খুনের চেষ্টা থেকে ডাকাতি, মোট ৩৪টি ধারায় মামলা শাহজাহানের বিরুদ্ধে
সন্দেশখালি-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি ধারায় মামলা করেছে পুলিশ।
ডাকাতি থেকে খুনের চেষ্টা
শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে ডাকাতি থেকে খুনের চেষ্টা সংক্রান্ত নানা অভিযোগে ৩৪টি মামলা করেছে পুলিশ। ন্যাজাট থানায় এই অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলি ধারায় জামিন পাওয়া যায় না।
ইডি কর্মকর্তাদের মার
সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র কর্মকর্তারা। শাহজাহান সপরিবারে বাড়ি থেকে পালায়। আর তার অনুগামীরা ইডি কর্মকর্তাদের মারধর করে, গাড়ি ভাঙচুর করে, তাদের তাড়া করে গ্রামের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। এরপর পুলিশ দুইটি মামলা করে। তাতেই ৩৪টি ধারা যোগ করা হয়েছে।
ধারায় কী বলা হয়েছে?
ভারতীয় দণ্ডবিধির যে ধারায় পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছে, তাতে খুনের চেষ্টা, ডাকাতি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা, ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা, জোর করে আটকে রাখা, অপরাধে প্ররোচনা দেয়া, সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে বাধা দেয়া ও ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করার মতো বিষয়গুলি রয়েছে।
সন্দেশখালির মানুষের অভিযোগ
শাহজাহানের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সন্দেশখালির মানুষ। তার নেতৃত্বে আছেন নারীরা। তাদের অভিযোগ, শাহজাহান ও তার সঙ্গীরা নারীদের রাতে ডেকে পাঠাত। বসিয়ে রাখত। নারীদের লাঞ্ছনা করার কথাও বলেছেন তারা। তাছাড়া জোর করে জমি দখল করে নেয়া, চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে মাছ চাষ করা, মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের মতো প্রচুর অভিযোগ করেছেন তারা।
৫৫ দিন পর গ্রেপ্তার
৫৫ দিন ধরে পলাতক ছিলেন শাহজাহান। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অবশেষে বৃহস্পতিবার পুলিশ জানায়, তারা শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দাবি, আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে এতদিন তারা শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। শাহজাহানের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড
শাহজাহান গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে ছয় বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র ডেরেক ও ব্রায়েন দাবি করেছেন,, '''দুই ধরনের দল আছে। এক ধরনের রাজনৈতিক দল শুধু নানা কথা বলে যায়। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস যা বলে তা করে দেখায়। এটা প্রথমবার নয়। অতীতেও আমরা যা বলেছি তা করেছি।'' তৃণমূল আপাতত শাহজাহানকে দল থেকে সাসপেন্ড করে সন্দেশখালি-কাণ্ডের দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
কী বলছেন সন্দেশখালির মানুষ
শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করার পর আনন্দে মাতেন সন্দেশখালির মানুষ। তবে তাদের মধ্যে আশঙ্কাও আছে। একাধিক মানুষের আশঙ্কা, শাহজাহান ফিরে এলে আরো বেশি অত্যাচার করতে পারে। একজন বলেছেন, ''টিভিতে দেখলাম শাহজাহান বীরদর্পে হাঁটছে, তাতে মনে হয় না, ওর কোনো অনুশোচনা আছে।'' অনেকেই বলেছেন, তাদের ভয় যায়নি।