গাজা ইস্যুতে ইসরায়েলের নিন্দায় জাতিসংঘ
১৪ জুন ২০১৮যুক্তরাষ্ট্র হামাসের ওপর দায় চাপাতে চাইলেও জাতিসংঘের ভোটে তা বাতিল হয়েছে৷ আলজেরিয়া, তুরস্ক এবং ফিলিস্তিনের উত্থাপন করা এই প্রস্তাবে ১৯৩ সদস্যের মধ্যে সাড়া দিয়েছে ১২০টি দেশ৷ বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৮টি দেশ, ভোট দেয়ায় বিরত ছিল ৪৫ সদস্য৷
এ মাসের শুরুতেই ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে একই ধরনের একটি প্রস্তাবে ভেটো দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সাধারণ পরিষদের এই নিন্দা প্রস্তাবকে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটোর জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে৷
বিপক্ষে ভোটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাথে যোগ দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া মার্শাল আইল্যান্ডস, মাইক্রোনেশিয়া, নাউড়ু, টোগো এবং সলোমন আইল্যান্ডস৷ ভোটদানে বিরত থাকে জার্মানি৷
মৃত্যুর মিছিল
মার্চের শেষে শুরু হওয়া বিক্ষোভে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ১২০ ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি৷ ইসরায়েল অবশ্য বিক্ষোভ আর সহিংসতার জন্য হামাসকেই দায়ী করে আসছে৷ তবে এই বিক্ষোভে হামলায় কোনো ইসরায়েলের নাগরিক নিহত হননি৷
সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ইসরায়েল-দখলীকৃত ফিলিস্তিনে নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বানও জানানো হয়েছে৷
গত মাসে ইস্তানবুলে ইসলামী দেশগুলোর সংগঠন ওআইসির বৈঠকে একটি আন্তর্জাতিক সুরক্ষা বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়৷ তবে এমন বাহিনী গঠনে প্রয়োজন নিরাপত্তা পরিষদের, যেখানে এরই মধ্যে ভেটো দিয়ে রেখেছে ইসরায়েলের মিত্রদেশ যুক্তরাষ্ট্র৷
প্রতিক্রিয়া
সাধারণ পরিষদে ভোটের ঠিক আগে এক বক্তব্যে জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি ড্যানি ডেন বলেন, এই প্রস্তাবে সমর্থনের মানে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ‘উৎসাহিত' করা এবং হামাসকে আরো ‘শক্তিশালী' করে তোলা৷
যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব সংশোধনের দাবি তোলে৷ সহিংসতা উসকে দেয়ায় হামাসকে দায়ী করে দেশটি৷ যুক্তরাষ্ট্রের দূত নিকি হ্যালি প্রস্তাবটিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পক্ষপাত বলেও মন্তব্য করেন৷
তিনি বলেন, ‘‘কারো কারো জন্য ইসরায়লকে আক্রমণ করা একটি রাজনৈতিক খেলায় পরিণত হয়েছে৷ আমি আশা করি, এই এক-পাক্ষিক প্রস্তাবের পক্ষে যাঁরা এগিয়ে আসছেন, তাঁরা প্রেসিডেন্ট আব্বাসকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতেও ভূমিকা রাখবেন৷''
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তা অবশ্য অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, মে মাসে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে তারা আর ফিলিস্তিন ইস্যুতে নিরপেক্ষ আলোচনাকারী হিসেবে বিবেচনা করেন না৷
সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব মানতে বাধ্য নয় কোনো পক্ষই৷ তবে কোনো ধরনের বাধ্যবাধকতা না থাকলেও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে৷
এডিকে/এসিবি (এএফপি, এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)