রাজীব হত্যা মামলা: সুবিচার হয়নি
৩১ ডিসেম্বর ২০১৫বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহম্মেদ তাঁর রায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপ ও রেদোয়ানুল আজাদ রানার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন৷ রানা অবশ্য এখনও পলাতক৷
মাকসুদুল হাসান অনিককে যাবজ্জীবন এবং এহসানুর রেজা রুম্মান, মো. নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজের ১০ বছর করে কারাদণ্ড হয়েছে৷ এছাড়া সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং হত্যা পরিকল্পনাকারী নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়৷
বিচারক সাঈদ আহম্মেদ তাঁর রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘‘খুতবায় কী বক্তব্য দেওয়া যাবে তার একটা সীমা থাকা উচিত৷ কেউ কিছু লিখলেই তাঁকে মেরে ফেলতে হবে?'' তিনি আরো বলেন, ‘‘শুনেছি ব্লগাররাও এমন কিছু লেখেন, যা পড়লে নাকি মারতে ইচ্ছে করে৷ আসলে আমরা সবাই ধৈর্যহারা হয়ে গেছি৷ সকলকেই ধৈর্য ধরতে হবে৷ আইন হাতে তুলে নেওয়া যাবে না৷ আবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও ক্রসফায়ারের নামে আইন হাতে তুলে নিচ্ছেন, সেটাও বন্ধ করতে হবে৷''
বিচারক মামলার তদন্তে ত্রুটির কথা তুলে ধরে আদালতে বলেন, ‘‘মামলার শুনানির সময় এমন প্রশ্নও এসেছে, তানজিলা নামের যে মেয়েটিকে পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন, তিনিই রাজীবকে হত্যা করেছেন কিনা৷ এক্ষেত্রে তাঁর একটা জবানবন্দি নেওয়া প্রয়োজন ছিল তদন্ত কর্মকর্তার৷''
সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত ও নৃশংস ছিল৷ তবে রাষ্ট্রপক্ষ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করতে পারেনি৷''
এদিকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রাজীব হত্যার অন্তত তিনজন আত্মস্বীকৃত খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি হয়নি৷ তদন্তে চরম গাফিলতির কথা বলেছে আদালত৷ অথচ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে মাত্র পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ তাই আমরা এই রায় প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনের কর্মসূচি দিয়েছি৷''
এরপরও অবশ্য ইমরান এইচ সরকার মনে করেন, ‘‘আরো যে ব্লগার হত্যা হয়েছে, তার বিচারে এই রায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে৷''
প্রিয় পাঠক, আপনিও কি ইমরান এইচ সরকারের মতো রাজীব হত্যা মামলার রায় প্রত্যাখ্যান করেন? নীচের গরে জানান আপনার মতামত৷