1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশি লগ্নি নিয়ে বিতর্ক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১৬ জানুয়ারি ২০১৪

খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি রদ করার সিদ্ধান্ত নেয়ায়, দিল্লির আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিতর্কের মুখে৷ অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করছেন, এটা ভুল সিদ্ধান্ত৷

https://p.dw.com/p/1Aqy0
Arvind Kejriwal Indien Ministerpräsident Vereidigung
ছবি: RAVEENDRAN/AFP/Getty Images

এতে বেকারত্ব বাড়বে, খাদ্য সামগ্রীর দাম বাড়বে আর ক্ষুণ্ণ হবে গ্রাহকদের স্বার্থ৷

ভারতের রাজধানি নতুন দিল্লিতে বিদেশি খুচরো ব্যবসা চালানোর অনুমতি না দেবার যে সিদ্ধান্ত নব নির্বাচিত আম আদমি সরকার নিয়েছে, তা অবিবেচকের মতো কাজ৷ এর ফলে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে না, গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা হবে না, এমনকি আন্তর্জাতিক বিপণি ‘চেন' খোলার নীতি নিয়ে দেখা দেবে অনিশ্চয়তা৷ এর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের কাছে যাবে ভুল বার্তাও৷

এ সিদ্ধান্ত এমন একটা সময়ে নেয়া হলো, যখন ভারতের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনে ব্রিটেনের টেস্কোর মতো মাল্টি-ব্র্যান্ড সংস্থাকে সামনে রেখে বিশ্বের আরো অনেক সংস্থা খুচরো ব্যবসায় ভারতে বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছিল৷ এ সময় এই লাল সংকেতের অর্থ এই যে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের লড়াই দুর্বল হয়ে পড়বে – এমনটাই মনে করছেন দেশের অনেক অর্থনীতিবিদ৷

ভারতে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সুফল কী হতে পারে? আর্থ-সামাজিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদেশি মাল্টি-ব্র্যান্ড সংস্থাগুলি গুদামঘর, হিমঘর ও সাপ্লাই চেন যেভাবে বানাবে, তাতে শাক-সবজি, ফল-ফলাদির মতো পচনশীল সামগ্রীর প্রায় ৪০ শতাংশ অপচয় রোধ করা যাবে৷ এতে সরবরাহ যেমন বাড়বে, তেমনি এর ফলে খাদ্যদ্রব্যের দামও কমার কথা৷ এছাড়া, বিভিন্ন কর ও শুল্কবাবদ সরকারের অতিরিক্ত রাজস্ব বাড়বে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার৷

এরকমটা হলে কৃষিজীবীরা ১০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি দাম পেতেন তাঁদের কৃষিপণ্য বিক্রি করে৷ সব থেকে বড় কথা, এতে কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি হতো৷ অথচ এর ফলে কাজের সুযোগ কমে যাবে – এই জিগির কিছু রাজনৈতিক নেতাদের তৈরি৷ বিগ বাজারের মতো দেশজ মাল্টি-ব্র্যান্ড রিটেলের জন্য কি কাজের সুযোগ কমে গেছে? না, যায়নি৷

সমীক্ষায় দেখা গেছে, অসংগঠিত খুচরো বাজারের চেয়ে সংগঠিত খুচরো বাজারে কর্মসংস্থান হয় বেশি৷ পাড়ার দোকানদারদের মতো অসংগঠিত ক্ষেত্র চেষ্টা করে কম কর্মচারি রাখতে এবং কম মজুরি দিতে৷ ভারতীয় শিল্প মহাসংঘের মতে, মাল্টি-ব্র্যান্ড রিটেলে সরাসরি ৩০ থেকে ৪০ লাখ চাকরি এবং পরোক্ষভাবে ৪০ থেকে ৬০ লাখের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতো৷ পরোক্ষ বলতে যাঁরা বণ্টন এবং রিপ্যাকেজিং-এর ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক৷

যাঁরা মনে করেন বিদেশি মাল্টি-ব্র্যান্ড রিটেল ব্যবসা দেশে এলে বেকারি বাড়বে, সেই ধারণা ভ্রান্ত বলে মনে করেন টেকনোপ্যাক কনসাল্টেনসি সংস্থার চেয়ারম্যান৷ খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সুফল যে কতটা তার জলন্ত উদাহরণ চীন৷ ২০০৫ সাল থেকে মাল্টি-ব্র্যান্ডের দরজা খুলে দিয়েছে. চীন৷ তবে শুধু নীতি প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, নজর রাখতে হবে গ্রাহক ও কৃষি উৎপাদকদের স্বার্থ যেন দীর্ঘমেয়াদে সুরক্ষিত থাকে৷

খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির ব্যাপারে আগেকার কংগ্রেস সরকারের সিদ্ধান্ত উল্টে দিয়ে আম আদমি সরকার যদি মনে করে থাকে যে এটা জনগণের রায়, তাহলে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল আম জনতার রায় বুঝতে ভুল করেছেন৷ আম জনতা চেয়েছে দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, প্রতিযোগিতা-বিরোধী সংরক্ষণবাদ নয়৷ এই ধরণের রাজনৈতিক জনপ্রিয়তার দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে আম আদমি পার্টি যদি জাতীয় দল হয়ে উঠতে চায়, তাহলে এই রকম অনেক সিদ্ধান্তকে একতরফাভাবে পাল্টাতে হবে৷ তাতে আখেরে ক্ষতি বৈ লাভ হবে না!

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য