আগুনে ইরানি নারীর মৃত্যু
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷ সংশ্লিষ্ট আদালত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি তুলেছেন অনেকে৷
‘ব্লু গার্ল' নামে পরিচিতি ২৯ বছর বয়সি সাহার খোদায়ারি গত মার্চ মাসে তাঁর প্রিয় ইরানি ফুটবল ক্লাব এস্তেগলালের খেলা দেখতে পুরুষের বেশ ধরে স্টেডিয়ামে প্রবেশের চেষ্টা করেন৷ নীল রঙের পরচুলা পরেছিলেন তিনি, গায়ে ছিল ওভারকোট, তারপরও স্টেডিয়ামে ঢোকার সময় ধরা পড়ে যান৷
গ্রেপ্তারের পর জামিনে মুক্ত হন সাহার খোদায়ারি৷ কিন্তু গত সপ্তাহে তাঁর ছয় মাসের সাজার রায় দেয় আদালত৷ এরপর আদালতের বাইরে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি৷
হাসপাতালে ব্যান্ডেজে মোড়ানো খোদায়ারির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে৷ ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির বিচার বিভাগ এই মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷
সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মাজিয়ার বাহারী ডয়চে ভেলেকে বলেন, তিনি ওই নারীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তাঁদেরকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলতে সতর্ক করা হয়েছে৷
গত শুক্রবার সাহার খোদায়ারি মারা যাওয়ার পর নিরাপত্তা বাহিনী তাঁকে দ্রুত সমাহিত করে৷ এ সময় তারা মেয়েটির পরিবারকে বলেছে, ‘‘আপনার মেয়ে ইতোমধ্যে আমাদের যথেষ্ট ভোগান্তিতে ফেলেছে, আমরা আপনাদের কাছ থেকে আর কিছু শুনতে চাই না৷''
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নারীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁর মৃত্যুর জন্য সংশ্লিষ্ট আদালত এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকে৷
ফুটবল ক্লাব এস্তেগলাল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘তাঁর খুব ছোট্ট একটি ইচ্ছা পূরণের জন্য তাঁকে কবরে যেতে বাধ্য করা হলো৷''
ইরানের জাতীয় দল এবং জার্মানির ক্লাব ব্রায়ার্ন মিউনিখের সাবেক খেলোয়াড় আলী কারিমি ইনস্ট্রাগ্রামে লিখেছেন, ‘‘স্টেডিয়ামে নারীদের নিষিদ্ধ করা ন্যাক্কারজনক৷''
ইরানকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করতে ফিফার প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন অনেকে৷
ইরানের নারীদের স্টেডিয়ামে প্রবেশ নিষেধ৷ ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে মত জানিয়ে বলেছেন, দেশটির ধর্মযাজকদের বিরোধিতার কারণে তিনি তা করতে পারছেন না৷
এসআই/এসিবি (এপি, এএফপি, ডিপিএ)