গাজা অবরোধ শিথিল করার ঘোষণা দিল ইসরায়েল
১৭ জুন ২০১০ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা গত বুধবার বৈঠকে বসেছিলেন গাজা অবরোধ তুলে নেয়া প্রসঙ্গে আলোচনা করতে৷ ধারণা করা হয়েছিল, এই বৈঠকেই একটি সিদ্ধান্ত আসবে – এবং সেই সিদ্ধান্তটিই নিলেন তাঁরা, তবে একটু কাটছাঁট করে৷ বলা হলো, কেবল স্থল পথে গাজায় পাঠানো হবে পণ্য, তাও আবার সাধারণের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় যা রয়েছে, কেবল সেগুলোই৷ বেশ কিছু কাল ধরে চলে আসা এই অবরোধ শিথিলের সিদ্ধান্তের কথাটি কিন্তু এমনিতে আসেনি, এসেছে আন্তর্জাতিক চাপের কাছে অনেকটা নতি স্বীকার করেই৷
প্রায় ১৬ লাখ মানুষের বসবাস গাজায়৷ আর এদের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ মানুষই জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার ত্রাণ সহায়তার উপর নির্ভরশীল৷ কারণ, হামাস গোষ্ঠী৷ গাজার নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস সদস্যরা৷ এই গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের বিবাদ দীর্ঘ দিন ধরেই৷ গাজা থেকে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলি ক্রমাগত ইসরায়েলের দিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে চলেছে৷ তার উপর হামাস এখনো ইসরায়েলের অস্তিত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত নয়৷ এই গোষ্ঠীর উপর থাকা জনসমর্থন যেন লোপ পায়, সে কারণেই তিন বছর আগে ইসরায়েল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই অবরোধ আরোপ করেছিল৷ কিন্তু এই অবরোধ হামাসের জনপ্রিয়তাকে মোটেই খাটো করতে পারেনি৷
আরোপিত এই অবরোধের আওতাধীনে রয়েছে প্রায় সকল বাণিজ্যিক পণ্য৷ মানবিক প্রয়োজনে যে সকল পণ্য প্রবেশ করতে দেওয়া প্রয়োজন, কেবল সেগুলোই অবরোধের আওতামুক্ত৷ কিন্তু সব কিছুই আসতে হচ্ছে, ইসরায়েলের ‘নো অবজেকশান সার্টিফিকেট' পাবার পর৷ তারপরেও কথা আছে, এরই মধ্যে অনেকবারই এই অবরোধের দোহাই দিয়ে গাজার জন্য ত্রাণবাহী পরিবহন কিন্তু ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল৷ অস্ত্রশস্ত্র পাচার করা হচ্ছে, এই সন্দেহে বারবার বাধা দিয়েছে৷ সম্প্রতি সমুদ্রপথে ত্রাণবাহী জাহাজের উপর হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী৷ মারা যায় ৯ জন৷
হামাসের মুখপাত্র সামি আবু জুহরি বলেছেন, ইসরায়েলি এই সিদ্ধান্তে খুশি হবার মতো কিছু ঘটেনি৷ মূলত এই ধরণের প্রচারণা চালিয়ে ইসরায়েল সম্প্রতি তাদের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টাই করছে৷ আসলে তারা আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর চোখ অন্যত্র ঘুরিয়ে দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাছাড়া ইসরায়েলের শিথিল তালিকায় এমন অনেক পণ্যই নেই, যেগুলি এখনই আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন৷ এ ক্ষেত্রে তিনি ঘরবাড়ি নির্মাণের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর কথা উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, আমাদের প্রয়োজনীয় সকল পণ্য আনতে দিতে হবে৷
প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন