গাজার প্রথম নারী ট্যাক্সি চালক যিনি
বেকারত্বের কাছে হার না মেনে গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে তুলে নিয়েছেন গাজার নায়েলা আবু জিব্বা৷ তাঁর গল্প এই ছবিঘরে...
গাজার বাস্তব
চরমপন্থি ইসলামিস্টদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গাজায় বসবাসরত ৩৯ বছর বয়েসি নায়েলা আবু জিব্বার জীবন বেশ অনেকটাই কটিন৷ পাঁচ সন্তানের মা নায়েলা সমাজসেবা বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করেও কোনো কাজ পাচ্ছিলেন না৷ গাজায় বর্তমানে বেকারত্বের হার ৪৯ শতাংশ, যা ইসরায়েল ও মিশরে গিয়ে কাজ করার কড়াকড়ি বাড়ানোর ফলে আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে৷
যেখান থেকে শুরু
সংসার চালানোর জন্য ঘরে বসে না থেকে নায়েলা একটি সাদা রঙের ‘কিয়া’ গাড়ি কেনেন, চালু করেন ‘আল-মুখতারা’ নামের ট্যাক্সি পরিষেবা৷ বর্তমানে আল-মুখতারা ট্যাক্সি পরিষেবায় একটি মাত্র ট্যাক্সি থাকলেও নায়েলা স্বপ্ন দেখেন এই ব্যবসাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার৷ রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বপ্ন হচ্ছে একদিন আল-মুখতারা ফ্লিট বা গাড়ির বহর তৈরি করার৷’’
গ্রাহকদের মতামত
ট্যাক্সি চালিয়ে নায়েলা শুধু উপার্জন করেন না৷ গাজার নারীদের কাছে নারীচালিত ট্যাক্সি থাকাটাও একটা স্বস্তি৷ নায়েলা বলেন, ‘‘কোনো বিউটি পার্লার থেকে সেজেগুজে বের হবার সময় বা কোনো অনুষ্ঠানে যাবার সময় একজন নারীর সাথেই চলাফেরা করতে আমার গ্রাহকরা বেশি স্বচ্ছন্দ্য৷’’ এখন পর্যন্ত, নায়েলার সব খদ্দেরই নারী৷ অনেকেই তাদের পছন্দের দিনে নায়েলাকে সাথে পেতে বেশ আগেই ট্যাক্সি বুক করেন৷
করোনাকালে নায়েলার জীবন
করোনা সংক্রমণের প্রকোপ ছাড় দেয়নি ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চলকেও৷ সেখানে এখন পর্যন্ত বারো হাজারেরও বেশি সংক্রমণ পাওয়া গেছে৷ মারা গেছেন ৫৬জন৷ এসব মিলিয়ে স্থানীয় মানুষ আগের মতো তাদের দৈনন্দিন ঘোরাফেরা বা কাজকর্ম করতে পারছেন না৷ এর প্রভাব এসে পড়েছে নায়েলার ব্যবসাতেও৷ কিন্তু তাতে দমে যাননি তিনি৷ সীমিত পরিসরেই নিয়ম মেনে, মাস্ক পরে ট্যাক্সি পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন সবার কাছে৷
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নায়েলা
করোনা ছাড়াও নায়েলার এই কাজ সোশাল মিডিয়ায় সমালোচনার শিকার হয়৷ এবিষয়ে নায়েলা জানান, ‘‘আমি নানা ধরনের তীর্যক মন্তব্য শুনি৷ কেউ কেউ বলেন যে এই কাজ আসলে পুরুষের করার কথা৷ নারীরা নাকি দুর্ঘটনা ঘটান৷ কিন্তু আসলে নারীরা অনেক বেশি ধৈর্য্যশীল৷ আমরা অনেক বেশি সাবধান হয়েই গাড়ি চালাই৷ আর সোশাল মিডিয়াতে খারাপের চেয়ে ভালো মন্তব্যই চোখে পড়ে আমার৷’’