গাজায় যুদ্ধবিরতি
১১ আগস্ট ২০১৪এর আগেও মিশরের মধ্যস্থতায় তিন দিনের যুদ্ধবিরতি হয়েছিল, কিন্তু শুক্রবার সকালে বিরতি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দুই পক্ষ লড়াই শুরু করে দেয়৷ গাজা থেকে চালানো জঙ্গি হামলা বন্ধ করার কথা বলে ৮ জুলাই থেকে ভূখণ্ডটিতে বিমান হামলার মাধ্যমে অভিযান শুরু করে ইসরায়েল৷ পরে শুরু হয় স্থল অভিযান৷ একমাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এ লড়াইয়ে অন্তত দুই হাজার মানুষ নিহত হন৷
আহত-নিহতের সংখ্যা
নিহতদের মধ্যে ১৯৩৫ জন ফিলিস্তিনি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ এঁদের মধ্যে অন্তত ১৪০৮ জন বেসামরিক, তাঁদের মধ্যে আবার ৪৪৯ জন শিশু, ২৪৩ জন নারী ও ৮৭ জন প্রবীণ রয়েছেন৷ অন্যদিকে ইসরায়েলি পক্ষে ৬৭ জন নিহত হয়েছেন, যাঁদের ৬৪ জন সেনা সদস্য, বাকি তিনজন বেসামরিক৷ এই বেসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে একজন থাই নাগরিক রয়েছেন৷ এছাড়া আহত অন্তত ১০,০০০৷ শুক্রবার যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং হামাসের মর্টার হামলায় দুই ইসরায়েলি আহত হয়েছেন৷
কায়রোতে আলোচনা
ইসরায়েল গাজা যুদ্ধ বন্ধে সোমবার মিশরের রাজধানী কায়রোতে আরো আলোচনার জন্য প্রতিনিধিরা যেতে শুরু করেছেন৷ ইসরায়েলি এক কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ‘‘এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনি গেরিলাদের সাথে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় বসবে তারা৷'' ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, রবিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের কিছুক্ষণ আগে তেল আভিভে একটি রকেট হামলা হয়৷ অন্যদিকে হামাসও স্বীকার করেছে রোববার রাতে তারা একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল৷
হামাসের এক কর্মকর্তাও জানিয়েছেন যে, তারা কায়রোর আমন্ত্রণ সমর্থন করেছে এবং আলোচনার জন্য সেখানে উপস্থিত থাকবে৷ তবে হামাসের প্রধান দাবি, গাজার উপর থেকে ইসরায়েলের অবরোধ তুলে নিতে হবে৷ এর ফলেই ফিলিস্তিনিদের জীবনে প্রকৃত শান্তি আসবে বলে জানিয়েছে তারা৷ ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রীও বলেছেন, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছে তারা৷
স্বাভাবিক জীবন
সোমবার সকাল থেকে নিজেদের বাড়ি-ঘরের অবস্থা দেখতে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে ছুটে গেছেন গাজার মানুষ৷ স্থানীয় এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘ঈশ্বরই জানেন এ যুদ্ধ কবে শেষ হবে৷ এটাকে ইদুঁর-বিড়াল লড়াই হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি, যা কখনো শেষ হবার নয়৷''
গাজা কিশোরীর জনপ্রিয়তা
গাজায় যখন অবিরাম ইসরায়েলি বোমা হামলা চলছে, তখন সেখানকার এক কিশোরী ফারাহ বাকের নিজের স্মার্টফোন ব্যবহার করে সেই বিধ্বংসী ছবি ও ভিডিও ধারণ করে টুইটারে পোস্ট করছেন৷ এর মাধ্যমেই ব্যাপক জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন তিনি৷
১৬ বছর বয়সি এই কিশোরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়৷ যেখানে তার ফলোয়ার বা বন্ধু সংখ্যা ছিল মাত্র ৮০০, সেখানে এখন তার অনুসরণকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার৷ সে বর্তমানে গাজা সিটির শিফা হাসপাতালে অবস্থান করছে৷ তার বাবা একজন মেডিকেল সার্জন৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ফারাহ বলেন, ‘‘আমি বিশ্বকে জানাতে চাই কি পরিস্থিতির মধ্যে আমরা আছি আর এখানে আসলেই কি ঘটছে৷'' তার অ্যাকাউন্ট @Farah_Gazan৷
এপিবি/ডিজি (এপি, এএফপি, ডিপিএ, রয়টার্স)