1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো রেকর্ড নেই’

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

পুরনো ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ আগুনের ঘটনার পর এখন তুমুল আলোচনায় সিএনজি চালিত গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার৷ তবে কর্তৃপক্ষ বলছে বাংলাদেশে গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কোনো রেকর্ড এখন পর্যন্ত নেই৷

https://p.dw.com/p/3E0Bf
ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman

আর চকবাজারের আগুনের কারণ গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কথা বলা হলেও তদন্তে তার কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিস্ফোরক অধিদপ্তর৷

বাংলাদেশে এখন প্রাইভেট কারসহ কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) চালিত যানবাহনের সংখ্যা পাঁচ লাখেরও বেশি৷ এই তথ্য সরকারের রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড-এর৷ প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (সিএনজি) প্রকৌশলী মহম্মদ আলী বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা সিএনজি কনভারশন সেন্টারগুলোর অনুমোদন দেই৷ এ পর্যন্ত ১৮০টির অনুমোদন দিলেও অপারেশন আছে ১০-১২টি৷ বাকিগুলো কাজ করেনা৷ আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে এপর্যন্ত পাঁচ লাখের মত গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর করা হয়েছে৷'' 

‘কোনো আলামতও পাওয়া যায়নি’

যানবাহন সিএনজিতে রূপান্তরের পর তা নিয়মিত রিটেষ্ট হয় কিনা দেখার দায়িত্ব বিস্ফোরক পরিদপ্তরের৷ তারা এই রিটেষ্ট ওয়ার্কশপেরও অনুমোদনও দেয়৷ পরিদপ্তরের প্রধান বিস্ফোরক পরিদর্শক সামসুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘পাঁচ বছর পর সিলিন্ডার রিটেষ্ট করতে হয়৷ কিন্তু এই রিটেষ্টের আগ্রহ শুরুতে ছিলনা৷ তবে এখন আগ্রহ বাড়ছে৷ ২০১৮ সালে রিটেস্টের ওয়ার্কশপ ছিল ৭-৮টি৷ তবে এবছর সংখ্যা ৩০টির মত৷'' 

তিনি বলেন, ‘‘গাড়িতে সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের যে খবর আমরা দেখি সেটা আসলে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ নয়৷ কয়েকটি কারণে বিস্ফোরণ হয়৷ দু'টি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে ফেটে যেতে পারে৷ অথবা সিলিন্ডার ছাড়া অন্য যে কিট আছে তার কারণে আগুন ধরে যেতে পারে৷''

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘শুরুতে চকবাজারে গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে আগুনের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত আমরা তার কোনো প্রমাণ পাইনি৷ কোনো আলামতও পাওয়া যায়নি৷'' 

‘একটি সিলিন্ডারও বিস্ফোরণ হয়নি’

প্রসঙ্গত, সিএনজি উচ্চচাপে সিলিন্ডারে ভরা হয়৷ উচ্চচাপে প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৩২শ' পাউন্ড চাপে গ্যাস ভরা হয়৷ তাই সিলিন্ডারের এই চাপ সামলাবার মত শক্তি থাকে৷ বাংলাদেশে সিলিন্ডারগুলো বিদেশ থেকে আনা হয় এবং এর জন্য অনুমতি লাগে৷ তবে এরসঙ্গে অন্যান্য কনভারসন কিট আমাদানিতে অনুমতি লাগেনা৷ স্থানীয়ভাবেও তৈরি হয়৷ আর প্রতি পাঁচ বছর পর রিটেষ্ট করার কথা থাকলেও তা করেন না গড়ি মালিকরা৷ এমনকি গাড়ির ফিটনেসসহ অন্যান্য কাগজপত্র নবায়নের সময় রিটেস্টের প্রমাণও দাখিল করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়না৷ জানা গেছে, মাত্র ৫৩ হাজার ৮০০ সিলিন্ডারের রিটেস্টিং করা হয়েছে৷ মোট সিলিন্ডারের যা মাত্র ১৩-১৪ ভাগ৷

রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরনের কোনো ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি৷ একটি সিলিন্ডারও বিস্ফোরণ হয়নি৷ একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ৷ যেটা হয় তাহল সিলিন্ডারের মাথায় একটা রেগুলেটর থাকে৷ ওটা নিম্নমানের হলে নানা সমস্যা হয়৷ এটা নিয়ে আমরা ও বিস্ফোরক অধিদপ্তর সেমিনারও করেছি৷'' 

‘আমরা সিএনজি কনভারশন সেন্টারগুলোর অনুমোদন দেই’

তিনি বলেন, ‘‘বিআরটিএ'র দায়িত্ব আছে৷ গাড়ির ফিটনেস দেয়ার সময় সিএনজির রিটেস্টের কাগজপত্রও দেখার নিয়ম৷ সেটা না দেখলে সমস্যাতো হতেই পারে৷''

এই বিষয়ে বিআরটিএ-র সঙ্গে কথা বলতে চাইলে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি৷ তবে একজন কর্মকর্তা জানান এটা বিআরটিএ-র রোড সেফটি বিভাগের দেখার কথা থাকলেও তারা দেখেনা৷

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায় ১৮ বছর আগে পরিবেশ রক্ষায় সবুজ জ্বালানি হিসেবে গাড়িতে সিএনজি ব্যবহার শুরু হয়৷ কিন্তু এটা ঠিকমত মনিটরিং না করায় আতঙ্কে পরিণত হয়েছে৷