লিনের ফ্রিডরিশহাইন এলাকার একটি বাড়ির ছাদের ঘরে এই সব ভিডিও তৈরি করা হয়৷ তাতে থাকে নানা কমিক চরিত্র, কমিকের মতোই স্পিচ বাবল্-এর মধ্যে হাতে লেখা সংলাপ, সেই সঙ্গে রংচঙে সব ছবি৷ এ সব দিয়ে ফিল্ম তৈরি হয়৷

‘সোফাটিউটর'

সোফাটিউটর সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন স্টেফান বায়ার, বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ছাত্র৷ বিভিন্ন বিষয়ে টিউশনের এই সব ভিডিও ছবি তৈরি করতে শুরু করেন ২০০৮ সালে৷ আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দশ হাজার ফিল্মে! যা কিনা প্রতি মাসে প্রায় ৬০ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর কাজে লাগে৷ বায়ার বলেন: ‘‘আমি কী লিখছি, ক্যামেরা তার ছবি তুলছে৷ আমি কথাও বলছি৷ কাজেই যে দেখছে, সে বিষয়টির উপর পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে পারছে৷ আজও সোফাটিউটরের ভিডিওগুলোতে বহু উপাদান থাকে, যেগুলো হাতে লেখা কিংবা হাতে আঁকা কিংবা হাতে তৈরি৷ আমরা কাগজের তৈরি পুতুল ব্যবহার করে থাকি৷ আজও আমাদের ভিডিওগুলোতে হাতের লেখার একটা বড় ভূমিকা আছে৷''

সম্পাদক আর শিক্ষকরা প্রথমে একত্রে স্কুলের পাঠক্রম নিয়ে আলোচনা করেন – যা থেকে তৈরি হয় ভিডিও ফিল্মগুলির চিত্রনাট্য৷ প্রতি সপ্তাহে একশো কর্মী আলেচনায় বসেন৷ এঁরা হলেন গ্র্যাফিক আর্টিস্ট, ওয়েব ডিজাইনার কিংবা তথ্য প্রযুক্তির লোক৷

‘কমিক চরিত্রেরা অঙ্ক শেখায়'

স্টেফান বায়ারের কাছে কল্পনাশক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ যে কারণে সোফাটিউটিরের ভিডিও-তে কমিক চরিত্ররা অঙ্ক শেখায়৷ ছাত্র-ছাত্রীদের কতটা প্রগতি হলো, তা পরিমাপ করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে৷ তার পরেও প্রশ্ন থাকলে, অনলাইন চ্যাটে তা পেশ করা যায়৷ গ্র্যাফিক বিভাগে নানা ধরণের কাল্পনিক চরিত্র সৃষ্টি করা হয়৷ এখানে যাঁরা কাজ করেন, তাদের সকলেরই বিশ্বাস যে ভবিষ্যতে অনলাইনের মাধ্যমেই স্কুলের পড়াশুনো চলবে৷

বার্লিনের হ্যার্মান নোল স্কুলে স্টেফান বায়ারের টিউশন পদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে৷ এটা একটা মডেল প্রকল্প৷ ক্লাস সিক্সের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসে পড়ানোর জন্য সোফাটিউটরের অনলাইন মালমশলা ব্যবহার করছেন৷

অধ্যক্ষা ইলোনা ব্যারনসডরফ বলেন: ‘‘আমাদের প্রাথমিক অভিজ্ঞতা হলো যে, ভিডিওগুলো ক্লাসের পড়াকে অসাধারণ মজার করে তোলে; ভিডিও-র মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পাঠ্য বিষয়টি নতুন করে সাজাতে ও পেশ করতে পারেন এবং আমার কাছে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো – ছাত্র-ছাত্রীরা বিষয়টির সঙ্গে একবার পরিচিত হয়ে যাবার পর, ভিডিও-র মাধ্যমে নিজেরাই একা-একা পড়াশুনো করতে পারে৷''

ছাত্র-ছাত্রীরা যত স্বনির্ভর হয়ে উঠবে, শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিভিন্ন জিনিস ব্যাখ্যা করার জন্য ঠিক তত বেশি সময় পাবেন৷ ল্যাপটপ ও হেডসেট পেয়ে শিশুরা প্রায়ই বড়দের চেয়েও দ্রুত কাজ করতে পারে৷ স্কুলের ব্ল্যাকবোর্ডেই আজকাল ভিডিও দেখা যায়৷ মডেল প্রকল্পটি ভালোভাবে চললে স্টেফান বায়ার ও তাঁর ডিজিটাল পাঠ্য আগামী বছর থেকে নিয়মিতভাবে ক্লাসে ব্যবহার করা হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য